গেমিং ভয়ংকরঃ অপহরন হত্যা অতঃপর গ্রেফতার

প্রতিবেশি হতে সাবধান। অনলাইন, ফেসবুক,ইউটিউব, বিগো,ট্যাঙ্গু,গেমিং এর যুগে মনুষ্যত্ব এখন মোবাইলের স্ক্রিনে বন্দী। মানবতা বন্দী নেটের জালে। এখন শিশুদের মাঠে দেখা যায়না,বুদ হয়ে থাকে অলিতে-গলিতে কিংবা চিপায় চাপায়। সাবধান। সাবধান।।

গেমিং ভয়ংকরঃ অপহরন হত্যা অতঃপর গ্রেফতার

আলামিন মেম্বর,নরসিংদী হতেঃ

ভয়ংকর এক আযাবের নাম গেমিং। পরিবারকে ধ্বংস করতে মাদকের বিকল্প মাদক এই গেমিং।  এই গেমিং এর জন্য বহু শিশুর ভবিষ্যত জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।  এদেরকে ফিরানোর মতো গল্প মা-বাবার জানা নেই। আর অতি আধুনিকতা পালন করতে গিয়ে মা বাবা-মার সময়ই নেই এটা নিয়ে ভাববার। সম্প্রতি এই আপদের কারনে একজন শিশুকে হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। এ ঘটনায় গেমিং ল্যাপটপের জন্য শিশু অপহরণ ও হত্যাকান্ডের মূল হোতাকে গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, টিভিতে সিআইডি ও ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে গেমিং ল্যাপটপ কেনার টাকার জন্য সিয়াম ও রাসেল নামের দুই বন্ধু টাকা সংগ্রহের জন্য অপহরণ করার প্ল্যান করে।  তারা অপহরণের ০২ দিন আগে গেমিং ল্যাপটপ কিনে ইউটিউবে গেম লোড করে টাকা উপার্জনের জন্য মালয়েশিয়া প্রবাশী জামাল উদ্দিনের ০৮ বছরের শিশু ইয়ামিনকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে।

ভয়ংকর এক আযাবের নাম গেমিং। পরিবারকে ধ্বংস করতে মাদকের বিকল্প মাদক এই গেমিং।  এই গেমিং এর জন্য বহু শিশুর ভবিষ্যত জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।  এদেরকে ফিরানোর মতো গল্প মা-বাবার জানা নেই। আর অতি আধুনিকতা পালন করতে গিয়ে মা বাবা-মার সময়ই নেই এটা নিয়ে ভাববার। সম্প্রতি এই আপদের কারনে একজন শিশুকে হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। এ ঘটনায় গেমিং ল্যাপটপের জন্য শিশু অপহরণ ও হত্যাকান্ডের মূল হোতাকে গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ

পরিকল্পনা অনুযায়ী নভেম্বর  ২৮, ২০২১ইং ইউপি নির্বাচনের দিন উত্তর-বাখরনগর মধ্যপাড়া শিশু ইয়ামিনের বাড়ীর পাশে দোকানের সামনে হতে সিয়াম ও রাসেল দুইজন খেলার ছলে ইয়ামিনকে সিয়ামের বাড়ীর নির্জন রুমে নিয়ে যায়। সিয়ামের বাড়ীতে ইয়ামিনকে অপহরণ করার পর মুখ, হাত, পা বেধে বস্তায় ভরে রেখে ইয়ামিনের মায়ের কাছে স্ক্রিপ্টেডবায়া এ্যপস ব্যবহার করে ভিপিএন এর মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে।

জানা যায় যে, তারা সিআইডি ক্রাইম পেট্রোল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে মোবাইলে স্ক্রিপ্টেডবায়া এ্যপস ব্যবহার করে ভিপিএন এর মাধ্যমে ফোন করে মুক্তিপনের টাকা চায়। পরবর্তীতে মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে অপহরণের দিন সন্ধ্যা বেলায় হাত-পা বাধা অবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে সিয়াম এবং রাসেল ইয়ামিনকে হত্যা করে।

হত্যার পর ইয়ামিনের লাশ হাত-পা বেধে বালিশ চাপা দিয়ে গোয়াল ঘরের কারের উপরে বস্তাবন্ধি করে রাখে।  উক্ত ঘটনার ০৪ দিন পর বস্তাবন্ধি লাশ রাতের অন্ধকারে ডোবার মধ্যে ফেলে আসে। 

অসহায় মা ও প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঘটনার ০৩ দিন পর বাদী সামসুন্নাহার বেগম রায়পুরা থানায় এজাহার দায়ের করে। এরপর রায়পুরা থানাধীন উত্তর বাখরনগর এলাকায় ইয়ামিন (০৮) এর মৃতদেহ পাওয়া যায়। অতঃপর জনাব কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম, পুলিশ সুপার, নরসিংদী মহোদয়ের নির্দেশে মোঃ আবুল বাসার পিপিএম, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), নরসিংদীর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), নরসিংদীর এসআই মোহাম্মদ তানভীর মোর্শেদ, এসআই কবির উদ্দিন, এসআই মোঃ সফিউদ্দিন ও রায়পুরা থানা পুলিশের এসআই জহিরুল হক সাড়াশি অভিযানে নামে।

ডিসেম্বর ০৪ ডিসেম্বর ০৪, ২০২১ইং তারিখ শপষ রাত ০৪.০০ ঘটিকার সময় রায়পুরা থানার উত্তর বাখরনগর এলাকা হতে আসামী সিয়াম উদ্দিনকে এবং রায়পুরা থানাধীন পিরিজকান্দি এলাকা হতে আসামী রাসেল মিয়াকে আটক করে পুলিশ।

এসময় আটককৃতদের হেফাজত হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত স্কচটেপ ও বালিশ এবং অপহরণ ঘটনায় ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম আলামত হিসেবে উদ্ধার করে তাদের অত্র মামলায় গ্রেফতার করেন।

প্রাথমিক তদন্তকালে জানা যায়, আসামীদের স্বভাব চরিত্র ভালো নয়। আটককৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা হত্যার কথা  স্বীকার করে। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় একই এলাকার  মৃগ আসাদ মিয়ার ছেলে মোঃ সুজন মিয়া (২৪) এবং  মৃত রাজা মিয়ার ছেলে কাঞ্চন মিয়া (৫৪) কে  নরসিংদীর রায়পুরা থানার উত্তর-বখরনগর এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।  আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। 

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম