জাতির উদ্দেশে ভাষণঃ ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয়-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আগামীর স্বপ্ন দেখিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। এজন্য পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই সাধারণ মানুষের কল্যাণে জন্য কাজ করে।

জাতির উদ্দেশে ভাষণঃ ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয়-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

জনগণের ভোটে অধিকার নিশ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত রয়েছে। সে কারণেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।

শাহাদাত হোসেন রিটনঃ
 দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বদনাম করতে লবিষ্ট নিয়োগ করেছে বিএনপি এমন অভিযোগসহ   ক্ষমতা দখল করে জিয়া দেশপ্রেমিক সৈনিক-অফিসার হত্যা করেছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী জাতীর  উদ্দেশ্যে দেয়া তার ভাষনে । এ কথা বলেন। তিনি বলেন,  ব্যাংকে টাকার কোনো ঘাটতি নেই, উপার্জিত টাকা ঘরে রেখে বিপদ ডেকে আনবেন না। 

দেশের অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গোটা বিশ্ব এক অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। প্রথমে করোনাভাইরাস মহামারির কবলে পড়ে বিশ^। এতে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অনেক দেশের অর্থনীতিতে ধস নামে। আমাদের অর্থনীতিও ক্ষতির মুখে পড়ে। করোনার মহামারির সেই ক্ষতি কাটিয়ে যখন দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে, তখনই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের যুদ্ধ নয়; সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক যুদ্ধ। অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রভাব কোনো একক দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-পরবর্তী অর্থনৈতিক অবরোধ-পাল্টা অবরোধ বিশ^ অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। কিন্তু আমরা সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে মানুষের প্রাণহানি কমাতে পেরেছি, অর্থনীতিকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখনও একাত্তরের ‘শকুনি’ এবং পঁচাত্তরের হায়নাদের বংশধররা সক্রিয়। সুযোগ পেলেই তারা দন্ত-নখ দিয়ে দেশকে ক্ষতবিক্ষত করে। সাধারণ মানুষ ভালো আছে দেখলে এদের গায়ে জ্বালা ধরে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠে। মহান বিজয় দিবস ২০২২ উপলক্ষে গতকাল জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। তার এ ভাষণ বিটিভিসহ দেশের বেসরকারি সব টেলিভিশনে সরাসরি প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, আসুন, সম্মিলিতভাবে শপথ করি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাই। সুখী-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নপূরণ করি।

বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, দেশ যখন সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন স্বাধীনতা-উন্নয়ন বিরোধী গোষ্ঠী অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান এদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে। পুনর্বাসিত হয়ে এরা আবার হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করে। আরেকটি দল যার জন্ম ও লালন-পালন সেনানিবাসে, সেই দলটির হাতে শুধুই রক্তের দাগ। এর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জাতির পিতার হত্যা-ষড়যন্ত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। উর্দি গায়ে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সশস্ত্র বাহিনীর হাজার হাজার দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং অফিসারকে হত্যা করেছে।

এদের প্রত্যক্ষ মদদে হরকাতুল জিহাদ, বাংলাভাই, জমায়িতুল মোজাহিদিন ইত্যাদি জঙ্গি সংগঠন গড়ে উঠে। ২০০৪ সালের ২১-এ আগস্ট শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমি বেঁচে গেলেও সেদিন ২৪ জন নেতাকর্মী মারা যায়। ২০১৩ সালে সারা দেশে অগ্নি এবং পেট্রল বোমা সন্ত্রাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে যা ২০১৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বিএনপির শীর্ষ নেত্রী এতিমখানার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দÐপ্রাপ্ত। আরেক শীর্ষ পলাতক নেতা অর্থপাচার, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। সাধারণ জনগণ কেন তাদের ভোট দিতে যাবেন? দেশের মানুষের ওপর আস্থা হারিয়ে বিএনপি-জামায়াত এখন বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করার জন্য কিছু ভাড়াটিয়া লোক নিয়োগ করেছে। পাচারকৃত অর্থ ব্যবহার করছে আর দেশের বদনাম করে বেড়াচ্ছে। বিএনপির দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও দুঃশাসনের কারণে দেশে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করে। ৩০০ আসনের মধ্যে তারা মাত্র ৩০টি আসন পায়। একইভাবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোটকে ভোট দেয়নি। জনগণের দ্বারা প্রত্যাখাত হয়ে তারা এখন অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

জনগণের ভোটে অধিকার নিশ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত রয়েছে। সে কারণেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকলে কোনোদিনই বাংলাদেশ এত উন্নতি করতে পারত না। এখন জনগণকেই বেছে নিতে হবে তারা কী চান-উন্নত মর্যাদাশীল জীবনের ধারাবাহিকতা না বিএনপি-জামায়াত জোটের দুর্বৃত্তায়নের দুর্বিষহ জীবন?

দেশের প্রায় ৩৪ কোটি টিকা বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, টিকা পাওয়ার উপযোগী প্রায় ৩৪ কোটি টিকা বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৪ কোটি ৯০ লাখ মানুষ প্রথম ডোজ, ১২ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার দ্বিতীয় ডোজ এবং ৬ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। করোনার সময় শিল্প-কারখানায় উৎপাদন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য ২৮টি প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতনভাতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৫০ লাখ প্রান্তিক মানুষকে দুই দফায় আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছিলেন যানবাহনের শ্রমিক, দোকান কর্মচারী, নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক, ইমাম, মুয়াজ্জিন, সংস্কৃতি কর্মীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। বস্তিবাসী, দরিদ্র ও স্বল্পআয়ের মানুষ যারা অন্যের কাছে হাত পাততে পারেন না, হটলাইনে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘরে চাল-ডালসহ খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির সময় প্রায় ৭ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নানাভাবে উপকৃত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক অবরোধ এবং পাল্টা অবরোধের কারণে আমদানিনির্ভর দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, চিনি, ভুট্টা, ডাল, রাসায়নিক সারসহ প্রায় সকল ভোগ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পরিবহন খরচ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার নিজস্ব চাহিদা মেটানোর জন্য কোনো কোনো দেশ বিনা নোটিসে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিচ্ছে। পৃথিবীর যেখানেই আমাদের চাহিদার পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেখান থেকেই সংগ্রহ করছি জোগান দিচ্ছি। আমরা ১ কোটি পরিবারকে টিসিবির ফেয়ার প্রাইজ কার্ড দিয়েছি। এই কার্ডের মাধ্যমে পরিবারগুলো ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও সাশ্রয়ীমূল্যে ভোজ্য তেল, ডাল ও চিনি সংগ্রহ করতে পারছেন। ৫০ লাখ পরিবার ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারছেন। অসহায় মানুষদের ভিজিডি ও ভিজিএফ-এর মাধ্যমে ৩০ কেজি করে চাল প্রতিমাসে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে।

ব্যাংকের রিজার্ভের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অনেকেই মনগড়া মন্তব্য করছেন। তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকলেই চলে। বর্তমানে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ আছে। করোনার সময় ভারী যন্ত্রপাতি আমদানি, বিদেশ ভ্রমণ এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি অনেকটা বন্ধ ছিল। সে সময় আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অলস অবস্থায় না রেখে সেখান থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ দিয়ে একটা বিশেষ তহবিল গঠন করেছি। সেই তহবিলের অর্থ দ্বারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এই ঋণ দেয়া হচ্ছে ২ শতাংশ হার সুদে। ঘরের টাকা সুদসহ ঘরেই ফেরত আসছে। এ অর্থ বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হলে ৪/৫ শতাংশ হারে সুদসহ ফেরত দিতে হতো। আর তা পরিশোধ করতে হতো রিজার্ভ থেকেই। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমরা বেশি দামে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, ভাল, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয় করে স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছি। অথচ ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। গুজবে কান দিবেন না। বাংকে টাকার কোনো ঘাটতি নেই। উপার্জিত টাকা ঘরে রেখে বিপদ ডেকে আনবেন না। আমাদের বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং আমদানি-রফতানি পরিস্থিতি সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।

দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৪ বছরে দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হতে পেরেছে। দেশ খাদ্যশস্য-উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে ২ হাজার ৮২৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫ শতাংশ হয়েছে। মাতৃমৃত্যু এবং শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনায় আছে বলেই এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছি। এই সেতু দক্ষিণাঞ্চলের ১৯ জেলাকে রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্য অংশের সঙ্গে সড়কপথে সরাসরি যুক্ত করেছে। অক্টোবর মাসে উদ্বোধন করা হয়েছে পায়রা সেতু। গত নভেম্বরে দেশের ২৫টি জেলায় ১০০টি সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। দেশের অনেকগুলো মহাসড়ক ৪ বা তদুর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে। অন্যগুলোর কাজ চলছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, ঢাকায় মেট্রোরেল এবং বিমানবন্দর-কুতুবখালী এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ খুব শিগগিরই যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। আমরা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি এবং স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি।

আগামীর স্বপ্ন দেখিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। এজন্য পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই সাধারণ মানুষের কল্যাণে জন্য কাজ করে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকারের দায়িত্বে এসেই আমরা আশ্রায়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভ‚মিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর প্রদান এবং তাদের জীবন-জীবিকার জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দেয়া শুরু করি। মুজিববর্ষে আমরা ঘোষণা করেছি কোােন মানুষই আশ্রয়হীন থাকবে না। এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২ কোটি ৫৩ লাখ ছাত্রছাত্রীকে বিভিন্ন বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিচ্ছি। মাধ্যমিক পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে প্রতিবছর বিনামূল্যে বই দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শহর থেকে গ্রাম-প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন এবং আত্মত্যাগ করেছেন তাদের স্মরণ করছি। বিজয় দিবসে আমি মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাদানকারী বিভিন্ন দেশ ও সেসব দেশের জনগণ, ব্যক্তি এবং সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বীর সদস্য মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। তাদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ভারতের তৎকালীন সরকার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সর্বোপরি সাধারণ জনগণকে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন জানিয়েছিলেন, শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং নানাভাবে সহযোগিতা করেছিলেন।

ক্রাইম ডায়রি/জাতীয়