পাঁচকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক কাষ্টমস কমিশনারঃ দুদকের সুদীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে চার্জশীট দাখিল

Customs commissioner who owns illegal assets worth Rs 5 crore: Chargesheet filed after long ACC probe

পাঁচকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক কাষ্টমস কমিশনারঃ দুদকের সুদীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে চার্জশীট দাখিল

আইনের রক্ষক যারা তারা যদি আইনের ভক্ষক হন তবে তা চরম অনৈতিক কাজের শামিল।। বঙ্গবন্ধুর যুদ্ধ পরবর্তী ভাষণ যারা শুনেছেন তারা বুঝবেন। সোনার বাংলার মানুষগুলো কেমন হওয়া উচিত?  বঙ্গকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে এই অন্যায় মেনে নেয়ার মতো নয়। যেখানে বঙ্গকন্যা অন্যায়ের সাথে আপোষহীন। জিরো টলারেন্স নীতির অনুসরন করে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ও ছাড় দেননি তিনি।। হ্যা, সেই যে অভিযোগ উঠেছিল কাষ্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের বিরুদ্ধে মনে আছে কি???

ক্রাইম ডায়রি ডেস্কঃ

আইনের রক্ষক যারা তারা যদি আইনের ভক্ষক হন তবে তা চরম অনৈতিক কাজের শামিল।। বঙ্গবন্ধুর যুদ্ধ পরবর্তী ভাষণ যারা শুনেছেন তারা বুঝবেন। সোনার বাংলার মানুষগুলো কেমন হওয়া উচিত?  বঙ্গকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে এই অন্যায় মেনে নেয়ার মতো নয়। যেখানে বঙ্গকন্যা অন্যায়ের সাথে আপোষহীন। জিরো টলারেন্স নীতির অনুসরন করে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ও ছাড় দেননি তিনি।। হ্যা, সেই যে অভিযোগ উঠেছিল কাষ্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের বিরুদ্ধে মনে আছে কি???সুদীর্ঘ অনুসন্ধান ও তদন্ত করে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেট, ঢাকা-১ এর কমিশনার মো. শফিকুল ইসলামের পাঁচ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি ভুল করেননি সবার মতো নীরিহ স্ত্রী সন্তানকে খুশি করতে গিয়ে চরম বিপদে ফেলে দিয়েছেন। স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও নিজের নামে এসব অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন এই কর্মকর্তা। শফিকুল ও তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে দুদকের করা পৃথক মামলার অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) তথ্য পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেট, সিলেটের কমিশনার হিসাবে যোগ দেন মো. শফিকুল ইসলাম। এরপরই কোন একটি কারনে অনিয়ম করে অর্থ বিত্তের মালিক হবার স্বপ্ন দেখেন তিনি। শুরু হয়  নানা অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন।

কালো টাকার কামড় সহ্য করা মুশকিল। এসব টাকায় স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস কিনতে থাকেন। গড়ে তুলতে থাকেন সম্পদের পাহাড়। শুরু ঘরের শত্রু এবং বাহিরের শত্রুদের কানাঘুঁষা।  এক পর্যায়ে সীমাহীন লোভের শিকার হওয়া তার জন্য কাল হয়ে উঠে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে।  অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান চলাকালীন অবস্থায় বদলী করা হয় তাকে। ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় বদলি হন তিনি। একাধিক জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারিতে শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক সিলেটের উপপরিচালক মো. নুর-ই-আলম। এক বছরেরও বেশি সময় তদন্ত শেষে দুটি মামলার চার্জশিট আদালতে দেওয়া হয়। মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে ২২ ও ২৩ মার্চ চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা নুর-ই-আলম। দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) এবং মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় চার্জশিটগুলো দেওয়া হয়। তদন্তে এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ সঠিক পেয়েছে দুদক বলে জানা গেছে।

কি বলা হয়েছে চার্জশিটে???

চার্জশিট অনুযায়ী জানা গেছে , তিনি ২৮ জুন, ২০১৮ইং তারিখে  দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর ও ৯৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৭ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দেন। তদন্তকালে শফিকুল ও তার ছেলেমেয়ের নামে মোট ৫২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার স্থাবর ও এক কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭২ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া তিনি পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য খাতে মোট ৩২ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৮ টাকা খরচ করেছেন। সর্বমোট তিনি দুই কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার ১৯০ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে এক কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি এবং ৭১ লাখ ৮৪ হাজার ২১৫ টাকা মূল্যের অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন এবং নিজের ছেলের নামে ৮৬৮.৫ শতাংশ জমি কিনলেও সম্পদ বিবরণীতে তা গোপন রাখেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে । সেই হিসেবে  মোট এক কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি।
আরেকটি চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মাহবুবা ইসলাম ২০১৮ সালের ২৮ জুন  এক কোটি ১০ হাজার টাকার স্থাবর ও দুই কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ১১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দেন। তদন্তকালে তার নামে এক কোটি ৮১ লাখ ৩৩ হাজার ৭০৬ টাকার স্থাবর ও দুই কোটি ৪১ লাখ দুই হাজার ৪১২ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া তিনি পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য খাতে মোট ১৪ লাখ সাত হাজার ১৫১ টাকা খরচ করেছেন। সর্বমোট তিনি চার কোটি ৩৬ লাখ ৪৩ হাজার ২৬৯ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে চার কোটি চার লাখ ৮১ হাজার ২৬৯ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি। তিনি ৯৬ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯৯ টাকা মূল্যের অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। স্বামীর অবৈধ উপার্জনের টাকা বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের নামে ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস কেনেন এবং ডেভেলপার কোম্পানিকে বিভিন্ন মানি রিসিটে টাকার পরিমাণ কম দেখিয়ে দলিল তৈরি করেন। অর্থাৎ শফিকুলের স্ত্রী মাহবুবার নামে মোট চার কোটি চার লাখ ৮১ হাজার ২৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। হিসেব মতে তিনি বউ ও ছেলেমেয়েসহ  নিজের নামে সর্বমোট পাঁচ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। যা সরকারি চাকরি করে হবার কথা নয়। তাছাড়া তিনি বিষয়গুলো গোপন করেছেন এবং সঠিক ব্যাখ্যাও দেননি।

 

টিম ক্রাইম ডায়রির সাথে কথা  হয় কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেট, ঢাকা-১ এর কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম এর সাথে। তিনি নিজেকে সততার কাজ করে তার অর্জনকে ম্লান করার ষড়যন্ত্রের কথা বলেন। তিনি বলেন,নিজের ও স্ত্রীর নামের সব সম্পত্তির  রিটার্ন জমা দেয়া হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুদক যে চার্জশিট জমা দিয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি আইনিভাবে সকল মিথ্যা ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম