মৃত্যু সনদ জালঃ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিলেন আদালত

 জমির দলিল জাল এবং মৃত্যু সনদ জালিয়াতির ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।

মৃত্যু সনদ জালঃ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিলেন আদালত
প্রতীকী ছবি

আসলে খাজেম মোল্লা ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট মারা গেছেন। তার মৃত্যু সনদটি অনলাইনেও আছে। অন্যদিকে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য খাজেম মোল্লার মৃত্যুর সাত বছর পর যে মৃত্যু সনদটি দিয়েছেন তা অনলাইনে ও ইউপির মৃত্যু নিবন্ধন রেকর্ডেও নেই। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালত নিশ্চিত হন আসামি সাহাবুদ্দিন দলিলটি জাল করেছেন ।

রাজশাহী সংবাদদাতাঃ

 জমির দলিল জাল এবং মৃত্যু সনদ জালিয়াতির ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। জানা গেছে,  ভুয়া মৃত্যু সনদ ইস্যু করায় রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও সদস্য বিষ্ণু চন্দ্র মন্ডলের নামে এ আদেশ দিয়েছেন  রাজশাহীর বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মারুফ আল্লাম।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, একটি দলিলকে জাল দাবি করে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ মামলা করেন চারঘাটের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা জুলফিকার আলী। এ জালিয়াতির ঘটনায় সরদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য সাহাবুদ্দিন ওরফে শাহাবুল জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।  দলিল জালের মামলায় ইতোমধ্যে সাহাবুদ্দিন বর্তমানে জেলে। সাহাবুদ্দিন খাজেম মোল্লা নামের এক ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জমির দলিল করেন। কিন্তু যে সময়ে তিনি খাজেম মোল্লাকে জীবিত দেখিয়েছেন দলিলে তার আগেই ওই ব্যক্তি মারা যান। 

জাল দলিলের বিরুদ্ধে খাজেম মোল্লার ছেলে জুলফিকার আলী যে মামলা করেন তার তদন্তভার দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশানকে (পিবিআই)। পুলিশ তদন্ত করতে নেমে খুঁজে পান আলোচিত খাজেম মোল্লা ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট মারা গেছেন। মৃত্যুর চার মাস পর ওই বছরের ১ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার মৃত্যু সনদ ইস্যু করা হয়। কিন্তু আসামি সাহাবুদ্দিন পক্ষে আদালতে খাজেম মোল্লার একটি মৃত্যু সনদ জমা দেওয়া হয় যাতে উল্লেখ করা হয় ওই ব্যক্তি ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর মারা গেছেন। 

আসামির পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি খাজেম মোল্লার মৃত্যু সনদটি ইস্যু করেন। পিবিআই তদন্ত করে আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলেন, আসলে খাজেম মোল্লা ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট মারা গেছেন। তার মৃত্যু সনদটি অনলাইনেও আছে। অন্যদিকে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য খাজেম মোল্লার মৃত্যুর সাত বছর পর যে মৃত্যু সনদটি দিয়েছেন তা অনলাইনে ও ইউপির মৃত্যু নিবন্ধন রেকর্ডেও নেই। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালত নিশ্চিত হন আসামি সাহাবুদ্দিন দলিলটি জাল করেছেন । এলাকাবাসীর অনুমান এ কাজের সঙ্গে আরও অনেকের যোগসাজশ থাকতে পারে।

এদিকে জাল মৃত্যু সনদ ইস্যুর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও ওয়ার্ড সদস্য বিষ্ণু চন্দ্র মন্ডলের বিরুদ্ধে মামলার আদেশ দেন।  এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীদের কোন তথ্য দিতে বা মন্তব্য করতে  নিমপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান  রাজি হননি বলে জানা গেছে।

ক্রাইম ডায়রি/ক্রাইম