আশুলিয়ার চাঞ্চল্যকর দুরুল হত্যার আসামী খাতিজা গ্রেফতার

ঘুমের ঔষধের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ভিকটিম অচেতন হয়ে পড়লে ধৃত আসামী ও তার প্রেমিক ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং ভিকটিমের মুখমণ্ডল ও মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে।

আশুলিয়ার চাঞ্চল্যকর দুরুল হত্যার আসামী খাতিজা  গ্রেফতার
ছবি-ক্রাইম ডায়রি

মেহেদী হাসান রকি, আশুলিয়া ঢাকা:

আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকার ক্লুলেস দুরুল হুদা হত্যাকান্ডের আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।  র‌্যাব-৪ জানিয়েছে, তাদের একটি আভিযানিক দল নভেম্বর ২১, ২০২৩ খ্রি. তারিখ রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন ধামসোনা ইউনিয়নের পলাশবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস দুরুল হুদা (৪২) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যাকান্ডের মূলহোতা খাতিজা খাতুনকে (২৮) গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। 

 জানা গেছে, গত ২০ নভেম্বর ২০২৩ খ্রি. তারিখ ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার পলাশবাড়ি বাতানটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা হতে দুরুল হুদা (৪২) নামের জনৈক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 
ভিকটিমের স্ত্রী খাতিজা (২৮) একই দিন দুপুর ০২.৩০ ঘটিকার সময় পোশাক কারখানা থেকে বাসায় ফিরে নিজের স্বামীর মরদেহ দেখতে পেলে তার আর্তনাদে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন এবং ঘরের ভিতর প্রবেশ করে দেখতে পায় যে, ভিকটিম দুরুল হুদার হাত-পা বাঁধা এবং মুখে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো নিথর দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে।  বিষয়টি থানা পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবকে অবহিত করলে র‌্যাব-৪ এর একটি অভিযানিক দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উক্ত হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে ছায়াতদন্ত শুরু করে। 

গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম দুরুল হুদা(৪২) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার উত্তর ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্ত্রীসহ ঢাকা জেলার আশুলিয়া পলাশবাড়ির বাতানটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

তিনি একটি  কীটনাশক কারখানার প্যাকিংম্যান হিসেবে কাজ করতেন এবং তার স্ত্রী আসামি খাতিজা খাতুন(২৮) স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। বিগত ২০১১ খ্রি. তারা পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর হতেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিলো। প্রায় সময় তাদের পরিবারে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও আর্থিক অসঙ্গতি নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হতো। এক পর্যায়ে ধৃত আসামী খাতিজা খাতুন(২৮) তার পরকীয়া প্রেমিকের সাথে স্বামী ভিকটিম দুরুল হুদাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার কয়েকদিন আগে ধৃত আসামী তাদের সন্তানদের গ্রামের বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। অতঃপর গত ১৯ নভেম্বর ২০২৩ খ্রি. রাতের খাবার শেষে ভিকটিম দুরুল হুদাকে তার নিয়মিত ঔষধের পাশাপাশি সুকৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। ঘুমের ঔষধের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ভিকটিম অচেতন হয়ে পড়লে ধৃত আসামী ও তার প্রেমিক ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং ভিকটিমের মুখমণ্ডল ও মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মেঝেতে ফেলে রাখে।

খুনের বিষয়ে  কেউ যেন সন্দেহ না করে সেজন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২০ নভেম্বর ২০২৩ সকালে ধৃত আসামী খাতিজা খাতুন(২৮) প্রতিদিনের ন্যায় তার কর্মস্থলে উদ্দ্যেশে বের হয়ে যায় এবং অফিস হতে অসুস্থতার কথা বলে দুপুরে ঘরে ফিরে আসে এবং ঘরের মেঝেতে তার স্বামী দুরুল হুদার মরদেহ পরে আছে বলে ডাক চিৎকার শুরু করে।    

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। 

ক্রাইম ডায়রি/ ক্রাইম