বগুড়ায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা: ঘাতক গ্রেফতার

জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওই ঘটনার পর থেকে বগুড়া সদর থানা পুলিশের চৌকস একটি দল নিবিড়ভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে এবং ময়না তদন্তকারী ডাক্তার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায় এবং মৃত মাহমুদা আক্তার মারুফার স্বামী মো. সাজ্জাতুল আরিফিনের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে।

বগুড়ায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা: ঘাতক গ্রেফতার
ছবি-ক্রাইম ডায়রি

হত্যার ঘটনাকে আড়াল করতে অভিযুক্ত আরিফিন সহযোগীদের সহযোগিতায় তার ঘরের বাঁশের তিরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মৃত স্ত্রীর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়।

বগুড়া প্রতিনিধিঃ 

বগুড়া জেলার সদর উপজেলার ধাওয়াকোলা এলাকায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যা করার পর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েও শেষ রক্ষা পায় নি স্বামী সাজ্জাতুল আরিফিন। রবিবার (২৩ জুলাই) ভোর রাতে সদরের গোকুল বন্দর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যার শিকার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মারুফাকে সে প্রেম করে বিয়ে করেছিল।

জানা গেছে, গত ২০ জুলাই বিকেলে অপরিচিত মোবাইল থেকে বগুড়া সদর থানায় ফোন আসে যে, বগুড়া সদর ধাওয়াকোলা দক্ষিণপাড়ায় একজন নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ সংবাদের ভিত্তিতে জরুরি ডিউটিরত এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ ফজলুল হক ফোর্সসহ ঘটনাস্থল ধাওয়াকোলা দক্ষিণ পাড়ায় উপস্থিত হন। এ সময় গলায় ফাঁস দেওয়া ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে শজিমেক মর্গে প্রেরণ করেন।

এ ঘটনায় মৃতের বাবা মো. আব্দুল মান্নান প্রাথমিকভাবে মেয়ের মৃত্যুর বিষয়ে কাউকে সন্দেহ করছেন না বলে পুলিশকে জানান এবং বিষয়টি আত্মহত্যা হওয়ায় তিনি বাদী হয়ে ওই রাতেই বগুড়া সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।

এদিকে জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওই ঘটনার পর থেকে বগুড়া সদর থানা পুলিশের চৌকস একটি দল নিবিড়ভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে এবং ময়না তদন্তকারী ডাক্তার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায় এবং মৃত মাহমুদা আক্তার মারুফার স্বামী মো. সাজ্জাতুল আরিফিনের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে। এরই মধ্যে পুলিশের হাতে কিছু চাঞ্চলকর তথ্য আসে।

এদিকে মৃতের বাবা আব্দুল মান্নানেরও এ বিষয়ে সন্দেহ শুরু হয়। তিনি নিশ্চিত হন যে, তার মেয়ে আত্মহত্যা করে নি বরং এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরে মৃতের বাবা আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে অভিযুক্ত মো. সাজ্জাতুল আরিফিন ও তার চাচা মো. সরাফ উদ্দিনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুলাই দুপুরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামি মো. সাজ্জাতুল আরিফিন তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মারুফাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। অতঃপর হত্যার ঘটনাকে আড়াল করতে অভিযুক্ত আরিফিন সহযোগীদের সহযোগিতায় তার ঘরের বাঁশের তিরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মৃত স্ত্রীর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়।

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৩ জুলাই রাত দেড়টার সময় বগুড়া সদর থানার গোকুল বন্দর থেকে আসামি সাজ্জাতুল আরিফিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি সাজ্জাতুল আরিফিন অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বগুড়ায় হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। পুলিশ জানায়  পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে। অচীরেই সকল আসামীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

ক্রাইম ডায়রি/ ক্রাইম