সমবায়ের নামে ফান্ড কালেকশনঃ মানব উন্নয়ন সমিতির আড়াইকোটি টাকা লাপাত্তা

সমবায়ের নামে যাচ্ছে তাই হচ্ছে । বিভিন্ন জেলায় মহল্লায় ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে ওঠা সমিতি গুলো গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পরে আর রিকভারী করতে না পেরে লাপাত্তা হতে বাধ্য হচ্ছে একসময়। প্রতিদিনই পত্র পত্রিকায় নিউজ হচ্ছে। কিন্তু লাগাম টেনে ধরার যেন কেউ নেই। তাই তালিকা করে এখন পদক্ষেপ নিতে বঙ্গকণ্যা ও প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন সাধারন গ্রাহক এবং সদস্যদের।

সমবায়ের নামে ফান্ড কালেকশনঃ মানব উন্নয়ন সমিতির আড়াইকোটি টাকা লাপাত্তা
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত
টাকা দিয়ে তারা গড়ে তোলেন ভিআইপি সুপার শপ। যেখানে বিক্রি হতো ইলেকট্রনিক্স পণ্য।সমিতির ইলেকট্রনিক্স বিভাগের দায়িত্বে থাকা কয়রা এলাকার কার্তিক সরকার জানান, ওয়ালটনসহ তিন-চারটি কোম্পানির ফ্রিজ, রাইসকুকার, ফ্যানসহ ইলেকট্রনিক পণ্য তারা পাইকারিও বিক্রি করেন। শতাধিক ব্যবসায়ীকে এসব পণ্য দিতেন। সাধারণ সম্পাদক এসব দেখভাল করতেন।
বাগেরহাট সংবাদদাতাঃ
বাগেরহাটে গ্রাহকদের আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মানব উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সরকারের বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় সমিতির অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহক ও জনপ্রতিনিধিরা। স্থানীয়দের ধারণা, দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন সাধারণ সম্পাদক।
২০১৫ সালে সদরের সিঅ্যান্ডবি বাজার এলাকার মানিক দাস ও বিপ্লব সরকার স্থানীয় কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে সমিতি গড়ে তোলেন। বাজারের পরিতোষ দাসের ভবনে অফিস নিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় লোকজনকে গ্রাহক বানিয়ে দৈনিক, মাসিক ও এককালীন বিনিয়োগ নেন তারা। প্রায় আড়াই কোটি টাকা নেওয়া হয়। 
টাকা দিয়ে তারা গড়ে তোলেন ভিআইপি সুপার শপ। যেখানে বিক্রি হতো ইলেকট্রনিক্স পণ্য।সমিতির ইলেকট্রনিক্স বিভাগের দায়িত্বে থাকা কয়রা এলাকার কার্তিক সরকার জানান, ওয়ালটনসহ তিন-চারটি কোম্পানির ফ্রিজ, রাইসকুকার, ফ্যানসহ ইলেকট্রনিক পণ্য তারা পাইকারিও বিক্রি করেন। শতাধিক ব্যবসায়ীকে এসব পণ্য দিতেন। সাধারণ সম্পাদক এসব দেখভাল করতেন।
ভবন মালিক পরিতোষ দাসের দাবি, সমিতিতে তার ১০ লাখ এবং তার দুই বন্ধুর আট লাখ টাকা রয়েছে। ৯ মাসের ভাড়াও বাকি রয়েছে। এ অবস্থায় বিপ্লব সরকার স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তার ধারণা, গ্রাহকদের টাকা নিয়ে ভারত চলে গেছেন বিপ্লব।
গ্রাহক কাজী তারেক বলেন, 'এক লাখ ৪২ হাজার টাকা ছিল আমার সমিতিতে। অনেক কষ্ট করে টাকা রেখেছিলাম, কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।'
নিলয় দাস নামের এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতি মাসে এক লাখে ১৪০০ টাকা লাভ দেওয়ার শর্তে সমিতিতে ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। টাকা ফেরত পেতে চান তিনি।
বিপ্লব সরকারের চাচাতো ভাই অনিক সরকার বলেন, 'গ্রাহকদের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আমানত রয়েছে সমিতিতে। বিপরীতে ৭০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। সমিতি ভালোই চলছিল, এই অবস্থায় কেন সাধারণ সম্পাদক পালিয়ে গেলেন জানি না।'
তিনি বলেন, 'যারা সমিতির কাছে টাকা পাবে তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এসে আমাদের শোরুমে তালা ঝুলিয়ে গেছেন।
বিপ্লব সরকারের মোবাইল ফোনে বারবার কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাড়িতে গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে। সপ্তাহখানেক আগে কোথায় যেন চলে গেছে বলে জানান তার প্রতিবেশীরা।
সমিতির সভাপতি মানিক দাস বলেন, বিভিন্ন সময় কাগজপত্রে তিনি শুধু স্বাক্ষর করতেন। টাকাপয়সা ও ম্যানেজমেন্ট দেখাশোনা করতেন সাধারণ সম্পাদক। তিনি দাবি করেন, তিনি কোনো টাকা নেননি, গ্রাহকও তার কাছে টাকা দেননি। বিপ্লবকে ফিরিয়ে এনে টাকা ফেরত দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্রাইম ডায়রি//ক্রাইম