চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা : অভিযান অব্যাহত

বাংলাদেশের প্রত্যেক থানার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সব মিলিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা : অভিযান অব্যাহত
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়ে দেশের প্রতিটি জেলার প্রতিটি থানায় এই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার, পরিদর্শক, উপ-পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে নিতেন।

অনলাইন ডেস্ক: 

সারাদেশেে একটি চক্র সহজসরল মানুষদেরকে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্বসাৎ করছে।  এমনই একটি চক্রের  চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের হোতা মো. ফজলুল হক (৫৬), মো. হুমায়ন কবির (৪৪), আবু সাইম রিয়াজ (৩২) ও মামুনুর রশিদ (২৪)। ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আবদুল্লাহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 

এসময় তাদের কাছ থেকে ৭২টি বিভিন্ন নামীয় নিয়োগপত্র, রশিদ বই, একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, একটি প্রিন্টার, একটি মাউস, একটি কিবোর্ড, পাঁচটি বিভিন্ন ক্যাবল, চারটি বই, একটি পাসপোর্ট, একটি এটিএম কার্ড, নয়টি মোবাইল ও নগদ এক হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

আগষ্ট ২৯ র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- গ্রেফতার ফজলুল হক চক্রের হোতা। তিনি একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়ে দেশের প্রতিটি জেলার প্রতিটি থানায় এই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার, পরিদর্শক, উপ-পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে নিতেন। এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি ওই থানা এলাকার স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং চাকরি সন্ধানী বিভিন্ন স্বনামধন্য ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের বাছাই করতেন, যাতে করে স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে কোনো অসুবিধা না হয়। পরে ফজলুল হক ও তার অন্যান্য সহযোগীরা মিলে প্রত্যেক থানায় একজন সুপারভাইজার এবং তার অধীনে তিনজন করে পরিদর্শক এবং একজন পরিদর্শকের অধীনে পাঁচটি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে লোভনীয় অফারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব বণ্টন করতেন।  

র‍্যাব সিও জানান, ফজলুল হক ও তার সহযোগীরা থানা পর্যায়ে ভুয়া নিয়োগ প্রাপ্ত সুপারভাইজারদের মাধ্যমে গ্রামের বিভিন্ন স্কুলে তার নির্দিষ্ট কিছু বই বিতরণ করতেন। এই বইয়ের আলোকে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এবং বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার হিসেবে ল্যাপটপ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ জনপ্রতি ১০০-২০০ টাকা করে হাতিয়ে নিতেন। এ ছাড়া উপবৃত্তি দেওয়ার নাম করে তারা রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৫০-২০০ টাকা করে সংগ্রহের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যেক থানার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সব মিলিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে। র‌্যাব জানিয়েছে এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যহত থাকবে।

ক্রাইম ডায়রি/ক্রাইম