বিএনপি নেতারা বাড়ি ঘেরাও করতে এলেও তাদেরকে চা পান করাবেন,কথা শুনবেন- বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা

আমি মনে করি, কারো না কারো তো কথা বলা উচিত। কথা যত পারে বলুক। সারাদিন কথা বলেও বলে, আমাদের কথা বলতে দেয়নি। মিছিল করে লোক হয় না, বলে আমাদের লোক আসতে দেয় না।

বিএনপি নেতারা বাড়ি ঘেরাও করতে এলেও তাদেরকে চা পান করাবেন,কথা শুনবেন- বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সব সময় যেকোনো দুযোর্গে-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে আছে। আওয়ামী লীগ সব সময় মানবতার সেবা করে যাচ্ছে।

শরীফা আক্তার স্বর্নাঃ

শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, বিএনপি যদি প্রধানমন্ত্রীর বাড়িও ঘেরাও করতে আসে, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হিসেবে তিনি বিএনপি নেতাদের চা পানে আপ্যায়ন করবেন এবং ধৈর্য্য ধরে তাদের কথা শুনবেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি তাদের বসাবো, চা খাওয়াবো। কথা বলতে চাইলে শুনবো। কারণ, আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী কারো নাম উচ্চারণ না করে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে  বলেন, ‘আমিতো বলে দিয়েছি- তারা (বিএনপি) যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে, তাদেরকে পুলিশ যেন বাধা না দেয়। বিশেষ করে বাংলামটরে যে বাধা দেয়া, সেটা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি। আসুক না হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে। কোনো আপত্তি নেই।’

বিএনপির মিছিলে লোক হয় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি মনে করি, কারো না কারো তো কথা বলা উচিত। কথা যত পারে বলুক। যদিও সারাদিন কথা বলেও বলে, আমাদের কথা বলতে দেয়নি। মিছিল করে লোক হয় না, বলে আমাদের লোক আসতে দেয় না। এ রকম অভিযোগ তো তারা করে। তাদের কাছে আসবে কেন? কোন আশায় আসবে। সেটা হলো বাস্তব কথা। সেটা একটু চিন্তা করতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় যেকোনো দুযোর্গে-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে আছে। আওয়ামী লীগ সব সময় মানবতার সেবা করে যাচ্ছে। আর কিছু লোক সারাক্ষণ দোষ ধরার-খুত ধরার চেষ্টায়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা মানেই হচ্ছে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অর্থ পাচার, মানবপাচার এই সব। যারা এসবের সাথে যুক্ত থাকে তারা তো দেশের জন্য কাজ করবে না। আজকে যারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে তাদের ব্যাপারেও বলতে চাই। বাংলাদেশে যদি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো ডিসিপ্লিন এসে থাকে সেটাও আওয়ামী লীগেরই অর্জন।

তিনি বলেন, পর পর তিনবার ক্ষমতায় এসে আজকে আওয়ামী লীগের দেশ পরিচালনায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ৭৫ থেকে ২১ বছর যারা ক্ষমতায় বাংলাদেশের মানুষকে কি দিয়েছে? আর দেশের জন্য কি করেছে? সেটা বাংলাদেশের মানুষের উপলব্ধি করা উচিত। এরা সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ, দুর্নীতি, দুঃশাসন, মিলিটারি রুল, গণতন্ত্র হরণ করেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। যত রকমের অপকর্ম করা যায় সবই করে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই এদেশের মানুষ জনগণের সেবা পেয়েছে। জনগণকে সেবা দিয়েছে, জনগণের সমর্থন পেয়েছে। আজকে করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। সেই সাথে সাথে আরেকটা মন্দা দেখা দিয়েছে সমগ্র বিশ্বে। সেটা হলো, ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধ এবং আমেরিকার স্যাংশন। যে কারণে ডলারে কেনা-বেচা করা যাচ্ছে না। ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। জ্বালানির দাম বেড়ে যাচ্ছে, ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো সেখানেও খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তারা সব জিনিস কেনার ক্ষেত্রে লিমিট করে দিচ্ছে যে, এর বেশি কিনতে পারবে না। সেখানে মূল্যস্ফীতি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তো এই অবস্থা সমগ্র বিশ্বব্যাপী। সেই ক্ষেত্রে আজকে আমরা সমগ্র বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। যেটা আমাদের ওয়াদা ছিল আমরা রক্ষা করেছি।

তিনি বলেন, প্রতিটি উন্নত দেশ আজকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করছে। সেখানে লোডশেডিং হচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকা সব জায়গারই একই অবস্থা। সেটা কেউ দেখছেন না। কিন্তু আমাদের সমালোচনা করে যাচ্ছেন, এ কথা বলছেন, ও কথা বলছেন।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা যারা করে তাদের এই কথাই বলবো যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হয়। অর্থনৈতিক উন্নতি হয়। আর্তসামাজিক উন্নতি হয়। যারা বলার তারা বলুক আমাদের কাজ আমরা করে যাবো। কারণ দেশের উন্নতই আমাদের লক্ষ্য। সেই উন্নয়নের কাজটাই আমরা করবো। সেই কাজটিই আমরা করে যাচ্ছি। আমরা দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সেটা ধরে রেখে এগিয়ে নিয়ে যাবো।

সরকার প্রধান বলেন,আওয়ামী লীগ সব সময় এদেশের জনগণের ভোটে বিশ্বাসী। আমরা সেটাই বিশ্বাস করি। সে জন্য নির্বাচন ব্যবস্থায় যতটা উন্নতি হয়েছে সেটা আওয়ামী লীগের উদ্যোগেই হয়েছে।

ক্রাইম ডায়রি// জাতীয়