জামায়াত আমিরের ক্ষমা বক্তব্যে যে গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে
আল্লামা মাসুদ সাঈদী সম্প্রতি জামায়াত ইসলামীর আমির ডাঃ শফিকুর রহমান এর দেয়া বক্তব্যের চমৎকার ব্যাখ্যা করেছেন।
ক্রাইম ডায়রি ডেস্কঃ
ক্ষমা একটি মহৎ গুন। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আদর্শ। আল্লাহর তায়ালার কাছে বান্দা শতকোটি পাপের পরও ক্ষমা চায়। মহান আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দেন। ইসলামের বিধান হলো গাড্ডা কাফেরও যদি তওবা করে ফিরে আসে তবে সে ক্ষমা প্রাপ্ত হয় এবং মুহাজির হিসেবে আনসারদের সহযোগিতা প্রাপ্ত হয়।
সম্পতি ক্ষমা নিয়ে জামায়াত আমিরের একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে। তার এ বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত আমিরের ক্ষমা নিয়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ছেলে মাসুদ সাঈদী একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জামায়াত আমিরের ক্ষমা নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘ক্ষমা’ শব্দ দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির এক অভাবনীয় ঘটনা ঘটিয়ে দিলেন! আমরা তা সংক্ষেপে বিশ্লেষণ করছি।
১. জামায়াতে ইসলামীর পরম উদারতার স্নিগ্ধতায় উন্নত চিন্তার মানুষদের মন জুড়িয়ে দিলেন।
২. আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের মাত্রা উন্মোচিত করে দিলেন।
৩. নিজ দলের নেতাকর্মীদের প্রকৃত মান যাচাই করে নিলেন।
৪. বিএনপি এবং অপরাপর দলের সমর্থকদের ভবিষ্যৎ রাজনীতির হালহকিকত কী হতে পারে, তা দেখে নিলেন এবং প্রতিশোধের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির পথ রুদ্ধ করে দিলেন।
৫. ভিকটিমদের মামলা করার জন্য সংকেত দিলেন।
৬. আন্তর্জাতিক বিশ্বকে নিরপেক্ষভাবে ন্যায় বিচার করা হবে মর্মে সংকেত দিলেন।
৭. সাধারণত জনগণকে সংকেত দিলেন, জামায়াতের উপরে আস্থা রাখুন। তারা সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি করবেও না। এটি ছিল ১৬ বছরের আওয়ামী অপপ্রচারের জবাব।
৮. বর্তমান সরকারকে সংকেত দিলেন, জামায়াত আপনাদের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি হওয়ার মতো কোনো কাজ করবে না। আপনারা জাতির প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করে যান।
৯. আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সংকেত দিলেন, বাঁচার জন্য প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করে নতুন করে বিপদ ডেকে এনো না। তোমার অপরাধী নেতাদের বিচার হবে, তাদের জেল হবে এবং ফাঁসিও হবে। তোমরা বরং নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও কাজকর্মে মনোযোগ দাও। এ সংকেতটি এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সংগঠিত হওয়ার প্রচেষ্টাকে নিশ্চিতভাবে দুর্বল করে দিবে।
১০. জামায়াত কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিলেন, জামায়াত আসলেই একটি ইসলামী কাফেলা। এখানে জাহিলি মানসিকতা চলে না। জাহেলি যুগের প্রতিশোধ জেনারেশন টু জেনারেশন চলতে থাকত!
১১. বিপ্লবোত্তর সময়েও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, যা হবে আইন অনুযায়ী হবে। যা করার রাষ্ট্র করবে। তোমরা কেউ আইন হাতে তুলে নিও না। তোমরা মামলা করো, আমরা মামলায় সহযোগিতা করব।
কী অসাধারণ রাজনৈতিক বয়ান। কী গভীর চিন্তা! কী সূক্ষ্ম ম্যাসেজ! এগুলো বুঝতে হলেও বুঝ লাগে। জামায়াত নেতারা যেটি আজকে বুঝে, অন্যরা সেটি ৫০ বছর পরে বুঝে!!!
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগকে ক্ষমার ঘোষণা দেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তা আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি। ভিকটিম জামায়াতের সহযোগিতা চাইলে তাদেরও সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান জামায়াতে ইসলামীর আমির ডাঃ শফিকুর রহমান।
ক্রাইম ডায়রি// রাজনীতি