বিয়ানীবাজারে প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

মামলায় আদালতের নির্দেশে প্রায় দুই মাস পর কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।

বিয়ানীবাজারে প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
ছবি: অনলাইন হতে সংগৃহীত
বিয়ানীবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে মামলা রেকর্ডসহ আদালতে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
সিলেট সংবাদদাতা:
সিলেটের বিয়ানীবাজারে পঞ্চাশোর্ধ এক প্রবাসীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আদালতের নির্দেশে প্রায় দুই মাস পর কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়- বিয়ানীবাজারে প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে পিটিয়ে, হার্ট অ্যাটাকে নয়।
উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুলিশ তার লাশ উত্তোলন করে।
এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবদুলাল ধর ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লুৎফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে মামলা রেকর্ডসহ আদালতে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার বাদী জোবায়দা জালাল বলেন, বড় চাচা আমাদের হার্ট অ্যাটাকে বাবার মৃত্যুর কথা বলেছেন। পরে স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারলাম তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ততক্ষণে বাবার লাশ দাফন করা হয়েছে। তিনি বলেন, লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আদালত থেকে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরও দ্রুত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
মামলার প্রধান অভিযুক্ত সুনাম উদ্দিন বলেন, আমাদের মধ্যে জমিসংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। ঘটনার দিন পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে জালাল উদ্দিনের সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়। তবে তার সঙ্গে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, প্রবাসে ভাইয়ের সন্তানদের ধারণা থেকেই হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর কথা বলেছি।
মৃত জালাল উদ্দিন একই গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর পুত্র। এ ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিহতের মেয়ে আপন চাচাসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে।
এদিকে মৃতের সন্তান প্রবাসে থাকায় বড় চাচা সুনাম উদ্দিন পুলিশকে না জানিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরদিন জানাজা শেষে লাশ দাফন করেন। পিতাকে মারধরের খবর পেয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর তিনি প্রাথমিকভাবে অভিযোগ করেন এবং পরে দেশে এসে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করেন জোবায়দা জালাল। মামলায় নিহতের বড় ভাই সুনাম উদ্দিন (৬০), তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাবিয়া বেগম (৩৬), পালিত কন্যা মান্না বেগম (২২) ও একই এলাকার পাথারিপাড়া গ্রামের আব্দুল হাছিবকে অভিযুক্ত করেছেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, তার পিতা জালাল উদ্দিনের (৫৫) দেশে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে। এজন্য ২০১৯ সাল থেকে তিনি দেশে বসবাসরত ছিলেন। গত ১৯ আগস্ট জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার বড় চাচা সুনাম উদ্দিনসহ পরিবারের লোকজন ঐদিন তার পিতাকে মারধর করেন। বিকালে মৃত্যুর পূর্বে তিনি বিষয়টি স্থানীয়দের অবহিত করেছেন।
ক্রাইম ডায়রি// ক্রাইম/জেলা