অনলাইনে অসংখ্য তরুণীকে ব্ল্যাক মেইলঃ মূলহোতা গ্রেফতার
অনলাইনে মানুষের পদচারনা এখন অনেক বেশী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিংবা অন্যান্য মাধ্যম যেমন ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম,হোয়াটসএ্যাপসহ,টুইটার কিংবা ইমোতে বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। মানুষ এসব বিজ্ঞাপন দেখে প্রতারিত হবার পরেও থেমে নেই। সম্প্রতি, চাকরী দেবার নাম করে প্রতারনাও চলছে দেদারছে। গুগল ও উইকিপিডিয়াতে পার্টটাইম টাইপিস্টের চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদ তৈরিকারী অষ্টম শ্রেণি পাস এক তরুণকে গ্রেফতার করে র্যাব । এরপরই টনক নড়ে গণমানুষের।
প্রকৌশলী আয়াতুস সাইফ মুনঃ
অনলাইনে মানুষের পদচারনা এখন অনেক বেশী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিংবা অন্যান্য মাধ্যম যেমন ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম,হোয়াটসএ্যাপসহ,টুইটার কিংবা ইমোতে বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। মানুষ এসব বিজ্ঞাপন দেখে প্রতারিত হবার পরেও থেমে নেই। সম্প্রতি, চাকরী দেবার নাম করে প্রতারনাও চলছে দেদারছে। গুগল ও উইকিপিডিয়াতে পার্টটাইম টাইপিস্টের চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদ তৈরিকারী অষ্টম শ্রেণি পাস এক তরুণকে গ্রেফতার করে র্যাব । এরপরই টনক নড়ে গণমানুষের। জানা গেছে, সুবিশাল এই প্রতিষ্টানগুলোতে সহজে চাকরি পেতে দিতে হতো মেডিকেল চেকআপ। আর এভাবেই শতাধিক নারীকে ভার্চুয়াল মেডিক্যাল চেকআপের নামে গোপন ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেলিংয়ের মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। অভিনব এমন প্রতারণার অভিযোগে রাজধানী বাড্ডার নর্দা থেকে ফাহাদ (১৯) নামের এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
ফেব্রুয়ারী ১৬,২০২২ইং বুধবার রাতে রাজধানীর গুলশানের নৰ্দ্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার হেফাজতে থাকা দামি ক্যামেরা, দুটি ক্যামেরার লেন্স, একটি মোবাইল ফোন, ছয়টি সিমকার্ড, একটি এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ও ৪০৩ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।ফেব্রুয়ারী ১৭,২০২২ইং বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার মঈন বলেন, করোনা মহামারীর শুরু থেকেই অপরাধীরা ভার্চুয়াল জগতের অপব্যবহার করে বিভিন্নভাবে মানুষকে প্রতারিত করছে। প্রতারকেরা বিভিন্নভাবে নারীদের হেনস্তা, প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের মাধ্যমে ফাঁদে ফেলছে। ভুক্তভোগী অনেকে ‘রিপোর্ট টু র্যাব’ ও র্যাবের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানায়। এ ছাড়া অনেকে র্যাবের কাছে সরাসরি অভিযোগ দেন। এসব তথ্য পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের ধরতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতরাতে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নৰ্দ্দা এলাকায় অভিযান চালায়। পরবর্তীতে ‘ভার্চুয়াল মেডিক্যাল স্ক্যানিং’-এর নামে গোপন ভিডিও চিত্র ধারণ করে ব্ল্যাকমেলিংয়ের অপরাধে আল ফাহাদকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফাহাদ জানিয়েছে, অসংখ্য নারীকে প্রতারণার মাধ্যমে অনেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ব্ল্যাকমেইল পর্ব-১
প্রতারক ফাহদ ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে অল্প বয়সী নারীদের দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক সংস্থায় যেমন গুগল-উইকিপিডিয়াতে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখাত। এ সময় চাকরিপ্রত্যাশী অনেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করত। তাদের (চাকরিপ্রার্থী) প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে তিন শ থেকে ৫০০ টাকা ‘রেজিস্ট্রেশন ফি’ নেয়া হতো। এভাবে অনেক চাকরিপ্রত্যাশীকে আকৃষ্ট করত।
অন্যদিকে মোবাইলে বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে নারীকণ্ঠে চাকরিপ্রার্থীদের সাথে যোগাযোগ করা হতো। এ ছাড়া বিভিন্ন কৌশলে প্রার্থীদের করোনাকালীন সময়ে ‘ভার্চুয়াল মেডিকেল’ করা হবে বলে জানানো হতো। প্রার্থীদের (নারীদের) বিভিন্ন সামাজিক চ্যাটিং অ্যাপস-এর মাধ্যমে ভিডিও কলে যুক্ত করত। এ সময় নিজের মোবাইলের ক্যামেরা বন্ধ রেখে ভিডিওকলে মেডিকেল পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলে কৌশলে ভিকটিমদের গোপন ভিডিও ধারণ করত। পরবর্তীতে গোপনে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হতো। এভাবে অভিযুক্ত ফাহাদ শতাধিক নারীকে ব্ল্যাকমেল করেছে।
চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যাশীদের অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হতো। ফাহাদ নিজেই বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে ভয়েস পরিবর্তন করে নারীকন্ঠে চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে ‘ভুয়া নিয়োগ’ প্রক্রিয়া শেষ করত। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন নারীর নাম ব্যবহার করে চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রথমে নিজেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিত। একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরিতে যোগদান করেছে বলে জানাত। পরবর্তীতে নিজেই ওই কোম্পানির অ্যাডমিন অফিসার হিসেবে বিভিন্ন নামে পরিচয় দিত এবং ভিকটিমদের ইন্টারভিউ নিত। পুনরায় ওই অ্যাপস-এর মাধ্যমে ভয়েস পরিবর্তন করে নিজেই মেডিকেল অফিসার হিসেবে ভিকটিমদের ভার্চুয়াল মেডিকেল করানোর নামে ভিডিও করত।যেহেতু করোনাকালীন সময়ে হাসপাতালে গিয়ে মেডিক্যাল করা সহজ ছিল না, সে ক্ষেত্রে গ্রেফতার ফাহাদ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কৌশলে ভিডিও করে ভিকটিমদের ব্ল্যাকমেইল করত।
এরই ধারাবাহিকতায় গতরাতে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নৰ্দ্দা এলাকায় অভিযান চালায়। পরবর্তীতে ‘ভার্চুয়াল মেডিক্যাল স্ক্যানিং’-এর নামে গোপন ভিডিও চিত্র ধারণ করে ব্ল্যাকমেলিংয়ের অপরাধে আল ফাহাদকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফাহাদ জানিয়েছে, অসংখ্য নারীকে প্রতারণার মাধ্যমে অনেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।