কঠিন বিপর্যয়ের মুখে ধৈর্যের পরিক্ষায় উর্ত্তীণ মুশফিকুর রহিম

মানুষের খারাপ সময় আসতে পারে এটাই স্বাভাবিক। খারাপ সময়ে সমর্থক থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তরা পর্যন্ত সবাই সমর্থন না দিয়ে উল্টো সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়।

কঠিন বিপর্যয়ের মুখে ধৈর্যের পরিক্ষায় উর্ত্তীণ মুশফিকুর রহিম
ছবি-অনলাইন হতে সংগৃহীত

মুশফিক আমাদের সম্পদ। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে তার অবদান অতুলণীয়। আমাদের উচিত খেলোড়দের ভালো সময় যেভাবে পাশে থাকি, খারাপ সময়ে ঠিক তেমনই তাদের সার্পোট দিয়ে তাদের পাশে থাকা। তখনই আসবে খেলোয়ারদের সফলতা।

কলিম উল্লাহ দেওয়ান রাজা, স্টাফ রিপোর্টারঃ


মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২য় টেস্টে যখন ২৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে  এক প্রকার খাদের কিনারে বাংলাদেশ দল। তখনই লিটন দাসকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যান মি: ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। মাহামুদুল হাসান, তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন, মমিনুল হোক, সাকিব আল হাসানের ব্যর্থতার দিনে সব দায়িত্ব তুলে নেন মুশফিক-লিটন। এই বিপর্যয়ের মধ্যে মুশফিক-লিটন গড়েন ২৫৩ রানের এক অবিশ্বাস্য জুটি।

দিন শেষে ২ জনেই শতক পূর্ণ করে অপরাজিত আছেন। আজকে সঙ্গীর অভাবে ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারলেন না মি: ডিপেন্ডেবল। আজকে শুরুতেই এক এক করে লিটন, মোসাদ্দেক, তাইজুলরা যখন তার সঙ্গ দিতে ব্যর্থ, তখনই ১৭৫ রানে থেমে যায় মুশফিকের ইনিংস। সে সাথে ৩৬৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশে দলের প্রথম ইনিংস। গতকাল মুশফিক লিটন জুটি ৬৩ বছরের পূরনো রেকর্ড ভেঙ্গেছেন।

১৯৫৯ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে একটি খেলায় ২৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ওয়ালিস ম্যাথিউস ও সুজাউদ্দিন ৮৬ রানের জুটি গড়েন। সেই রেকর্ড টপকে যান মুশফিক-লিটনের জুটি। তার আগে চট্টগ্রাম টেস্টে লড়াই করে ১০৫ রানের ইনিংস গড়ে দলকে সন্মানজনক স্কয়ার । যখন বাংলাদেশ বিপদে পড়ে তখনই ব্যাট হাতে দাড়িয়ে যান মুশফিকুর রহিম, খেলেন বীরের মতো। যখনই খারাপ সময় যায় তখন তাকে সমর্থকদের নানা সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়। এই জন্য সমালোচকদের আয়নায় নিজের চেহারা দেখতে বলেন।

অনেকেই বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবে নেয়নি। এ নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় তাকে আরও বেশি সমালোচনার সম্মখীন হতে হয়। কিন্তু তিনি তো থেমে থাকার পাত্র নন। তিনি নিন্দুকের সমালোচনা সহ্য করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যান। গড়েন এক অনন্য রেকর্ড। যা বাংলাদেশের আর কোন খেলোড়ার করতে পারেনি। তিনিই বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বপ্রথম ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) রান পূর্ণ করেন। সম্প্রতি আরেকবার সমালোচকদের জবাব দেন এই বলে যে, ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নে’মাল ওয়াকিল, নেমাল মাওলা ওয়া নেমান নাছির’, অর্থ আল্লাহ আমাদের জন্য যথেষ্ট। তিনিই উত্তম কর্ম বিদায়ক, আল্লাহই উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।

তিনি বলেন- যখন আপনারা অনেকেই ঘুমিয়ে থাকেন তখন আমি অনুশীলন করি। অনেকটা কষ্ট নিয়েই বললেন আমার মনে হয় এটা শুধু বাংলাদেশই হয়। ভালো করলে সবাই বাহ বাহ দিয়ে ব্র্যাডম্যানের উচ্চতায় নিয়ে যায় আবার যখন খারাপ করি তখন এমন দূরাবস্থার স্বীকার হতে হয় যেনো মনে হয়  গর্ত করে গর্তের মধ্যে ঢুকে যায়! মানুষের খারাপ সময় আসতে পারে এটাই স্বাভাবিক। খারাপ সময়ে সমর্থক থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তরা পর্যন্ত সবাই সমর্থন না দিয়ে উল্টো সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়।

এমন ব্যবহারের সম্মখীন হতে হয় যেনো ক্যারিয়ারের সব অর্জনই বৃথা। আর এ সমালোচনার জন্য অনেক খেলোড়ার মানসিক বিপর্যয়ে পড়ে। আমাদের এই স্বার্থপর চরিত্র থেকে সরে আসতে হবে। মুশফিক আমাদের সম্পদ। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে তার অবদান অতুলণীয়। আমাদের উচিত খেলোড়দের ভালো সময় যেভাবে পাশে থাকি, খারাপ সময়ে ঠিক তেমনই তাদের সার্পোট দিয়ে তাদের পাশে থাকা। তখনই আসবে খেলোয়ারদের সফলতা।

ক্রাইম ডায়রি//খেলাধুলা