সাভারে চিহিৃত সন্ত্রাসীর নয়া কৌশল:পুলিশের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদ দিয়ে প্রত্যাহার ও ভুল স্বীকার

এ ব্যাপারে জরিনা বেগম বলেন, আমার আর কোনো অভিযোগ নেই। আমি  অভিযোগ প্রত্যাহার করেছি। কারণ আমি আমার চেইন খুঁজে পেয়েছি। পুলিশের পক্ষ থেকে কোন চাপ ছিল না কিনা? জবাবে তিনি আরো বলেন, না এ ধরনের কোন চাপ ছিল না। আমারই ভুল হয়েছে।

সাভারে চিহিৃত সন্ত্রাসীর নয়া কৌশল:পুলিশের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদ দিয়ে প্রত্যাহার ও ভুল স্বীকার
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েমকারী এই সন্ত্রাসী মাদক, হয়রানী, চাঁদাদাবী, দখল ও ভীতি প্রদর্শন করে টাকা আদায়সহ হীন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়।

আরিফুল ইসলাম কাইয়্যুমঃ

সাভারের আমিনবাজার বড়দেশী এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসী এবং মাদক সিন্ডিকেটের সদস্য বিল্লাল । বিভিন্ন সময় পুলিশ সোর্স পরিচয় দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে গণমানুষকে জিম্মিকারী এই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় তাকে একবার গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।পরবর্তীতে ছাড়া পেয়ে সে আবার স্বরুপে ফিরে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে থাকে। এরপর পৃথক মামলায় আবারও তাকে খুঁজতে বাসায় আসে পুলিশ। তবে এবার বিল্লালকে না পেয়ে ফিরে যায় তার। পরদিন সেই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন চুরির অপবাদ দিয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে অভিযোগ করেন বিল্লালের সহযোগী ও মাদক সিন্ডিকেটের সদস্য স্ত্রী জরিনা বেগম। 

সর্বশেষ সেই চেইন খুঁজে পেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করেন জরিনা বেগম। পুলিশের দাবি হয়রানি ও সম্মানহানি করতেই এমন অপবাদ তুলেছিল জরিনা। ১৩ মার্চ,২০২৩ইং সোমবার  অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জরিনা বেগম। এর আগে ৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল জরিনা বেগম, সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয় গতকাল রবিবার।

জরিনা বেগমের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৮ মার্চ রাতে আমিনবাজারের দিপ্তিরটেক এলাকার জাহিদের মালিকানাধীন বাড়ির নিচ তালায় জরিনার ভাড়া বাসায় তল্লাশি করে পুলিশ। এসআই ফারুক এবং এএসআই মাহতাব আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে জরিনা বেগমের ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। জরিনা বেগমকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে ঘরে আধা ঘন্টা তল্লাশী চালিয়ে অজ্ঞাত কিছু খুঁজে চলে যায় তারা। তারপর থেকেই নিজের আলমারিতে থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন খুঁজে না পেয়ে সেই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে গোয়েন্দা ডায়রি ও ক্রাইম ডায়রি’র প্রতিনিধিসহ বেশ কিছু গণমাধ্যম কর্মী। তদন্তে এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ  উঠে আসে সন্ত্রাসী বিল্লাল ও তার সহযোগী স্ত্রীর বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েমকারী এই সন্ত্রাসী মাদক, হয়রানী, চাঁদাদাবী, দখল ও ভীতি প্রদর্শন করে টাকা আদায়সহ হীন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়।

এএসআই মাহতাব বলেন, কয়েক সদস্যসহ আসামির বাসার সামনে গিয়েছিলাম। আমি ঘরেও ঢুকিনি, শুধু উঁকি দিয়ে দেখেছি। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। এ ক্ষোভ থেকেই হয়ত জরিনা বেগম এমন অভিযোগ তুলেছে আমাদের হয়রানি করার জন্য।

এসআই ফারুক বলেন, তার বাসায় ঢুকেছি কিন্তু কোন জিনিস পত্রে আমরা হাত দেইনি। এমনকি কোনো কথাও বলিনি। শুধুমাত্র আমাদের হয়রানি করার জন্য এমন অভিযোগ দিয়েছে জরিনা বেগম।

এ ব্যাপারে জরিনা বেগম বলেন, আমার আর কোনো অভিযোগ নেই। আমি  অভিযোগ প্রত্যাহার করেছি। কারণ আমি আমার চেইন খুঁজে পেয়েছি। পুলিশের পক্ষ থেকে কোন চাপ ছিল না কিনা? জবাবে তিনি আরো বলেন, না এ ধরনের কোন চাপ ছিল না। আমারই ভুল হয়েছে।

তাছাড়া জড়িনা বেগমের অভিযোগের ভিতরই তার অভিযোগ যে সঠিক নয় তা স্পষ্ট । বাদীনীর ভাষ্যমতে তার আলমারী খুলে তল্লাশী করা হয়েছে। সুতরাং আলমারী খুলতে হলে চাবী দিয়েছিল সে। না হলে আলমারী ভাঙ্গার কথা সে উল্লেখ করতো। সুতরাং স্বেচ্ছায় খোলার সুযোগ সে দিয়েছিল । যদিও স্থানীয়দের বরাতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানা যায় এ ধরনের কোন ঘটনায় ঘটেনি। সামান্য কয়েকমিনিটের জন্য পুলিশ এসে শুধু দেখেছে যে আসামী আছে  কিনা? আর পুলিশও বলেছে ্‌এমন কোন ঘটনাই সেখানে ঘটেনি বরং কতিপয় বুদ্ধিদাতার পরামর্শে সন্ত্রাসী বিল্লালের স্ত্রী এই কাজ করেছে। আলমারী খুলে অনুসন্ধান করেছে বললেও সেখানে আলমারীর কোথায় কি আছে তা পুলিশের জানার কথা নয়।তাই তল্লাশী করলেও সেখানে সবকিছু তছনছ কিংবা কাপড়চোপড় ফেলে এলোমেলো করা এমন কোন কথা সে বলেনি কারন সেখানে এমন কোন ঘটনা ঘটেইনি। তাছাড়া কোন ড্রয়ার হতে গহনা সরিয়েছে এমন কোন কথা সে বলেনি। পরবর্তীতে সে কাপড়ের মধ্যে হতে খুজে পায় মর্মে সে অভিযোগ প্রত্যাহার করে। এতে বোঝা যায় তার এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ও শিখানো। 

স্থানীয় লোকজন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, এই মিথ্যা অভিযোগ ও পরবর্তীতে প্রত্যাহার পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দিবে। ফলে পরবর্তীতে যে কোন অভিযানে পুলিশ সদস্যরা মনোবল হারিয়ে ফেলবে। তাই খোঁজাখুঁজি না করেই কেন সে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশের মতো একটি বিশাল বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন করলো এবং মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশ সদস্যর মানহানি করলো বিষয়টি খতিয়ে দেখে এসব অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত । না হলে পরবর্তীতে অন্য সন্ত্রাসীরাও একই ধরনের কৌশল ব্যবহার করতে পারে।

গোয়েন্দা ডায়রি  ও ক্রাইম ডায়রি’র প্রতিনিধিরা খোঁজ নিয়ে জানান , এসআই ফারুকসহ অভিযানিক দলের সদস্যরা পুলিশ বাহিনীতে দায়িত্বশীল ও সৎ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। দায়িত্বরত এলাকার ভালমানুষেরা তাদের প্রতি কোন খারাপ ধারনা পোষন করেন না এবং  এলাকার বিভিন্ন বিটে খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কো্ন অভিযোগও পাওয়া যায়নি।

  এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, শুনেছি অভিযুক্ত নারী তার গহনা ঘরেই পেয়েছেন। এভাবে না বুঝে পুলিশকে হয়রানি বা হেয়পতিপন্ন করা কারো কাছেই কাম্য নয়। এভাবে মিথ্যা রটনা উঠানো খুবই দু:খজনক।

ক্রাইম ডায়রি//ক্রাইম