ওসির বিরুদ্ধে ৯৯৯ এ অভিযোগ- টাকা ফেরত পেলো অভিযোগকারী

ভালমন্দ মিলিয়েই মানুষ। ছোট্ট পরিবারেও সবাই একরকম হয়না। কেউ না কেউ দুষ্ট থাকে। এর জন্য পুরো পরিবার কখনোই কলুষিত হয়না।

ওসির বিরুদ্ধে ৯৯৯ এ অভিযোগ- টাকা ফেরত পেলো অভিযোগকারী

বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার বরাবর বামনার ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন শাহানা বেগম নামের নারী।

বরগুনা সংবাদদাতাঃ

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী এ দেশের গর্ব, দেশের জন্য প্রথম জীবনদানকারী বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধে দেশ ও জাতীর জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান। 

করোনা মহামারীর সময় নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে দেশমাতৃকার অকুতোভয় এই বীরেরা দেশের জন্য অবদান রেখেছে। ভালমন্দ মিলিয়েই মানুষ। ছোট্ট পরিবারেও সবাই একরকম হয়না। কেউ না কেউ দুষ্ট থাকে। এর জন্য পুরো পরিবার কখনোই কলুষিত হয়না। 

ছোট্ট  একটি দেশে অসংখ্য জনসংখ্যার বসবাস। এত জনসংখ্যা মেইনটেইন করতে স্বল্পসংখ্যক পুলিশ কাজ করছে। এদের মধ্যে সবাই যে শতসিদ্ধ হবে এমনটা কখনই হবার নয়। তাছাড়া গ্রাম্যরাজনীতি বলেও একটা কথা আছে। আসল বাস্তবটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আগাম বলা মুশকিল। বড় কথা হলো, একজন পুলিশের ব্যক্তিগত অপকর্মের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীর উপর বর্তায় না। ব্যক্তির অন্যায়ের দায়ভার ব্যক্তির নিজেরই।

সম্প্রতি, বরগুনা জেলার বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। 

মার্চ ২৯, মঙ্গলবার সকালে বরগুনা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক এর মাধ্যমে বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার বরাবর বামনার ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন শাহানা বেগম নামের নারী।

শাহানার অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে -বরগুনার বামনা উপজেলার খোলপটুয়া বাজারে ইলেকট্রিক ব্যাবসায়ী রাসেল মল্লিকের কাজ থেকে কিছুদিন আগে বামনা থানার ওসি বশিরুল আলম কিছু ইলেকট্রিক পণ্য কিনেন। ওই দিন সন্ধ্যায় ওসি বশিরুল আলম নিম্নমানের তার বিক্রির অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী রাসেলকে থানায় ডাকেন।

পরে স্বজনরা থানায় গেলে ওসি বলেন, রাসেল নিম্নমানের তার বিক্রি করে। তাকে এখন কোর্টে চালান দেওয়া হবে। এসব ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসায়ী রাসেলের স্বজনের কাছে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে স্বজনরা কোন উপায় না পেয়ে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসায়ী রাসেলকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। 

এরপর ব্যবসায়ী রাসেল মল্লিক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে ২০ হাজার টাকা নেয়ার বিষয়টি জানান। পরে ওসি বশিরুল আলম  ওই ২০ হাজার টাকা আবার রাসেলকে ফেরত দিয়ে পরিবারের সবাইকে শাসিয়ে যায় এবং বলে  - ‘তোদের কপাল পুড়ছে। তোদেরকে দেখে নেব’। এসব হুমকি দিয়ে চলে যান তিনি।

মঙ্গলবার এ মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পেতে বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রাসেলের বোন শাহানা বেগম।

শাহানা বেগম বলেন, দুই নম্বর তার বিক্রির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার ভাই রাসেলকে থানায় ধরে নিয়ে যায় ওসি বশিরুল আলম। পরে সে আমাদের কাছে ৪০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করলে আমরা ২০ হাজার টাকা দিয়ে আমার ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে আনি। 
 
এ বিষয়ে অভিযুক্ত  বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ন মিথ্যা,এরকম কিছুই হয়নি। ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য কেউ আমাকে বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। 

বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, এব্যাপারে আমি একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পেলে ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। 

ক্রাইম ডায়রি / ক্রাইম