বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূয়া নিয়োগ সিন্ডিকেটঃ মূলহোতা সম্রাটের টাকার উৎস কোথায়?

Begum Rokeya University Fake Recruitment Syndicate: Where is the source of money of Mulhota emperor?

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূয়া নিয়োগ সিন্ডিকেটঃ মূলহোতা সম্রাটের টাকার উৎস কোথায়?

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট দূর্নীতি নিয়ে ইদানীং কালে গণমাধ্যমগুলোতে বেশ সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সরকার প্রধান গণমানুষের নেতা বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা যখন দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে তখন সিরিজ দূর্নীতি বেশ হতাশাজনক। সম্প্রতি হাবিপ্রবি শিক্ষকের যৌণ হয়রানি ও আর্থিক কেলেংকারীর কারনে জনমনে নেগেটিভ ধারনা তৈরি হয়েছিল। যার কোন শক্ত বিচার হয়নি। ফলে, একই অঞ্চলের আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট দূর্নীতিতে হতাশ হয়েছে সুধীমহল। বঙ্গকন্যা কখনই সোনার বাংলায় এ ধরনের যৌণ নিপিরক ও দূর্নীতিবাজদের ভাল চোখে দেখবেন না।। জনগনের বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় এদের ঠাঁই হবেনা

ক্লিক করুন।। রেকর্ডিং দেখুন।।।

https://youtu.be/Rhh8DsrBK70
রংপুর মহানগর সংবাদদাতাঃ
বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট দূর্নীতি নিয়ে ইদানীং কালে গণমাধ্যমগুলোতে বেশ সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সরকার প্রধান গণমানুষের নেতা বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা যখন দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে তখন সিরিজ দূর্নীতি বেশ হতাশাজনক। সম্প্রতি হাবিপ্রবি শিক্ষকের যৌণ হয়রানি ও আর্থিক কেলেংকারীর কারনে জনমনে নেগেটিভ ধারনা তৈরি হয়েছিল। যার কোন শক্ত বিচার হয়নি। ফলে, একই অঞ্চলের আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট দূর্নীতিতে হতাশ হয়েছে সুধীমহল। বঙ্গকন্যা কখনই সোনার বাংলায় এ ধরনের যৌণ নিপিরক ও দূর্নীতিবাজদের ভাল চোখে দেখবেন না।। জনগনের বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় এদের ঠাঁই হবেনা।
 
দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।  দৈনিকের সংবাদের বরাতে জানা গেছে, "রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দেবার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। শুধু তাই নয় চক্রটি ভুয়া নিয়োগ পত্র দিয়ে প্রতারিত করেছে বেশ কয়েকজন চাকুরী প্রত্যাশিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর সম্রাট হচ্ছে এ চক্রের মুল হোতা বলে অভিযোগ উঠেছে। তার সঙ্গে আছেন আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী ও উপাচার্য দপ্তরের প্রভাবশালী তিন কর্মকর্তা। চাকুরী প্রত্যাশিদের কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেবার ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
ভুক্তভোগি ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাসিন্দা রুবেল সাদী নামে এক যুবককে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার গ্রেড ২ পদে চাকুরী দেবার কথা বলে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সেকশন অফিসার মরিুজ্জামান পলাশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কম্পিউটার অপারেটর শেরেজামান সম্রাট এবং মাস্টাররোল কর্মচারী গুলশান আহমেদ শাওন। ১৬ লাখ টাকা চুক্তি করে। ইতিমধ্যে ১৩ লাখ টাকা দুদফায় তাদের প্রদান করে চাকুরী প্রত্যাশি রুবেল সাদী। বেশ কিছুদিন ঘোরানোর পর এর মুল হোতা কমিপউটার অপারেটর সম্রাট ও তার সহযোগীরা একটি নিয়োগ পত্র প্রদান করে। সেটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগে গেলে নিয়োগপত্রটি ভুয়া বলে তাকে জানানো হয়। এ ধরনের কাউকেই নিয়োগ দেয়া হয়নি বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এরপর টাকা ফেরৎ দেবার জন্য রুবেল সাদী তাদের চাপ দিলে নানান ধরনের হুমকি দেয়া হয় তাকে। রুবেল সাদীর ১৩ লাখ টাকা দেবার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সম্রাট টাকা গুনে নিচ্ছেন পকেটে রাখছেনএকই ভাবে তার সহযোগীরা টাকা নিচ্ছেন।""
এরপর অন্যান্য সাংবাদিকদের সঙ্গে টিম ক্রাইম ডায়রি সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিতে যায়। সেখানে ঐ সময় সৌভাগ্যক্রমে  প্রশাসনিক ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন চাকুরী প্রত্যাশি দুই নারীকে পাওয়া যায়। যথাক্রমে  তারা হলেন রংপুর মহানগরীর বড়বাড়ি দেওডোবা এলাকায় হাসি বেগম ও আয়েশা সিদ্দিকা।
দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, "হাসি বেগম জানান, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার এটেনডেন্ট পদে চাকুরী দেবার আশ্বাস দিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর চার দফায় সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সার্কুলার ছাড়াই ভিসি চাকুরী দেন। অনেকেই চাকুরী পেয়েছেন। তার কথায় সরল বিশ্বাসে তাকে টাকা দেয়া হয়। এরপর তাকে সহ কয়েকজন ঢাকায় নিয়ে যান সম্রাট। সেখানে ১০/১২ দিন অবস্থানও করেন তারা।। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে ভিসির সাথে কথা বলিয়ে দিয়ে নিয়োগ করিয়ে দেবার আশ্বাস দেয়া হয়। ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে ভিসি সাহেব যেহেতু প্রতিদিনই অফিস করেন আর সম্রাটের সাথে ভিসি সাহেবের কথা বার্তা আর দহরম মহরম দেখে নিশ্চিত ছিলাম চাকুরী হবে । এরপর আমাকে একটি নিয়োগ পত্র দেয়া হয় সেখানে স্বাক্ষর আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার আবু হেনা মোস্তফা কামালের। নিয়োগ পত্র নিয়ে প্রশানিক ভবনে গেলে তাকে জানানো হয় এ নিয়োগ পত্রটি ভুয়া এ ধরনের কোন নিয়োগ পত্র বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ কাউকেই দেয়নি। এরপর থেকে টাকা ফেরৎ পাবার জন্য সম্রাটের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে দেখা করলেও সে উল্টো নানান হুমকি দেয়। হাসি বেগম আরো জানান সামান্য জমি ছিলো তা বন্ধক রেখে মায়ের সোনার গহনা আর সুদের উপর টাকা নিয়ে টাকা দেয়া হয়েছিলো এখন চাকুরী না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা।

 

একই কথা জানালেন আয়েশা ছিদ্দিকা তাকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর তিনি জানান ওই পদে চাকুরী দেবার নামে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছে সম্রাট নামে ওই কর্মচারী। সে ভিসি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কথা বলে তাকে চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বাস দিয়ে টাকা নিয়েছে। বেশ কিছুদিন ঘোরানোর পর তাকে একটি ভুয়া নিয়োগ পত্র দেয়া হয়। সেটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তরে গেলে তারা জানায় এটি ভুয়া নিয়োগ পত্র। এরপর কয়েকদিন ধরে টাকা ফেরতের জন্য ক্যাম্পাসে এসে তার দেখা মিলছেনা ফোনও ধরেনা। তিনি আরও বেশ কয়েকজনকে চাকুরী দেবার নামে লাখ লাখ টাকা নিয়েছে তারা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এ প্রতিনিধিকে জানান ভিসি দিনের পর দিন বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননা। এ সুযোগ নিয়েছে ভিসির দপ্তরের কিছু কর্মকর্তা সহ কয়েকজন এরা একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে চাকুরী দেবার নাম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু তাই নয় এ পর্যন্ত যে সব নিয়োগ হয়েছে তার সঙ্গেও তারা জড়িত। এভাবে বিভিন্ন জনের কাছে চাকুরী দেবার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। টাকা দিয়ে চাকুরী না পেয়ে দিশেহারা চাকুরী প্রত্যাশিরা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর সম্রাটের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান(তার পুরো বক্তব্য ভিডিও করা আছে) তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা। তিনি দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী হবার আগে থেকে তিনি ষ্টক বিজনেস করেন আলু হলুদ কিনে রাখেন। যারা অভিযোগ করেছে তারা অগ্রিম টাকা নেবার পর টাকা দিচ্ছিলোনা চাপ দেবার পর ২/৩ দফায় তাকে টাকা দিয়েছে। তিনি কারো কাছে টাকা নেননি বলে দাবি করেন তবে ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোষ্ট তাবিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধির কাছে চাকুরী দেবার নামে টাকা নেবার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তিনিও দেখেছেন। তিনি জানান ভিডিওতে দুটি জায়গায় টাকা নেবার দৃশ্য দেখা গেছে এর একটি নগরীর মিতালী রেষ্টুরেন্ট অন্যটি নগরীর পার্কের মোড় বা অন্য কোন জায়গায়। তবে বঙ্গবন্ধু হলের অফিসে টাকা নেবার কোন দৃশ্য নেই। তবে ঘটনাটি দুঃখজনক সে কারনে জরুরী ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মাসুদুল হাসানকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।"

পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্টার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।  তদন্ত কমিটির প্রধান মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তাকে তিন কার্যদিবসের সময় দেয়া হয়েছে। সকলে সহযোগীতা করলে তিনি অতিদ্রুত প্রতিবেদন দিতে পারবেন। হতবাক করা এ ঘটনায় রংপুরবাসীও ক্ষুব্ধ।  রংপুরের সম্মান জড়িত হওয়ায় তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে সঠিক বিচার দাবী করেন।

ক্রাইম ডায়রি /// অপরাধ