নারী ও শিশুদের কল্যানের নামে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ, সাইবার পুলিশ সেন্টারের হাতে গ্রেফতার ৩

প্রতারকদের প্রধান মজিবর রহমান স্বীকার করেছে যে বিগত পাঁচ বছরে সে প্রায় পঁচিশ হাজার সিভি সংগ্রহ করেছে।

নারী ও শিশুদের কল্যানের নামে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ, সাইবার পুলিশ সেন্টারের হাতে গ্রেফতার ৩
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

যখন ভিকটিমরা বুঝতে পারতো যে তারা প্রতারিত হয়েছে তখন তাদের সকল মাধ্যম থেকে ব্লক করে দেয়া হতো

অনলাইন ডেস্কঃ

নারী ও শিশুদের কল্যানের নামে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ পেতে অসংখ্য নিরীহ মানুষের সঙ্গে প্রতারনা করা একদল প্রতারককে গ্রেফতার করেছে সাইবার পুলিশ সেন্টার। 

সাইবার পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, দেশে পিছিয়ে পরা নারী ও শিশুদের উন্নয়নে অংশগ্রহন করা একটি মহৎ কার্যক্রম। কিন্তু কিছু প্রতারকরা এ মহৎ কার্যক্রমকে সামনে রেখে প্রতারণার জাল বিছিয়ে বসেছে। তাদের মূল লক্ষ্য নারী ও শিশুরা নয় বরং উক্ত প্রতিষ্ঠানে কাজের বিজ্ঞাপন দিয়ে এবং ভাল পারিশ্রমিকের লোভ দেখিয়ে নিরীহ মানুষদের ফাঁদে ফেলা। 
যেভাবে করা হতো প্রতারণাঃ
প্রথমে কাজের বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহী প্রার্থীদের থেকে ইমেইলে সিভি নেয়া হতো। এর পরে তাদের সাক্ষাতকার নেয়া হতো অনলাইনেই। কিছুদিন পরেই তাদের জানানো হতো যে তাদের চাকুরি হয়ে গেছে তবে জামানত বাবদ কিছু টাকা জমা রাখতে হবে। টাকা নেবার জন্য ব্যবহার করা হতো বিভিন্ন মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস।

ভিকটিমরা প্রথমে টাকা দিয়ে দিলে পরে একইভাবে ট্রেনিং, ল্যাপটপ, সাইকেল ইত্যাদি দেবার কথা বলে ধাপে ধাপে নেয়া হতো আরও টাকা। যখন ভিকটিমরা বুঝতে পারতো যে তারা প্রতারিত হয়েছে তখন তাদের সকল মাধ্যম থেকে ব্লক করে দেয়া হতো।

সাইবার পুলিশ সেন্টারের কাছে এমন একটি অভিযোগ আসলে সাইবার পুলিশ সেন্টারের একটি টিম অনুসন্ধানে এর সত্যতা পেয়ে প্রতারক চক্রটি সনাক্ত করে গত ০৯/১০/২০২২ ইং তারিখে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা মোঃ মজিবর রহমান সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকালে তাদের নিকট থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন, ৬০টি বিভিন্ন নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিমকার্ড, ৪০টি জাতীয় পরিচয় পত্র, ১৪৮ টি বায়োডাটা (ভিকটিম) এবং ৩০ এর বেশি ভূইফোড় কম্পানি/এনজিওর নামে নিয়োগপত্র ও রাবার স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারকদের প্রধান মজিবর রহমান স্বীকার করেছে যে বিগত পাঁচ বছরে সে প্রায় পঁচিশ হাজার সিভি সংগ্রহ করেছে। বিগত পাঁচ বছরে সিভি বাছাই করে চাকুরী প্রার্থীদের নিকট হতে তার ইনকাম এককোটি সাতাশি লক্ষ টাকা বলে সে জানিয়েছে। 

একই অভিযোগে এর আগেও ২০১৮ সালে একবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে এসে সে একই কাজ করছে।

তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপির  উত্তরা পশ্চিম থানায় ১০ই আগষ্ট ২০২২ইং তারিখে মামলা রুজু হয় যার নং ২৩। এছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এ তাদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়।  ২৩(২),২৬(২),৩০(২),৩২(২) সহ পেনাল কোডের ৪২০,৪২৬ ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে।
ক্রাইম ডায়রি // আইন শৃঙ্খলা