পদোন্নতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান পুলিশ ইন্সপেক্টররা

Police inspectors seek PM's intervention on promotion

পদোন্নতির   বিষয়ে  প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান পুলিশ ইন্সপেক্টররা
প্রতীকী ছবি

দিনরাত এক করে আইম শৃঙ্খলা অটুট রাখতে বিরতিহীন সেবা দেন তারা। নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে তাই এবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা

অনলাইন ডেস্কঃ

অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় যাদের অবদান অনস্বীকার্য তাদেরই একদল হলেন পুলিশ ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তারা। দিনরাত এক করে আইম শৃঙ্খলা অটুট রাখতে বিরতিহীন সেবা দেন তারা। নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে তাই এবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

পুলিশ ইন্সপেক্টরদের পদোন্নতির বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পুলিশের ইন্সপেক্টররা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই আবেদন ভাইরাল হয়েছে। একজন পুলিশ কমকর্তার ফেসবুক ওয়াল হতে সরাসরি তুলে ধরা হলো।

পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা জানান, আমরা নবম গ্রেডের কর্মকর্তা। সরকারি অন্য চাকরিজীবীরা এই গ্রেড থেকে পদোন্নতি পেলে তাদের গ্রেড পরিবর্তন হয়ে ষষ্ঠ হয়, অথচ আমাদের এএসপি পদে পদোন্নতি হলে গ্রেডের কোনো পরিবর্তন হয় না। কারণ, এএসপিরাও নবম গ্রেডের কর্মকর্তা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনো কর্মকর্তা একই পদে ১০ বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় কর্মরত থাকলে তার গ্রেড পরিবর্তন হয়। কিন্তু পুলিশের ক্ষেত্রে সাধারণত তা হয় না। গ্রেড পরির্তন করতে হলে আবেদনের পাশাপাশি ব্যাপক তদবির করতে হয়। তারা জানান, পরিদর্শক থেকে এএসপি হিসাবে পদোন্নতি পাওয়া দুরূহ ব্যাপার। তাদের জন্য ৩৩ ভাগ কোটা থাকলেও তা কখনো পূর্ণ করা হয় না। পুলিশ পরিদর্শকদের অভিযোগ, একেকটি সার্কুলারে সরাসরি এএসপি পদে ২০০-২৫০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু পরিদর্শক থেকে এএসপি পদে পদোন্নতি হয় খুবই নগণ্য, যা ১-২ ভাগের বেশি হয় না, আর এটা তাদের জন্য দুঃখজনক বিষয়।

বঞ্চিত পুলিশ কর্মকর্তাদের একজন পুলিশ পরিদর্শক আবদুর রউফ মন্ডল। সম্প্রতি পুলিশের আইজির (মহাপরিদর্শক) কাছে দেওয়া এক আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গত বছর ৬ এপ্রিল বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রস্তাব করি, পুলিশ পরিদর্শকরা নবম গ্রেড থেকে পদোন্নতি পাওয়ার পরও নবম গ্রেডে থেকে যাচ্ছেন। অথচ বিধি অনুযায়ী পদোন্নতির পর তাদের ষষ্ঠ গ্রেডে যাওয়ার কথা। কল্যাণ শাখার সভাপতি বিভিন্ন অফিসের কাগজপত্র সংগ্রহ করে পুলিশ সদর দপ্তরে অবেদন করতে বলেন।

আইজিপির কাছে দেওয়া আবেদনে আব্দুর রউফ মন্ডল বলেন, পুলিশ পরিদর্শক ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির পদ। ২০১২ সালে সরকার এটিকে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে উন্নীত করে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত নন-ক্যাডার (নবম গ্রেড) কর্মকর্তারা ষষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি পান। কিন্তু পুলিশের ক্ষেত্রে নবম গ্রেডের কর্মকর্তারা পদোন্নতির পরও নবম গ্রেডে থেকে যায়। উদাহরণ হিসাবে ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়রি ৩৫ পুলিশ পরিদর্শকের পদোন্নতির আবেদনে প্রজ্ঞাপন সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের নবম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতিসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন তুলে ধরা হয়। বলা হয়, পুলিশ পরিদর্শকদের নবম গ্রেড থেকে পদোন্নতি দেয়ার পর নবম গ্রেডে থেকে যাওয়ায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আর এতে অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নন-ক্যাডার কর্মকর্তার তুলনায় পুলিশ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (এরই মধ্যে মৌলভীবাজারের এসপি হিসেবে যোগদান করেছেন) মনজুর হোসেন বলেন, নিচের পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের বঞ্চিত থাকার বিষয়গুলো পুলিশ সদর দপ্তর অবগত আছে। এগুলো সমাধানের লক্ষ্যে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে যে আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু আজো তা কেবল কথার মধ্যেই বন্দী আছে।

এদিকে গত ২/৩ বছর ধরে বিসিএস পুলিশ অফিসারদের জন্য ‘সুপারনিউমারারি পদ (সুপারনিউমারারি পদ হলো- সংখ্যাতিরিক্ত পদ) সৃষ্ঠি করে কর্মকর্তা একই পদে অধিষ্ঠিত এবং পদোন্নতির পরেও একই দায়িত্ব পালন করছেন তারা। তবে একই নিয়ম কেন পুলিশ ইন্সপেক্টরদের বেলায় করা হচ্ছে না?, অথচ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন পুলিশ ইন্সপেক্টরগণ!

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পুলিশ ইন্সপেক্টর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা পুলিশ ইন্সপেক্টর, দেশ ও দেশের শান্তি রক্ষায় দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের অভিভাবক, পুলিশ ইন্সপেক্টরদের জন্য আপনি কিছু একটা করুন!

ক্রাইম ডায়রি //জনস্বার্থে //C. মোঃ মিজানুর রহমান স্বাধীন!/ফেসবুক ওয়াল