জামাত হতে খোলস পাল্টে এখন আওয়ামিলীগঃ অভিযোগ স্থানীয় ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতাদের

নিজে কিংবা পরিবারের কেউ কোন অপকর্ম করলে যেমন কাউকে নীতিকথা বলা শোভা পায়না ঠিক তেমনি নিজ পরিবারের সবাইকে গোডাউনে রেখে স্বার্থরক্ষায় নিজেকে শোডাউন করলে তা কখনোই কোন দলের জন্যই মঙ্গলজনক হতে পারেনা।

জামাত হতে খোলস পাল্টে এখন আওয়ামিলীগঃ অভিযোগ স্থানীয় ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতাদের
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

এখন খাঁটি আওয়ামীলীগ সেজে বিভিন্ন সচিব,মন্ত্রী, এমপি এবং আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ছবি উঠিয়ে সুবিধা আদায় করছে

অনলাইন ডেস্কঃ

সময়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন দল হতে সুবিধাভোগী হাজার হাজার স্বার্থপর পট পরিবর্তন করে, অর্থ ব্যায় করে মুক্তিযুদ্ধের ধারক ও বাহক দল আওয়ামীলীগে হাইব্রিড হয়ে অনুপ্রবেশ করে টাকা দিয়ে বৃহৎ পদ বাগিয়ে খন্দকার মোশতাকীয় কায়দায় বসে আছে।

এরা যে দল হতেই আসুক সেই দলেরও শত্রু আবার আওয়ামীলীগের জন্য খন্দকার মোশতাক

ইদানীং কালে এই প্রবণতা দেখা যায়,  জামায়াত নামধারী মুনাফিক টাইপ কিছু ব্যবসায়ীর মধ্যে।  এরা স্বপরিবারে জামায়াতের বীজ কিন্তু খোলস পাল্টে এখন আওয়ামীলীগের হেডম হয়ে বসে আছে। প্রকারান্তরে, এবি পার্টির মতো এরা জামায়াতেরও ক্ষতি করেছে।

এদের দাপটে আওয়ামিলীগের ত্যাগী নেতা কর্মীরাও আজ পদ ও সুবিধা বঞ্চিত। এরা কোন দিনও কর্মী ছিলনা। ছলনা আর টাকা, গিফট, ফলমূল কিংবা বাজার দিয়ে, মামালীগ,ভাইয়ালীগ, ভাবীলীগকে কাজে লাগিয়ে পদ বাগিয়ে বসে আছে। এরা ফেলে আসা দলের জন্য ক্ষতিকর হলেও কিছু বলতে না পারায় আওয়ামিলীগের জন্য ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীনকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উপজেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহিবুল হাসান মুকিতের বিরুদ্ধে। এই মুক্তিযোদ্ধা নিজেই অভিযোগটি করেন

এমন অসংখ্য উদাহরন হাটে মাঠে ঘটে।  ক্ষুদ্ধ আওয়ামীলীগের তৃনমূল। অসহায় আওয়ামীপন্থী পরিবার গুলো। আরেকবার খন্দকার মোশতাকের গন্ধ আওয়ামী শিবিরে। তাই সময় থাকতেই সাবধান হবার আহবান আওয়ামিলীগের প্রতি।

সম্প্রতি, গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর আলোচিত ঘটনা পুরো দেশের অজানা ও প্রচারহীন ঘটনাকে সামনে আনতে শুরু করেছে। জানা গেছে, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহিবুল ইসলাম মুকিতকে ‘প্রকৃত আওয়ামী লীগ’ হিসেবে সার্টিফিকেট দিচ্ছেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি তাজুল ইসলাম মিলন। এনিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন।  

কমিটি ঘোষণার পরপরই মাহিবুল ইসলাম মুকিতের বিরুদ্ধে ‘স্বাধীনতা বিরোধী ও জামায়াত পরিবারের সন্তান এমন প্রশ্ন ওঠে। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিও প্রতিবেদনও জমা দেয়। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর কেটে গেছে এক মাস। কিন্তু এখনও কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি। এরই মধ্যে জামায়াত নেতার এই সার্টিফিকেট আগুনে ঘি ঢাললো।

নেতাকর্মীরা বলেছেন, মুকিতের পক্ষে জামায়াত নেতার এই অবস্থানই সব পরিষ্কার করে দিয়েছে।  তারা বলছেন অসংখ্য এমন ঘটনা ঘটছে চারিদিকে।  নিরব কেন্দ্র। করনীয় নিয়ে অসহায় অবস্থায় তৃনমুল। 

মুকিতের পরিবারের জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে আমিনুল ইসলাম নামে গাইবান্ধা পলাশবাড়ীর স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি বরাবর এক অভিযোগপত্র পাঠান। পরবর্তীতে এ বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ তথ্যানুসারে সেই তদন্ত প্রতিবেদন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পাঠায়। 

মুকিতকে আওয়ামী লীগ থেকে যেন বহিষ্কার না করা হয়, সেজন্য স্থানীয় জামায়াত নেতারা এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের পলাশবাড়ী উপজেলার সেক্রেটারি তাজুল ইসলাম মিলন একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি মুকিতকে ‘ছাত্রলীগ কর্মী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন!

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভিডিও ছড়িয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, তারা প্রথম থেকেই দাবি করেছেন, মুকিতের পিতা এক সময়ের দাপটশালী জামায়াত নেতা ছিলেন। সেই খোলস থেকে মুকিতও বের হতে পারেননি। আদতে সে কট্টর জামায়াত নেতা। 

তারা আরও বলেন, মিলনের ভিডিও বার্তাই বলে দিলো, সেই দাবি সঠিক। একজন আওয়ামী লীগ কর্মী সে আদতে আওয়ামী লীগের নীতিতে বিশ্বাস করেন কিনা তা যদি জামায়াতের নেতাদের কাছ থেকে জানতে হয়, তাহলে এটি চোখ বুজে বলে দেওয়া যায় সে আসলে কখনো ‘প্রকৃত’ আওয়ামী লীগ কর্মী ছিল না, সে ‘প্রকৃত’ জামায়াত কর্মী। 

একজন কট্টর জামায়াত নেতা কেন একজন সন্দেহভাজন আওয়ামী লীগ কর্মীকে ‘আসল আওয়ামী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে এগিয়ে আসবেন, সেই প্রশ্নও জোরালোভাবে উঠছে।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীনকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উপজেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহিবুল হাসান মুকিতের বিরুদ্ধে। এই মুক্তিযোদ্ধা নিজেই অভিযোগটি করেন। এই অভিযোগ ওঠার পর থেকেই আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাদের পক্ষ থেকে মুকিতকে দল থেকে বহিষ্কারের জোর দাবি তোলা হয়।

এদিকে আওয়ামী লীগের আরেক পক্ষ তাকে বাঁচাতে মরিয়া! এমনকি স্থানীয় পর্যায়ে জামায়াত নেতারাও প্রচার করছেন, মুকিত একজন ‘প্রকৃত’ আওয়ামী লীগ কর্মী, তাকে যেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা না হয়!

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, মাত্র সাত বছর আগে ২০১৩ সালে মুকিতের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে স্থানীয় প্রশাসন অনেক জিহাদি বই ও ধর্মকে ব্যবহার করে উস্কানিমূলক লেখা বই উদ্ধার করে। পারিবারিকভাবেই মুকিত জামায়াতের আদর্শ বহন করে আসছেন।

তার নানা ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতার বিপক্ষে নির্বাচন করেছিলেন। এমনকি জামায়াত ইসলামের তৈরি করা কলেজে মুকিতের বাবা প্রতিষ্ঠাকালীন প্রিন্সিপালও ছিলেন। 

​​সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতিকে নিয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি মুকিততে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও যখন মুকিত বহাল তবিয়তে নিজ দায়িত্বে রয়েছেন তখন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বুঝে ফেলেন তাদের সেই প্রতিবেদন তোয়াক্কাই করা হয়নি।

তবে মুকিতকে তার ব্যক্তিগত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ উম্মে কুলসুম স্মৃতি। কিন্তু কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে এখনও মুকিতের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

মুকিতের বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। এ বিষয়ে ফোনে বীর মুক্তিযোদ্ধা কনক বলেন, আসলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেও লজ্জা লাগছে। জামায়াত-শিবির পরিবারের সন্তানকে আশ্রয় দিচ্ছে আওয়ামী লীগ- এটা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।

আমরা পলাশবাড়ীর মুক্তিযোদ্ধারা খুব শিগগিরই বসছি আবার বিষয়টি নিয়ে। আগেই বলেছিলাম, ব্যবস্থা না নিলে কঠোর অবস্থানে যাবো আমরা।

পলাশবাড়ীর অপর বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা পলাশবাড়ীতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। কেন এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না মুকিতের বিরুদ্ধে, আমরা সামনে কী করবো- এ বিষয়ে আলোচনার পর জানাতে পারব।

তবে আমরা এখনও আমাদের আগের দাবিটিই জানাচ্ছি। আর তা হলো, আওয়ামী লীগের যেকোনও কার্যক্রম থেকে মুকিতের অপসারণ।

এদিকে আওয়ামিলীগ নেতারা জানান ইদানীং কালে অনেক জামায়াত শিবির কর্মী যাদের নামে ২০০০ হতে ২০০৫ সালে জালাও পোড়াও মামলা ছিল তারা যেকোন ভাবেই হোক মামলা ডিসমিস করে এখন খাঁটি আওয়ামীলীগ সেজে বিভিন্ন সচিব,মন্ত্রী, এমপি এবং আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ছবি উঠিয়ে সুবিধা আদায় করছে।

​​​​​যারা সুবিধা দিচ্ছে তারাও হয়তো জানেনা এরা আসলে কারা। তারা টাকায় কাবু হয়ে এদের বারান্দায় নাচছেন। তারা ইনডোর রাজনীতির শিকার হয়েছেন।  

এসব নব্য হাইব্রিড রাজাকারদের দাপটে অনেক জায়গায় জেলা সেক্রেটারিকেও পদ হারাতে হয়েছে।

এরা কাউকে কাউকে এমন হুমকিও দেয় যে গণভবণ হতে সচিবালয়,অসংখ্য ওসি এসপি ও সচিব তাদের হাতের মুঠোয়। তারা আওয়ামিলীগের ডোনার। এমন হুমকিতে মুখ খুলতে সাহসও করেনা অনেকে। এসব নব্য হাইব্রিড রাজাকারদের দাপটে অনেক জায়গায় জেলা সেক্রেটারিকেও পদ হারাতে হয়েছে। আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা কর্মীদের দাবী এখনই যদি খন্দকার মোশতাক দমন না করা হয় তবে বড় মাশুল গুনতে হতে পারে।

ক্রাইম ডায়রি // রাজনীতি// সুত্রঃ অনলাইন ও মিডিয়া