সিরাজগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এতিমখানার চাল নয়ছয়ের অভিযোগ

সরকারি ১ মেট্রিক টন চালের বাজারমূল্য ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকল্প সভাপতির মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে বলে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জানিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এতিমখানার চাল নয়ছয়ের অভিযোগ
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

সরকারি ১ মেট্রিক টন চালের বাজারমূল্য ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকল্প সভাপতির মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে বলে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জানিয়েছেন।

শ.ম. আব্দুস সাত্তার, সিরাজগঞ্জ ব্যুরোঃ

বঙ্গকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স তখন একশ্রেনীর অপেশাদার ও নামধারী দলবাজরা একের পর এক অনিয়ম করে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেই চলেছে। যদিও দল বলছে যে,  আওয়ামীলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী ও দেশপ্রেমিক দল তাই কোন অবস্থাতেই ব্যক্তির অপকর্মের দায়ভার দল নিবেনা। সম্প্রতি পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার হিসেবে দেয়া সিরাজগঞ্জের তিনটি ইউনিয়নের মাদ্রাসা ও এতিমখানার (লিল্লাহ বোর্ডিং) শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য বরাদ্দকৃত (জিআর) চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের বরাতে এবং উপজেলা পরিষদ প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে,   সদর উপজেলার রতনকান্দি, বাগবাটি ও ছোনগাছা ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৬০ টন (জিআর) চাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না দিয়ে নাম মাত্র টাকা দিয়েছেন রতনকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম জুরান ও ছোনগাছা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।

জুলাই ৫, ২০২৩ইং বুধবার উপজেলা পরিষদ প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের একটি সুত্র গণমাধ্যম কর্মীদের  জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এতিমদের খাবারের জন্য বিভিন্ন ইউনিয়নে (জিআর) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে রতনকান্দি ইউনিয়নে ২৫ প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৩১ মেট্রিক টন, বাগবাটিতে ১০ প্রতিষ্ঠানে ১৪ ও ছোনগাছা ইউনিয়নে ১০ প্রতিষ্ঠানে ১৫ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেওয়া হয়। 

মে ২৮,২০২৩ইং  সদর উপজেলা পরিষদ প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে ৬০ টন চালের ডিও নেন সাইদুল ইসলাম এবং এই জিআর চাল উত্তোলন করে  তিনি তা সিরাজগঞ্জ শহরের বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ী আফসার আলীর নিকট বিক্রি করেন।  সরকারি ১ মেট্রিক টন চালের বাজারমূল্য ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকল্প সভাপতির মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে বলে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জানিয়েছেন।

মাদ্রাসা, এতিমখানার শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বাকি টাকা সাইদুল ইসলাম জুড়ানের নেতৃত্বে বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ও ছোনগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভাগ বাটোয়ারা করে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এরই প্রেক্ষিতে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা কথা বলেন প্রাপক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে।  এসময় শাহানগাছা তালিমুস সুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিম খানার সুপার মুফতি আল-আমিন  জানান,  আমার মাদ্রাসায় ১ টন চাল বরাদ্দ হয়েছিল। দত্তবাড়ী মাদ্রাসায় আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের সেই টাকা দেওয়া হয়। আমি ১ টনের বিপরীতে ২৫ হাজার টাকা পেয়েছি। যাদের ১ টন তারা সবাই ২৫ হাজার এবং যাদের ২ টন তারা ৫০ হাজার করে টাকা পেয়েছে। বাগবাটি পশ্চিম ফুলকোচা কবরস্থান দারুল হুদা ইসলামি কওমি মাদ্রাসার সুপার মৌলানা মো.আসাদুল্লাহ বলেন, আমাকে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। কত টাকা বরাদ্দ এসেছে তা আমার জানা নেই।

বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, ১ টন ও ২ টনের অনুকূলে প্রতি মাদ্রাসায় ২৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাকি টাকা আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে বিতরণ করা হবে। রতনকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম জুড়ান বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদ পড়েছে। বেঁচে যাওয়া টাকা ওইসব প্রতিষ্ঠানে দেওয়ার জন্য আলোচনা চলছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, মাত্র ৫ দিন আগে এখানে যোগদান করেছি। এই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারব।

ক্রাইম ডায়রি/ ক্রাইম