মানিকগঞ্জে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে গলাকেটে হত্যা করল ডেন্টাল চিকিৎসক স্বামী

স্থানীয়রা জানান, রুবেল ও লাভলীর ভালোবাসার বিয়ে, দীর্ঘদিন ধরে তারা সুখে ও শান্তিতে সংসার করে আসছিলেন। ১৫ বছর ধরে রুবেল আঙ্গারপাড়া একই গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।

মানিকগঞ্জে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে গলাকেটে হত্যা করল ডেন্টাল চিকিৎসক স্বামী
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

রুবেল অনেক টাকা ঋণ নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। যার কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতাঃ

এমন ঘটনা ঘটতে পারে আধুনিক সভ্যতায় মানুষের কল্পনায় আসার কথা না। কিন্তু, এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। যুগ যত আধুনিক হচ্ছে মানুষ আইয়ামে জাহিলিয়াতকেও হার মানাচ্ছে।

রাজধানীর অতি নিকটে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে স্ত্রী ও দুই কন্যাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে এক পাষণ্ড স্বামীর বিরুদ্ধে।

খুনি স্বামী পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক। ঘাতক রুবেল ঘিওর  উপজেলার বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ডে দন্ত চিকিৎসক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিলেন।

নিহত এক কন্যা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। ঘটনার পর ঘাতক আসাদুর রহমান রুবেল (৪০) আত্মহত্যার জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শুয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

রোববার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। ভোর ৫টার দিকে স্থানীয়রা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।এ ব্যাপারে নিহত গৃহবধূ লাভলী আক্তারের ভাই মো. আলম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শিবালয় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী। নিহত লাভলী আক্তারের ভাই মো. আলম জানান, তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল, কিন্তু এর পরিণতি এভাবে হবে তা তিনি কল্পনাও করেননি।

 মার্ডার প্রসঙ্গে ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে আসাদুর রহমান রুবেল রোববার রাতে কোনো একসময় তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে পারিবারিক কলহের জের ধরে গলা কেটে হত্যা করে।

নিহতরা হলেন— রুবেলের স্ত্রী লাভলী আক্তার (৩৫), বড় মেয়ে বানিয়াজুরী সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছোঁয়া আক্তার (১৬) ও ছোট মেয়ে স্থানীয় বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কথা আক্তার (১২)।

স্থানীয়রা জানান, রুবেল ও লাভলীর ভালোবাসার বিয়ে, দীর্ঘদিন ধরে তারা সুখে ও শান্তিতে সংসার করে আসছিলেন। ১৫ বছর ধরে রুবেল আঙ্গারপাড়া একই গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।

কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ বাড়তে থাকে। শনিবার দিবাগত রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

স্থানীয় বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল খান বলেন, রুবেল অনেক টাকা ঋণ নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। যার কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন।

এদিকে শিবালয় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং সেখানে পুলিশ অবস্থান করছে। লাশের ময়নাতদন্তের পর হত্যার মোটিভ জানা যাবে বলে তিনি জানান। 

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম