জেদ্দায় সোনাসহ আবারও বিমানের কেবিন ক্রু আটকঃ পিছনে থাকতে পারে ভয়ংকর চক্র

নেপথ্যে রয়েছে ভয়ংকর চক্র। একজন বিমানের কেবিন ক্রু শুধু নন।অনেকেই আছেন যারা দেশে বসেই চাকুরি ছেড়ে দাম্ভিক গল্প দেন কুয়েত কাতারে অবস্থানরত অনেক রাঘববোয়াল স্মার্গলারের। এছাড়া চাকরী ছেড়ে গেছেন বিমানসহ সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী যারা বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় বড় প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তা হয়েছেন যোগ্যতা ছাড়াই। মুলে রয়েছে স্বর্ন চোরাচালান হতে আয়কৃত মোটা অংকের টাকা।( ‍বিস্তারিত প্রতিবেদন আসছে) সোনা চোরাচালান চক্রের গডফাদাররা বিমানের এসব কেবিন ক্রুকে ক্যারিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার সোনা আনছে।

জেদ্দায় সোনাসহ আবারও  বিমানের কেবিন ক্রু আটকঃ পিছনে থাকতে পারে ভয়ংকর চক্র
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

শাহাদাত হোসেন রিটনঃ

সোনা চোরাচালানের অভিযোগ যেন কেবিন ক্রু কপাল হতে ঘুচছেই না। কিছুদিন আগে সোনাসহ আটক হয়েছিলেন  কেবিন ক্রু রুহুল আমিন শুভ। সেই দূর্নাম ঘুচেনি এখনও তার আগেই  তিন কোটি টাকার সোনা ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ সৌদিতে আটক হলেন বিমানের কেবিন ক্রু। তার নাম ফ্লোরা। ১৩ জুন ফ্লাইটে ওঠার আগ মুহূর্তে তাকে আটক করে সৌদি পুলিশ। এ কারণে বাধ্য হয়ে তাকে ছাড়াই দেশে ফিরে আসে বিমানের ফিরতি ফ্লাইট। এ ঘটনায় ফ্লোরাকে গ্রাউন্ডেট করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। বিমানের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় ফ্লোরা চাকরিচ্যুত হতে পারেন। 

সৌদি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিমানের ঢাকাগামী ফ্লাইট বিজি ০৩৪০-এর ফ্লাইট পার্সার হিসাবে ডিউটি ছিল ফ্লোরার। রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানে ওঠার আগ মুহূর্তে সৌদি পুলিশ জানতে পারে তার লাগেজে বিপুল পরিমাণ সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রা আছে। এরপর পুলিশ লাগেজ তল্লাশি করে প্রায় ৩ কোটি টাকা সমমূল্যের সোনা উদ্ধার করে। এসব সোনার কাগজপত্র দেখতে চাইলে ফ্লোরা তা দেখাতে পারেননি। এ কারণে তাকে আটক করা হয়। পরে বিমানের ফ্লাইটটি তাকে ছাড়াই ঢাকার উদ্দেশে বিমানবন্দর ত্যাগ করে। 

বিমানের কাস্টমার সেন্টার সূত্রে জানা যায়, সৌদি কারাগার থেকে ফ্লোরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ আছে, বিমানের শিডিউলিং শাখার একটি সিন্ডিকেটের হাত ধরে ফ্লোরা ও শুভ এই রুটে একটি বড় ধরনের সোনা চোরাচালান চক্র গড়ে তুলেছেন।

সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী, বিমানের এ ধরনের ফ্লাইটে ১০ জন কেবিন ক্রু থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ফ্লোরা আটক হওয়ায় পাইলট আইন লঙ্ঘন করে ৯ জন ক্রু নিয়ে ঢাকায় আসেন। এ ঘটনায় বিমানকে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানার শিকার হতে হবে।

ফ্লোরা।

ফ্লোরা।

বিমানের কাস্টমার সেন্টার সূত্রে জানা যায়, সৌদি কারাগার থেকে ফ্লোরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ আছে, বিমানের শিডিউলিং শাখার একটি সিন্ডিকেটের হাত ধরে ফ্লোরা ও শুভ এই রুটে একটি বড় ধরনের সোনা চোরাচালান চক্র গড়ে তুলেছেন। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে সোনা আনত বিমানের ফ্লাইট ব্যবহার করে। শিডিউলিং শাখায় ওই সিন্ডিকেট মোটা অঙ্কের টাকা মাসোহারা নিয়ে চক্রের সদস্যদের এই রুটে ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দেয়। প্রতি ফ্লাইটে শিডিউলিং শাখার সিন্ডিকেট ১০ থেকে ২০ হাজার করে টাকা নেয় ক্রুদের কাছ থেকে।

সোনা চোরাচালান চক্রের গডফাদাররা বিমানের এসব কেবিন ক্রুকে ক্যারিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার সোনা আনছে। ফ্লোরা, শুভ ও তার (শুভ) স্ত্রীর বিরুদ্ধে সোনা আমদানি ও টাকা পাচারসহ অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও বিমানের একজন সাবেক প্রভাবশালী পরিচালকের কারণে কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিতেন না। এ কারণে ১৩ জুন ফ্লোরা আটক হলেও বিমান কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনাটি গোপন রেখে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, হাতেনাতে আটক হওয়ার পরও শুভকে ফের চাকরিতে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিন্ডিকেট। এ কারণে তারা কাউকে পরোয়া করে না। 

জানা যায়, চক্রের এক সদস্যের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতিসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিমান। তার নাম শেহজাদ। সম্প্রতি সোনাসহ হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন তিনি।এছাড়া সমসাময়িক গোয়েন্দা শাখারও বেশ কয়েকজন প্রথমে সাসপেন্ড থাকলেও পরে চাকুরী ছেড়েছেন স্বেচ্ছায়। তারা  এখন বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছেন তাদের টাকার উৎস কি এ ব্যাপারেও খতিয়ে দেখলে পুরো সিন্ডিকেট্ বের হয়ে আসবে অপরাধ বিশেষজ্ঞদের ধারনা।

ক্রাইম ডায়রি/ক্রাইম