গোপালগঞ্জে এক ব্যাংক কর্মকর্তা উধাওঃ টাকা তছরুপের অভিযোগ

অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে পরের দিন কাশিয়ানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ব্যাংকের নবাগত শাখা ব্যবস্থাপক মো. ফাইজুর রহমান।

গোপালগঞ্জে এক ব্যাংক কর্মকর্তা উধাওঃ টাকা তছরুপের অভিযোগ
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত
গোপালগঞ্জে এক ব্যাংক কর্মকর্তা উধাওঃ টাকা তছরুপের অভিযোগ

নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মফিজুর রহমান ব্যাংক শাখায় বড় ধরণের আর্থিক অনিয়ম করেছেন। ব্যাংক হিসাবে কয়েক কোটি টাকার গরমিল রয়েছে

ক্রাইম ডায়রি ডেস্কঃ

গোপালগঞ্জের জেলার কাশিয়ানী রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোঃ মফিজুর রহমান(৩৫)  রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন।  নিখোঁজ ওই ব্যাংক কর্মকর্তা উপজেলার জয়নগর বাজার রুপালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি একই উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের ফলসি গ্রামে।  তিনি স্থানীয়  মো. মতিয়ার রহমান মোল্যার ছেলে। 

গত পহেলা আগস্ট,২০২৩ইং ব্যাংকের ঐ শাখা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর ৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো  সন্ধান মেলেনি ঐ ব্যাংক কর্মকর্তার। তবে তিনি কি সত্যিই নিখোঁজ, না আত্মগোপন করেছেন তা নিয়ে এলাকা জুড়ে  চলছে নানা ধরনের আলোচনা ।  তৈরি হয়েছে  ধুম্রজাল। এ ব্যাপারে কাশিয়ানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। 

রুপালী ব্যাংক সূত্রে জানা যায় , মোঃ মফিজুর রহমান ২০১৯ সালের শেষের দিকে রূপালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন। জুন মাসের ২৬ তারিখে নতুন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার  হিসেবে জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা মো. ফাইজুর রহমানকে বদলী (নিযুক্ত) করা হয়। তিনি ১ আগস্ট দায়িত্ব বুঝে নিতে ও যোগদান করতে ব্যাংকে আসলে কর্মরত ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মোঃ মফিজুর রহমান ব্যাংক থেকে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে পরের দিন কাশিয়ানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ব্যাংকের নবাগত শাখা ব্যবস্থাপক মো. ফাইজুর রহমান।

ঐ শাখার একটি সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মফিজুর রহমান ব্যাংক শাখায় বড় ধরণের আর্থিক অনিয়ম করেছেন। ব্যাংক হিসাবে কয়েক কোটি টাকার গরমিল রয়েছে। যে কারণে তিনি আত্মগোপন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনিয়মের বিষয় খতিয়ে দেখতে রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম কাজ করছে। তদন্তের পর মোঃ মফিজুর রহমান নিখোঁজের রহস্য বেরিয়ে আসবে বলেও ওই সূত্র জানিয়েছে।

নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করে বর্তমান কর্মরত শাখা ব্যবস্থাপক মো. ফাইজুর রহমান জানান- পূর্বের শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান নিখোঁজ হওয়ায় কাশিয়ানী থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। ব্যাংকে আর্থিক কোনো অনিয়ম আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে প্রধান কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ব্যাংকে এসেছিলেন। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করছেন। তদন্তের স্বার্থে আপাততো এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে খুব শ্রীঘ্রই নিখোঁজের কারণ জানা যাবে। 

এদিকে, পুলিশের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চের ইমিগ্রেশন শাখায় ফাইজুর রহমানের করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে- ‘নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তা মফিজুর রহমান ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতি ও আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতীয়মান এবং তিনি যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করতে পারেন। তিনি যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’ 

এদিকে মফিজুর রহমান পরিবার নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের মিয়াপাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন। সেখানে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। দরজায় তালা ঝুলতে দেখা যায় । ফলে তার পরিবারের কারও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি ।

কাশিয়ানী থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ আলম স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ব ‘ব্যাংক কর্মকর্তা নিখোঁজের ঘটনায় ব্যাংকের নতুন শাখা ব্যবস্থাপক মো. ফাইজুর রহমান ঘটনার পরের দিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তারা এ ব্যাপারে তদন্ত করছেন। অপরদিকে জানা গেছে,  সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) তদন্ত করছে । 

ক্রাইম ডায়রি/ ক্রাইম