ভুয়াদের দিন শেষ; নতুন জ্যাকেটে ডিবিঃ গ্রেফতার ৬

গোয়েন্দা প্রধান হারুন-অর-রশিদের সুদক্ষ নেতৃত্বে রাজধানীতে ভূয়া ডিবি কিংবা গুরুতর অপরাধ কমে আসতে শুরু করেছে দ্রুততার সাথে। তার এই কার্যক্রম সারাদেশেই অনুকরনীয় হবে।

ভুয়াদের দিন শেষ; নতুন জ্যাকেটে ডিবিঃ গ্রেফতার ৬
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

তারা সাধারণ গ্রাহকের ছদ্মবেশে ব্যাংকে প্রবেশ করে অন্য গ্রাহকদের কৌশলে অনুসরণ করতে থাকে। অধিক টাকা লেনদেনকারী ও সহজ-সরল গ্রাহকদের টার্গেট করে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বাইরে রাস্তায় অপেক্ষায় থাকা ডাকাত দলের সদস্যদের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হতো।

অনলাইন ডেস্কঃ

ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন-অর-রশিদ দায়িত্ব নেয়ার পর যেন ডিবিতে নতুনত্ব ও অধিক সফলতা আসতে শুরু করেছে। অপরাধীরা আতংকে দিন পার করছে। মেধাবী কর্মকর্ত হারুন-অর-রশিদ। তার নেতৃত্বে এর আগেও  অসংখ্য দূর্ধর্ষ অপরাধী গ্রেফতার ও সফলতার নজীর রয়েছে। তার অসাধারন বুদ্ধির কাছে দূর্বল  অপরাধীরা। সম্প্রতি তিনি ভুয়া ডিবি পুলিশ ধরতে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। যা কখনও অপরাধীরা কল্পনাও করতে পারবেনা।

প্রকৃত ডিবির সদস্য কিনা তা বোঝা যাবে এখন সহজেই। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) নাম ভাঙিয়ে চলা ব্যক্তিদের ধরতে জ্যাকেটে বিশেষ কিউআর কোড যুক্ত করা হয়েছে। এই কিউআর কোড স্ক্যান করলেই ধরা পড়বে তিনি ডিবির প্রকৃত সদস্য কি না।

নতুন এই পোশাক পরে ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়েছে ডিবি। অভিযানে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিবি জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর মতিঝিল ১১/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড এলাকায় ডিবির নতুন পোশাক পরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ডিবি পরিচয়ে ডাকাতিতে জড়িত দলের ছয়জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন— ফরিদ উদ্দিন (৫০), মো: পারভেজ (৩৫), সাইফুল ই নাদিম (৩০), শফিকুল ইসলাম ওরফে বাবুল (৫০), মো: জসিম (৩৪) ও মো: নাছির (৩৮)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডিবি পুলিশ লেখা তিনটি জ্যাকেট, একটি হাতকড়া, একটি লাঠি (স্টেইনলেস স্টিলের), দুটি হোলস্টার, তিনটি পিস্তল সদৃশ খেলনা পিস্তল, একটি ওয়াকিটকি (খেলনা), ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন নামের অ্যাকাউন্টের পাঁচটি চেক বই, একটি নোয়াহ মাইক্রোবাস ও একটি ‘পুলিশ’ লেখা স্টিকার জব্দ করা হয়।

গত সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন-অর-রশিদ। সংবাদ সম্মেলনে ডিবি পুলিশের নতুন পোশাক পরে উপস্থিত হন গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন-অর-রশিদ বলেন, সম্প্রতি ব্যাংকে যারা বড় বড় লেনদেন করছেন তাদের টার্গেট করে ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করে নগদ টাকা লুণ্ঠন করছে ভুয়া ডিবি পরিচয়ের ডাকাত দল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা ডিবিকে জানায়, তারা সাধারণ গ্রাহকের ছদ্মবেশে ব্যাংকে প্রবেশ করে অন্য গ্রাহকদের কৌশলে অনুসরণ করতে থাকে। অধিক টাকা লেনদেনকারী ও সহজ-সরল গ্রাহকদের টার্গেট করে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বাইরে রাস্তায় অপেক্ষায় থাকা ডাকাত দলের সদস্যদের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হতো।

টার্গেট করা ব্যক্তিকে ব্যাংক থেকে বের হওয়া পর্যন্ত অনুসরণ করা হতো। একপর্যারে টার্গেট করা ব্যক্তি বাইরে আসামাত্র ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মাইক্রোবাসে তুলে সুবিধাজনক স্থানে নেয়া হতো। ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে টাকা ও অন্য মূল্যবান সামগ্রী লুণ্ঠন করে নিত এবং রাস্তায় কোনো সুবিধাজনক স্থানে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যেত। গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভুয়া ডিবির পোশাক সম্পর্কে হারুন বলেন, ডিবি পুলিশের আগের পোশাক খুব সহজেই নকল করা যেত। যে কোথাও তৈরি করাও যেত। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ভুয়া ডিবির সদস্যরা ডাকাতিতে খেলনা পিস্তল ও হাতকড়া ব্যবহার করছে। এতে করে আসল ডিবি পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

গোয়েন্দা প্রধান হারুন-অর-রশিদের সুদক্ষ নেতৃত্বে রাজধানীতে ভূয়া ডিবি কিংবা গুরুতর অপরাধ কমে আসতে শুরু করেছে দ্রুততার সাথে। তার এই কার্যক্রম সারাদেশেই অনুকরনীয় হবে এবং দেশ হবে অপরাধ মুক্ত এমনটাই প্রত্যাশা দেশবাসীর।

ক্রাইম ডায়রি// স্পেশাল