রেলমন্ত্রীর বক্তব্য অনুপ্রেরণা মূলক

দাপট দেখানো তদবিরবাজ বউদের জন্য রেল মন্ত্রীর ঘটনাটি একটি শিক্ষণীয় বিষয়।

রেলমন্ত্রীর বক্তব্য অনুপ্রেরণা মূলক
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

এখানে আমার কোনো ইনভলভমেন্ট ছিলো না।  বলা হচ্ছে যে মন্ত্রীর কারণে এমনটা ঘটছে। আমার যদি কিছু করার থাকত তাহলে তো সরাসরিই করতে পারতাম। কারও সাহায্যের তো দরকার হবে না। মেসেজটা যেভাবে গেছে সেটা সঠিক না

মিয়া মোহাম্মদ হেলাল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

এদেশে পান হতে চুন খসলেই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়ে যায়। দেশীয় সমালোচকরা আন্তর্জাতিক মানের না হওয়ায় এরা প্রেক্ষাপট বোঝেনা,শানে নুজুল খোঁজেনা।

কয়েকদিন আগে একজন ত্যাগী রাজনীতিবিদ ও রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাহেবের স্ত্রীর ভুলে একটি ব্যতিক্রমধারী অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে তাকে।  সাহেবকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভুল ভ্রান্তি স্বীকার করে সত্য প্রকাশ করার জন্য____ 

রেল মন্ত্রীর বক্তব্য:- ❝ আমার আত্মীয়; এটা এখন ঠিক, যেটা আমিও এখন শুনেছি। এর আগে পর্যন্ত আমি জানতাম না, এরা কারা এবং আমার জানার কথাও না। মাত্র ৯ মাস হলো আমার বিয়ে হয়েছে। আমার স্ত্রী আমাকে না জানিয়ে যেটা করেছেন সেটা ঠিক করেননি। এতে আমি বিব্রত। ভুলভ্রান্তি হলে মানুষ তো সেভাবেই দেখবে।

এখানে আমার কোনো ইনভলভমেন্ট ছিলো না। বলা হচ্ছে যে মন্ত্রীর কারণে এমনটা ঘটছে। আমার যদি কিছু করার থাকত তাহলে তো সরাসরিই করতে পারতাম। কারও সাহায্যের তো দরকার হবে না। মেসেজটা যেভাবে গেছে সেটা সঠিক না।

আমি ১১ থেকে ১২ বছর ধরে এমপি, আমার একটা ক্যারিয়ার আছে। আর ৯ মাস হলো নতুন বিয়ে করেছি, শ্বশুর বাড়ির আত্মীয় এমনকি আমার নতুন স্ত্রীও এখনও আমাকে বুঝে উঠতে পারে নাই আমি কি ধরনের মানুষ। ❞ 

 শামীমা আক্তার মনির কর্মকাণ্ডে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়া রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘সবার সহযোগিতা নিয়ে একটা মানুষ ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমি সবার সহযোগিতায় আজকে এ পর্যন্ত এসেছি।’

রোববার রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। 

এ সময় যারা রেলে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের যাত্রী সেবার প্রতি আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। সেই সঙ্গে আচরণ পরিবর্তনের কথা বলেন।

রেলমন্ত্রী এ সময় তার স্ত্রীর এক আত্মীয়র সঙ্গে অসদাচারণের অভিযোগ বরখাস্ত হওয়া টিটিই শফিকুল ইসলামের বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের কথা জানান।   

গত শুক্রবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয় দানকারী তিন যাত্রী। তারা হলেন, মন্ত্রীর স্ত্রীর বোনের ছেলে ইমরুল কায়েস প্রান্ত ও তার চাচাত ভাই ওমর ও হাসান।

টিকিট না থাকলেও এই তিনজন খুলনা থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে যাওয়া সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি কেবিনের আসন দখল করেন। তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের কেবিন থেকে বের করে শোভন বগিতে পাঠান এবং ৩৫০ টাকা করে জরিমানা করেন। এরপর ট্রেন ঢাকায় পৌছার আগেই ভোরে শফিকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়।

মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া সেই তিন যাত্রীর একজন ইমরুল কায়েস প্রান্তের মা ইয়াসমিন আক্তার নিপা পরে গণমাধ্যম কর্মীদের  বলেন, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনির ফোনের পরই টিটিই শফিকুল বরখাস্ত হন। নিপা মন্ত্রীপত্নীর মামাত বোন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

ঘটনার ব্যাখ্যা জানতে রোববার বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার (ডিসিও) কার্যালয়ে তলব করা হয় শফিকুল ইসলামকে। রেলের পাকশী বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত করা ডিসিও নাসির উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে দাবি করেছেন, শফিকুল মানসিক বিকারগ্রস্ত। অতীতেও তিনি যাত্রী ও সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।

(তৈলবাজ প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারী ও মন্ত্রীর দাপট দেখানো তদবিরবাজ বউদের জন্য রেল মন্ত্রীর ঘটনাটি একটি শিক্ষণীয় বিষয়। এখন কিন্তু বউ নয়, ঘটনাটি সামাল দিতে হচ্ছে মন্ত্রীকে ও মাশুল দিতে হবে তৈলবাজ কর্মকর্তাকে)

(মিয়া মোহাম্মদ হেলাল, সাংবাদিক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য প্রবাসী, আওয়ামীলীগ গবেষক, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সুর্য সৈনিক

ক্রাইম ডায়রি // জাতীয়