ছাত্রদল নেতা সাম্যকে যেভাবে হত্যা করা হয় বললেন সাম্যের ক্লাসমেট

তারাও আত্মরক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই শাহরিয়ারকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

ছাত্রদল নেতা সাম্যকে যেভাবে হত্যা করা হয় বললেন সাম্যের ক্লাসমেট
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

সেই মোটরসাইকেলের তিনজন আরোহী ও তাদের সঙ্গে থাকা আরও কয়েকটি মোটরসাইকেলের আরোহীসহ মোট ১০-১২ জনের   একটি দলের সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি হয়। পরবর্তীতে তা  হাতাহাতিতে রুপ নেয় এবং একপর্যায়ে   ঐ ব্যক্তিরা তাদের মারতে শুরু করেন। তারাও আত্মরক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই শাহরিয়ারকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

মো: আলাউদ্দিন সোহেল:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী  উদ্যান আসলে এক মহা আতংকের নাম। এই উদ্যানের ভার্সিটি মুখী গেট এর পাশ দিয়ে যারা অতিক্রম করে তারা জানেন এখান দিয়ে যাতায়াতের সময় গাজার গন্ধে চলা দায় । তাছাড়া প্রকাশ্যে গন্জিকা সেবনকারীরা এখান দিয়ে অবাধ যাতায়াত এর পাশাপাশি মাতাল অবস্থায় নানা ধরনের অঙ্গিভঙ্গিতে পথ চলেন। সেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে একটি মোটরসাইকেলে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) ও তার দুই বন্ধু।

এই সময় একই পথে অন্য আরেকটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের হালকা ধাক্কা লাগে। সেই মোটরসাইকেলের তিনজন আরোহী ও তাদের সঙ্গে থাকা আরও কয়েকটি মোটরসাইকেলের আরোহীসহ মোট ১০-১২ জনের   একটি দলের সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি হয়। পরবর্তীতে তা  হাতাহাতিতে রুপ নেয় এবং একপর্যায়ে   ঐ ব্যক্তিরা তাদের মারতে শুরু করেন। তারাও আত্মরক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই শাহরিয়ারকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

শাহরিয়ারের সঙ্গে থাকা বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ঘটনার এমন বর্ণনা দেন। বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন রাফি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। নিহত শাহরিয়ারও একই শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত ছিলেন। শাহরিয়ার সাম্য স্যার এ এফ রহমান হলের শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।

আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমরা তিনজন (সাম্য, রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদ) মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলাম। এ সময় আমাদের মোটরসাইকেলের সঙ্গে আরেকটি মোটরসাইকেলের ছোটখাটো একটা ক্ল্যাশ (সংঘর্ষ) হয়। ওই মোটরসাইকেলের চালক ও যাত্রীর সঙ্গে আরও তিন-চারটার মতো মোটরসাইকেলে মোট ১০-১২ জন ছিলেন। মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগার পর তাদের সঙ্গে আমাদের কথা-কাটাকাটি হয়।’

কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের তিনজনের ওপর ওই ব্যক্তিরা আক্রমণ করেন বলে জানান আশরাফুল আলম। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু এর মধ্যে সাম্যকে ছুরিকাঘাত করা হয়। সাম্যর শরীর থেকে প্রচুর রক্ত ঝরে। বলা যায়, ঘটনাস্থলেই সাম্য মারা যায়। অর্থাৎ স্পট ডেথ।’

আশরাফুল বলেন, ৬-৭ বছর তারা একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। তাদের সম্পর্কটা শুধু বন্ধু নয়, ভাইয়ের মতো ছিল।

শাহরিয়ার আলম হত্যার ঘটনায় গতকাল রাতে ও আজ দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ক্যাম্পাসে শাহরিয়ারের জানাজা হয়েছে। এ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে ঘটনা তদন্তে বুধবার সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রদল।

দৈনিক ক্রাইম ডায়রি//ক্রাইম