অভিযুক্ত এম এ কাসেম ও রেহানা রহমানের বিরুদ্ধে বিএনপি জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ও জঙ্গি অর্থায়ন করার অভিযোগ।
মুন্সী মোঃ আল ইমরানঃ
নানা অভিযোগে অভিযুক্ত নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য রেহেনা রহমান ও বেনজীর আহমেদকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ২৯ ডিসেম্বর দুদক উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাদের তলব করা হয়েছে। আগামীকাল ৪ জানুয়ারি,২০২২ইং মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে তাদের হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক কর্তৃক প্রদত্ত নোটিশে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এফডিআর করার নামে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট, স্ত্রী, স্বজনদের চাকরি দেয়ার নামে অনৈতিক ভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়ি ক্রয় ও অবৈধভাবে বিলাসবহুল গাড়ির ব্যবহার এবং বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের আড়ালে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বসুন্ধরা, ঢাকার বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর সদস্য রেহেনা রহমান ও বেনজীর আহমেদকে তলবের নোটিশ জারি করেছে দুদক।
সেখানে বলা হয়েছে , অনুসন্ধান কার্যক্রম সুষ্ঠু হবার স্বার্থে উল্লেখ্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন বিধায় উল্লিখিত অভিযোগ বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে অনুসন্ধান টিমের নিকট বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে বর্ণিত অভিযোগ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে।
অভিযুক্ত এম এ কাসেম ও রেহানা রহমানের বিরুদ্ধে বিএনপি জামায়াতসংশ্লিষ্টতা ও জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ ।
জানা গেছে, সাকা চৌধুরীর আপন খালাতো বোন এই রেহানা রহমান। এর আগে একই অভিযোগে তলব করা হয় আরো দুই ট্রাস্টি এম এ কাসেম ও মোহাম্মদ শাহজাহানকে। তাদের হাজির হবার কথা ছিল ২ জানুয়ারি,২০২২ই তারিখে। তারা ঐদিন সকালে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়েছেন।
মোহাম্মদ শাজাহান অসুস্থতার কারন দর্শান, অন্যদিকে এম এ কাসেম বার্ধক্যজনিত কারণে বিশ্রামে আছেন বলে আইনজীবী মারফত জানিয়েছেন।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন গত বুধবার তিনি সাউথ ইস্ট ব্যাংকের বোর্ড মিটিং এ সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। অংশ নিয়েছেন নর্থ সাউথের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাতেও। তিনি ইচ্ছে করে দুদকের ডাকে সারা দেননি।
এতে তিনি আইন লংঘন করে ধৃষ্টতা ও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। আর এমন দাবিই করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগকারী সংগঠন আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস।
গণমাধ্যমকর্মীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কাসেম ও শাজাহান বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মিটিং, বিশ্ববিদ্যালয় মিটিংসহ সব ধরনের স্বাভাবিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু দুদকে উপস্থিতির ক্ষেত্রে অসুস্থতার দোহাই দিলেন। আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা আসলে সময় ক্ষেপণ করছেন।
আমরা জানতে পেরেছি একই প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত ট্রাস্টিরাও দুদকে উপস্থিত না হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। অন্যরা যাতে একই রকম অজুহাতে পার পেয়ে না যায় সে ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
গোপন সুত্রে জানা গেছে,অভিযুক্তরা সবাই দুদককের আহবানকে এড়িয়ে যেতে স্ব স্ব উকিলের পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন ফাঁক ফোকড় খুঁজে বের করার ধান্দা করছেন। একই অভিযোগে আরো দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দিন এবং আজিজ কায়সারকে আগামী ৯ জানুয়ারি,২০২২ইং তারিখে দুদকে তলব করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বনামধন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থা অভিযুক্তদের আপাততঃ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে জানা গেছে।