স্পেনে কাজ করছে না চীনের করোনা কিট!

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

স্পেনে কাজ করছে না চীনের করোনা কিট!

চীনের করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট ঠিকভাবে কাজ করছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন স্পেনের জীববিজ্ঞানীরা। তাদের ভাষ্য, তড়িঘড়ি করে  ‘বায়োইজি’ নামে যে র‌্যাপিড টেস্ট কিট নেওয়া হয়েছে সেগুলো পজিটিভ কেস সঠিকভাবে ধরতে পারছে না। এগুলো মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ করে।

স্পেনের ওই জীববিজ্ঞানীরা একটি প্রতিবেদেন প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চীনের কিটগুলো দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এতে মাত্র ৩০ শতাংশের সংবেদনশীলতা (সেনসিটিভিটি) পাওয়া গেছে।

এর অর্থ দাঁড়ায়, ৭০ শতাংশ কিট কোনো কাজেই আসছে না স্পেনে। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের মতানুসারে, ইনফ্লুয়েঞ্জার (ভাইরাসজনিত রোগ) ক্ষেত্রে র‌্যাপিড টেস্ট কিটে ৮০ শতাংশ সেনসিটিভিটি থাকতে হয়। কিন্তু স্পেনে নিয়ে যাওয়া কিটগুলো মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ করায় কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তা বোঝা যাচ্ছে না।

স্প্যানিশ দৈনিক এল পাই তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্প্যানিশ সোসাইটি অব ইনফেকশাস ডিজিজেস অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজির তরফ থেকে কিটগুলো আর ব্যবহার না করার সুপারিশ যেতে পারে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্য কিট ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। সেসব টেস্টের ফল পেতে অবশ্য অনেক সময় লাগে।

এদিকে স্পেনের অবস্থা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিশ্বে করোনাভাইরাসে বেশি মৃত্যুহারের তালিকায় ইউরোপের এই দেশটি তালিকার দ্বিতীয়তে রয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৭৮৬ জন। মারা গেছেন ৪ হাজার ৩৬৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ হাজার ০১৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের কোনো খবর না পাওয়া গেলেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় অছেন এক হাজার ২৩৬ জন।

স্পেনে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে মাদ্রিদ। এক তৃতীয়াংশ মানুষ এই অঞ্চলেই মারা গেছে। ব্যাপক ঝুঁকিতে আছে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা। পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মধ্যে ১০ শতাংশই স্বাস্থ্যকর্মী।

ইতিমধ্যে স্পেনের সবচেয়ে বড় সম্মেলনকেন্দ্র ‘ফেরিয়া দে মাদ্রিদে’ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় অস্থায়ী হাসপাতাল করে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। দেশটিতে স্বাস্থ্যকর্মী সংকটের ফলে সরকার মেডিকেল পড়ুয়া শিক্ষার্থী এমনকি অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের নিয়োগ দিচ্ছে।

উল্লেখ্য যে---বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চীন থেকে এসেছে মেডিকেল সরঞ্জাম। এতে ১০ হাজার টেস্ট কিট, প্রথম সারির ডাক্তারদের জন্য ১০ হাজার পিপিই ও এক হাজার থার্মোমিটার রয়েছে। কুনমিং থেকে আসা চীনের একটি কার্গো উড়োজাহাজ আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

আজ শুক্রবার বিকেলে আরও ৩০ হাজার কিট এসেছে। নতুন এই কীট অনুদান হিসেবে দিয়েছে চীনের অনলাইন বিপণন প্রতিষ্ঠান আলিবাবা ও জ্যাক মা ফাউন্ডেশন।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) বিকেলে এ সব মেডিকেল সরঞ্জাম বাংলাদেশে পৌঁছায় বলে জানান ঢাকার চীনা দূতাবাসের মিনিস্টার কাউন্সেলর ও উপপ্রধান হুয়ালং ইয়ান।

স্পেনে দেয়া চীনের কীট যদি ত্রুটিপূর্ণ হয় তাহলে বাংলাদেশের কীটেও ত্রুটির আলামত পাওয়া যেতে পারে। তাই কতৃপক্ষকে সতর্ক হওয়া জরুরী বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।