ফিরে দেখাঃ ঘুষ লেনদেন কান্ডে সেই মিজান-বাছিরের কারাদণ্ড

বাংলাদেশ পুলিশ দেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন ও জীবনদানকারী প্রথম প্রতিষ্ঠান। দেশের প্রতি তাদের মমতা কোন অংশেই কম নয়। সেই মমতা থেকেই দেশকে সোনার দেশে পরিণত করার প্রতিটি কর্মকান্ডে তারা অগ্রণী ভুমিকা পালন করে থাকে। তাই বাংলাদেশ পুলিশের যে কেউ যতবড় দায়িত্বশীলই হোন না কেন তাকে শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত  ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। একই ভাবে প্রতিষ্ঠার পর হতে জনমনে শান্তি আনয়নকারী প্রতিষ্ঠান দুদক। আভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কেউই এখানে শাস্তির আওতার বাইরে নন।

ফিরে দেখাঃ ঘুষ লেনদেন কান্ডে সেই  মিজান-বাছিরের কারাদণ্ড
ছবি-অনলাইন হতে সংগৃহীত
চার্জশিটে বলা হয়, দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে কমিশনে দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে, নিজের লাভবান হওয়ার আশায়, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ডিআইজি মো. মিজানুর রহমানকে অবৈধভাবে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে ৪০ লাখ টাকা ঘুস গ্রহণ করেন।
শাহাদাত হোসেন রিটনঃ
মনে আছে সেই মিজান-বাছিরের কথা। আলোচিত এই ঘটনায় চলতে থাকা মামলার রায় ঘোষনা হয়েছে। ঘুস লেনদেনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় পৃথক দুটি ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে মোট আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাকে ৮০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে একটি ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ দেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন ও জীবনদানকারী প্রথম প্রতিষ্ঠান। দেশের প্রতি তাদের মমতা কোন অংশেই কম নয়। সেই মমতা থেকেই দেশকে সোনার দেশে পরিণত করার প্রতিটি কর্মকান্ডে তারা অগ্রণী ভুমিকা পালন করে থাকে। তাই বাংলাদেশ পুলিশের যে কেউ যতবড় দায়িত্বশীলই হোন না কেন তাকে শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত  ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। একই ভাবে প্রতিষ্ঠার পর হতে জনমনে শান্তি আনয়নকারী প্রতিষ্ঠান দুদক। আভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কেউই এখানে শাস্তির আওতার বাইরে নন।
 
এরই ধারাবাহিকতায় সম্পুর্ন প্রভাবমুক্ত থেকে ফেব্রুয়ারী ২৩,২০২২ইং,বুধবার ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। ইতোপুর্বে মিজানকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এবং বাছিরকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১১টার পর তাদের তোলা হয় কাঠগড়ায়। ১০ ফেব্রুয়ারি দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।
চার্জশিটে বলা হয়, দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে কমিশনে দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে, নিজের লাভবান হওয়ার আশায়, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ডিআইজি মো. মিজানুর রহমানকে অবৈধভাবে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে ৪০ লাখ টাকা ঘুস গ্রহণ করেন।
 ফেব্রুয়ারি ৬,২০২২ইং খন্দকার এনামুল বাছিরের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু করেন তার আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান। তবে সেদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় ১০ ফেব্রুয়ারি অবশিষ্ট যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ঠিক করা হয়। বাছিরের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে আদালত রায় ঘোষণার ওই দিন ধার্য করেন। এরও আগে ৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশের বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। যুক্তিতর্কে তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী খালাস দাবি করেন। ২৪ জানুয়ারি দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ওই দুই আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। এরপর ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। একই বছরের ১৮ মার্চ মামলার চার্জ (অভিযোগ) গঠনের আদেশ দেন আদালত। ওই বছরের ১৯ আগস্ট মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৭ জনের মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
 
অপরদিকে মিজানুর রহমান সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য অর্থাৎ অনুসন্ধানের ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে ৪০ লাখ টাকা ঘুস দিয়ে পরস্পর যোগসাজশে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই ৪০ লাখ টাকা ঘুস লেনদেনের অভিযোগে ডিআইজি মিজান ও এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। সেই সময়ে এই ঘটনাটি দেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। 
ক্রাইম ডায়রি// আদালত