ফেসবুকে প্রেমঃ সিরিজ ধর্ষণ অতঃপর বিয়ের দাবিতে অনশন

ফেসবুকে প্রেম হয় তাদের। এরপর সাক্ষাতের প্রথম দিনই ধর্ষনের শিকার হয় তরুনী। গোপন ভিডিও ধারন করে টানা দুইবছর অবৈধ সম্পর্ক করে ভন্ড প্রেমিক। বিয়ের দাবীতে অবশেষে কথিত প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছে তরুনী।

ফেসবুকে প্রেমঃ সিরিজ ধর্ষণ অতঃপর  বিয়ের দাবিতে অনশন

পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে অন্তত ২৫ বার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ তরুণীর। একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করতে বাধ্য করেন বিপুল। এর পর তিনি বিপুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু বিপুল বিষয়টি এড়িয়ে যেতে শুরু করেন

মোহাম্মদ আলী হাসান,পাবনা জেলা প্রতিনিধিঃ

ফেসবুকে পরিচয় এবং প্রেম। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মেয়ে এবং পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়ার ছেলে। প্রেমিকার সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও দেখিয়ে টানা দুই বছর সিরিজ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার  গজারমারা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে বুলবুল আহমেদ বিপুল (৩০) এর বিরুদ্ধে। 

Love on Facebook: series rape and then hunger strike to demand marriage

ভুক্তভোগী মেয়েটির বাড়ি পার্শ্ববর্তী জেলা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। বিয়ের দাবিতে ওই তরুণী গত ২৮ ডিসেম্বর,২০২১ইং থেকে বিপুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে শুক্রবার সকালে বিপুলের বাড়ির লোকজন মারধর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়।

স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা খবর পেয়ে সরেজমিন গিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে কথা বলে। এসময় ঐ তরুনী জানায়, প্রায় চার বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে বিপুলের সঙ্গে তার পরিচয়। এর পর তাদের মধ্যে প্রেম হয়। এর কিছু দিন পর বিপুল তাকে দেখা করার জন্য চাপ দিলে মেয়েটি তার সঙ্গে দেখা করে। ঐ সময় বিপুল তার বোনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং কৌশলে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। 

পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে অন্তত ২৫ বার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ তরুণীর। একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করতে বাধ্য করেন বিপুল। এর পর তিনি বিপুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু বিপুল বিষয়টি এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। পরে  ডিসেম্বর ২৮,২০২১ইং বিয়ের দাবিতে বিপুলের গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত হয় ভুক্তভোগী। 

বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আফসার আলী জানতে পেরে মেয়েটির নিরাপত্তায় একজন গ্রামপুলিশ নিয়োজিত করেন। গ্রামপুলিশের পাহারায় গত দুদিন সেখানে থাকলেও শুক্রবার সকালে ওই তরুণীকে বিপুলের পরিবারের লোকজন মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিপুলের বাবা ইসমাইল হোসেন জানান, উচ্চমহলের নির্দেশেই তিনি ওই মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। ঘটনা শুনে চেয়ারম্যান আফসার আলী সেখানে যান এবং বিপুলের বাবাকে তার ছেলেকে হাজির করতে চাপ দেন। উচ্চমহল কারা এ ব্যাপারে অবশ্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এলাকার  চেয়ারম্যান আফসার আলী ক্রাইম ডায়রিকে বলেন, শুধু প্রেমের সম্পর্কের কারণে সম্মান বিসর্জন দিয়ে সাধারণত কোনো মেয়ে অন্যের বাড়িতে চলে আসতে পারে না। মেয়ের অভিযোগ— তাকে ভিডিও দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে, আমিও সেটি বিশ্বাস করি। বিপুলকে হাজির করতে বলা হয়েছে। মেয়ের পরিবারকে সংবাদ পাঠানো হয়েছে। তারা এলে বিয়ে দেওয়া এলাকার মানুষের দায়িত্ব।  এমন অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে যে কোন মুহূর্তে যে কেউ ভিকটিম হতে পারে বলে তিনি বলেন। 

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান গণমাধ্যম কর্মীদের  বলেন, বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অবগত হয়েছি।  বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান ও ভিকটিমকে সহায়তা করতে বিট কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। 

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম