সংবাদ মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ ইস্যুতে চাপে ও আতংকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা

সংবাদমাধ্যমে ব্যাংক সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা সংবাদ প্রকাশ হলেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা‌দের কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ দেওয়া হ‌চ্ছে।

সংবাদ মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ ইস্যুতে চাপে ও আতংকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

হঠাৎ কড়াকড়ি ও কর্মকর্তাদের শোকজ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আয়নার মতো। এজন্য পরিস্থিতি বুঝেই কেবল তথ্য দিতে হয়।

কালিমুল্লাহ দেওয়ান রাজাঃ

হঠাৎই কড়াকড়ি বাংলাদেশ ব্যাংকে। সাংবাদিকদের তথ্য দেয়ায় আতংকে পড়েছেন কর্মকর্তারা। সাংবাদিকরা যে সোর্স হতেই সংবাদ প্রকাশ করুক না কেন দায়ভার গিয়ে চাপছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের কাধে। ফলে আতংকে আছেন তারা। ব্যাংকের শাখার ভল্ট থেকে ‘উধাও’ হচ্ছে টাকা, গোপন করা হচ্ছে খেলাপি ঋণ।

অনিয়ম করে লোন গ্রাহককে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে দুরবস্থায় পড়ছে ব্যাংক। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নিয়ে, উল্টো কেন এধরনের অনিয়মের সংবাদ জনসাধারণের কাছে যাচ্ছে, এ বিষয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব তথ্য সাধারণ মানুষ যেন না জানতে পারে, এজন্য তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।কিন্তু কেন তা জানা যায়নি।

 জানা যায়, সংবাদমাধ্যমে ব্যাংক সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা সংবাদ প্রকাশ হলেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা‌দের কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ দেওয়া হ‌চ্ছে। বিভিন্নভা‌বে মান‌সিক চাপ সৃ‌ষ্টির পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে বদলি ও চাকরি থেকে বহিষ্কারের হুমকিও। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কর্মীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পরেই গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর কড়াকড়ি করা হয়। সম্প্রতি সাংবাদিকদের ওপর নজিরবিহীন শর্ত আরোপ করা হয়ছে। গভর্নরের ভবনে সাংবাদিকদের প্রবেশ পাশ বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সাংবাদিকরা গভর্নরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মসূচি বয়কট করলে প্রবেশ পাশ বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর পরই তথ্য প্রাপ্তি বন্ধ করতে ও সাংবাদিক প্রবেশ বন্ধ করতে কয়েকটি বিভাগ তালাবদ্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান। সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ার অভিযোগে তিনজন নির্বাহী পরিচালককে ডেকে ভর্ৎসনা করেন এই ডেপুটি গভর্নর। তাছাড়া ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ, অফ-সাইট বিভাগ, ফরেন রিজার্ভ ও ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ব্যাংকিং নীতি ও প্রবিধি বিভাগের অন্তত ১১ জন কর্মকর্তাকে তথ্য শেয়ার করার অভিযোগে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

হঠাৎ কড়াকড়ি ও কর্মকর্তাদের শোকজ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আয়নার মতো। এজন্য পরিস্থিতি বুঝেই কেবল তথ্য দিতে হয়। সব তথ্য গণমাধ্যমে দেওয়া ঠিক না। কোনো কর্মকর্তা তথ্য দিলে তা গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়। এজন্য তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এতে ভীতিকর বা স্বেচ্ছাচারিতার কিছু নেই। গণমাধ্যমের তথ্য নেওয়া উচিৎ মুখপাত্রের মাধ্যমে। কোনো ব্যাংকের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে তার তথ্য ওই ব্যাংক থেকেও প্রকাশ হতে পারে। তবে কেন এমন নোটিশ দেওয়া হচ্ছে সে সম্পর্কে  তিনি জানেন না বলে জানান।

ক্রাইম ডায়রি/জাতীয়