যুগান্তরের প্রতিবেদনে ৯ লাখ টাকার ভৌতিক বিল হতে মুক্তি পেলেন কৃষক

গণমাধ্যম দেশ ও জনগনের কথা বলে। অন্যায় ও অবিচারের কথা বলে। ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার কথা বলে। গণমাধ্যমের এই জনবান্ধব নীতি এর ভিতকে করেছে শক্তিশালী। দৈনিক যুগান্তরের প্রতিবেদনে প্রায় নয়লাখ টাকার ভৌতিক বিল হতে মুক্তি পেলেন ময়মনসিংহের কৃষক সাইফুল।

যুগান্তরের প্রতিবেদনে ৯ লাখ টাকার ভৌতিক বিল হতে মুক্তি পেলেন কৃষক

গৌরীপুরে আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, কৃষকের অব্যবহৃত মিটারটিতে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই

অনলাইন ডেস্কঃ

দৈনিক যুগান্তরে ১১ ফেব্রুয়ারি যুগান্তর পত্রিকায় ‘গৌরীপুরে কৃষকের মৃত মিটারে ৯ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল’ এবং একই দিনে অনলাইন সংস্করণে ‘সংযোগ বিচ্ছিন্নের পরও ৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩৩ টাকার বিদ্যুৎ বিল’, শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।

এই সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার এ ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল থেকে মুক্তি পেলেন কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের দেয়া চূড়ান্ত নিষ্পত্তি বিলের ১ হাজার ২৪টাকা জনতা ব্যাংক লিমিটেড গৌরীপুর শাখার ব্যবস্থাপক মো. ফয়েজ আহমেদ রাসেলের নিকট জমা দেন।

দৈনিক যুগান্তরে এ সংবাদ প্রকাশের পর বিদ্যুৎ বিভাগকে নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি করেন। কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের বেকারকান্দা গ্রামের মৃত মীর হোসেনের পুত্র কৃষক মো. সাইফুল ইসলামকে ১ হাজার ২৪ টাকার বিদ্যুৎ বিল প্রদান করা হয়। ফলে এ কৃষক ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৫০৯ টাকার ভৌতিক বিল থেকে মুক্তি পান।

গৌরীপুরে আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, কৃষকের অব্যবহৃত মিটারটিতে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই।

তাকে বিদ্যুৎ ডিমান্ডচার্জ হিসেবে ১ হাজার ২৪ টাকার চূড়ান্ত বিদ্যুৎ বিল দেয়া হয়েছে। তিনি ইচ্ছে করলে আবেদনের মাধ্যমে এ বিদ্যুৎ লাইন চূড়ান্তভাবে বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন।

বিদ্যুৎ বিশাল বিল থেকে মুক্তি পেয়ে কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, দৈনিক যুগান্তর আমার মতো একজন অসহায় কৃষকের কথা লিখেছে, আমি আজীবন যুগান্তরের কথা বলবো। আপনার জন্যও দু’হাত দিলে দোয়া করবো।

সরজমিন ও দালিলিক কাগজপত্রে দেখায় যায়, বেকারকান্দা গ্রামের মৃত মীর হোসেনের পুত্র মো. সাইফুল ইসলাম একজন কৃষক।

তিনি নিজের জমিতে পানি উত্তোলনের জন্য সেচ লাইন গ্রহণ করেন। তার সেচ মিটার নং ই-২৮৬৯৪০, গ্রাহক নং ৭৫৭৪৪৫৩৮, হিসাব নং ৩১৩/৪২৯৪। তার এ বিদ্যুৎ লাইনটি ২০১৯ সালে সব বকেয়া পরিশোধ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এরপর থেকেই ওই বিদ্যুৎ মিটারটি তারবিহীন অবস্থায় বিদ্যুতের খুঁটিতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন মিটারটিতে জং ধরছে। খুঁটিতে থাকা কাঠও পচে গেছে।

দেয়া বিদ্যুৎ বিল পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ২২ হাজার ২৫০ টাকা, মে মাসে ২ হাজার ৬৮৪ টাকা, জুন মাসে ২ হাজার ৬৮৪ টাকা, জুলাই মাসে ৪ লাখ ১৬ হাজার ১৮৭ টাকা, আগস্টে ২৩ হাজার ৩৫৯ টাকা, সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৮ টাকা, অক্টোবরে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৯ টাকা, নভেম্বরে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৩৯ টাকা এবং ডিসেম্বর মাসে ১ হাজার ৭২৪ টাকাসহ সর্বসাকুল্যে ৮ লাখ ৮৮হাজার ৫৩৩ টাকা। এ বিল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন এবার কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম।

ক্রাইম ডায়রি/দৈনিক যুগান্তরের প্রতিবেদন জনস্বার্থে হুবহু প্রচারিত