পাল্টে যাচ্ছে বান্দরবান পর্যটন শহরের চেহারা
বান্দারবান প্রতিনিধিঃ
করোনাভাইরাসের কারণে পুরোদেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। এরই মধ্যে মানুষ যখন গৃহবন্দি তখন প্রকৃতি উন্মুক্ত হতে শুরু করেছে। এ সুযোগে কমেছে পরিবেশ দূষণের মাত্রা। নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছে প্রকৃতি। এতে পাল্টে গেছে বান্দরবান পর্যটন শহরের চেহারা। যেন অচেনা রূপ ধারণ করেছে জেলা শহরের ব্যস্ততম পর্যটন স্পটগুলো।
পর্যটন স্পটগুলো একেবারেই ফাঁকা। চিরচেনা দৃশ্যের কিছুই নেই এখন। শহর হচ্ছে দূষণ মুক্ত। একদম থেমে গেছে প্রাণের কোলাহল। বান্দরবানের এমন দৃশ্য সত্যিই বিরল। পাহাড়ের মাঝে ছোট ছোট লেক, ঝর্ণা, আর নদীগুলোর পানি হচ্ছে স্বচ্ছ।
পরিবেশবিদ ও সচেতন নাগরী এবং শিক্ষাবিদদের মতে, মানুষের আগ্রাসনের কারণে পাহাড়ের পশু পাখিগুলোও বাঁচার পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে। আমাদের আচরণে পশু পাখিগুলো এবং নদ নদীগুলো বিরক্ত। পাহাড়ে এত বেশি মানুষের ঢল, এমন কোলাহলের কারণে পাহাড়ের বন্যপ্রাণীগুলো অনিরাপদ বোধ করে। যখনই কোলাহল থেমে গেলো পাহাড়ে যেন আগের রূপ ফিরে পেতে শুরু করছে।
সাংবাদিক ও বান্দরবান বেতারের উপস্থাপক এন এ জাকির বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে সবাই এখন বাসাবাড়িতে অবস্থান করছে। করোনাভাইরাস ঝুঁকি এড়াতে পর্যটক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন প্রশাসন। এই সময়ে বান্দরবানে পর্যটকের আনাগোনা এবং স্বাভাবিক ভাবে পরিবেশের উপর একটা চাপ থাকে। তবে এখন পর্যটকের চাপ না থাকায় বান্দরবান ফিরে আসছে তার আগের রূপে। লেকের পানিগুলো স্বচ্ছ হয়ে গেছে।
শিক্ষাবিদ জোবেদা বেগম বলেন,পাহাড়ে মানুষের অবাধ বিচরণের কারণে সেখানকার প্রকৃতি, জৈববৈচিত্র হুমকির মুখে থাকলেও আপাতত আর সেই দৃশ্য নেই। আশার কথা হলো অন্তত এ দুর্যোগময় মুহূর্তে প্রকৃতি তার নিজের পরিবেশ ফিরে পেয়েছে। তাই এ পরিবেশকে ধরে রাখতে হবে। তার মতে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যটক আগমন এবং পর্যটন শিল্পকে পরিবেশ বান্ধব গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।
বান্দরবান প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম বাচ্চু বলেন,করোনাভাইরাসের কারণে বান্দরবানের মানুষ হোম কোয়ারেন্টিনে এবং পর্যটক না আসাতে বাহিরে সমাগম কম হচ্ছে, তার কারণে প্রকৃতি তার আপন রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে। প্রকৃতিতে এখন পশু পাখির কোলাহল শুনা যাচ্ছে।
এই সাংবাদিকের মতে, পাহাড়ের নদ নদী লেক আর ঝিরিঝর্ণাগুলো তার প্রাণ খুঁজে পেয়েছে। নদীগুলোর পানি এখন অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। গাছগুলো নতুন নতুন পাতা গজিয়েছে।
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট এ কে এম ছামিউল আলম কুরসি বলেন, বান্দরবানের পর্যটন স্পট যেগুলো রয়েছে এগুলোতে জন সমাগম না থাকায় এটি পরিবেশের জন্য পজিটিভ ছিল। তবে বান্দরবানে আসা পর্যটক যদি একটু সচেতন হন, বিধি নিষেধ যদি মেনে চলে তাহলে পরিবেশ দূষণ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম আগে থেকেই নেয়া আছে। সেগুলো বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


crimediarybd1








