হাইকোর্টে অর্থপাচারকারীদের তালিকা দিয়েছে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছে এমন ৬৯ জনের তালিকা উচ্চ আদালতে জমা দিয়েছে । যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন আইসিআইজের করা পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে উঠে আসা নাম থেকে এই তালিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।।

হাইকোর্টে অর্থপাচারকারীদের তালিকা দিয়েছে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট
ছবি-অনলাইন হতে সংগৃহীত

পানামা ও প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশের যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিএফআইইউ ও সিআইডি কী পদক্ষেপ নিয়েছে, ৬ ডিসেম্বর তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে হলফনামা আকারে আদালতকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকেই এ তালিকা দেওয়া হলো। তবে দুদকের তালিকায় পানামা ও প্যারাডাইস পেপারের বেশকিছু নাম বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু এসব নাম দেওয়া হলো না কেন তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। ওই বিষয়ে চাহিদাপত্র অনুসারে দুদককে কেন তথ্য দেওয়া হয়নি, সে বিষয়েও হলফনামা দিয়ে জানাতে বলা হয়। তবে বিএফআইইউর তালিকায় কোনো নাম বাদ দেওয়া হয়নি।

কালিমুল্লাহ দেওয়ান রাজাঃ

  বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছে এমন ৬৯ জনের তালিকা উচ্চ আদালতে জমা দিয়েছে । যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন আইসিআইজের করা পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে উঠে আসা নাম থেকে এই তালিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।।

   এতে  লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ভাই আজিজ খান ও তার পরিবার, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম, কাজী জাফর উল্লাহ ও তার পরিবারের নামও আছে। এছাড়া স্কয়ার গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী, ইউনাইটেড গ্রুপের হাসান মাহমুদ রাজা এবং আবদুল মোনেম গ্রুপের এএসএম মহিউদ্দিন মোনেমের নাম রয়েছে।

   তবে এদের কারও রাজনৈতিক পরিচয় বিএফআইইউর তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি। এর মধ্যে ১০ ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের বিষয়ে আর্থিক লেনদেন, বিদেশে অবস্থান ও ব্যাংক পরিচালনার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার এসব প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক প্রতিবেদনটি দাখিল করেন। তিনি জানান, রোববার উচ্চ আদালতে এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হবে।

    এর আগে, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর পূর্ব নির্দেশনা অনুসারে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৯ ব্যক্তি ও ১৪টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  প্যারাডাইস পেপারসে যাদের নাম রয়েছে এরা হলেন- মাল্টিমোড গ্রুপের আবদুল আউয়াল মিন্টু, তার স্ত্রী এনএফএম এনার্জি লিমিটেডের ফাতেমা নাসরিন আউয়াল, ছেলে মো. তাবিথ আউয়াল, মোহাম্মদ তাফসির আউয়াল, মোহাম্মদ তাজওয়ার আউয়াল।

পানামা ও প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশের যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিএফআইইউ ও সিআইডি কী পদক্ষেপ নিয়েছে, ৬ ডিসেম্বর তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে হলফনামা আকারে আদালতকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকেই এ তালিকা দেওয়া হলো। তবে দুদকের তালিকায় পানামা ও প্যারাডাইস পেপারের বেশকিছু নাম বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু এসব নাম দেওয়া হলো না কেন তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। ওই বিষয়ে চাহিদাপত্র অনুসারে দুদককে কেন তথ্য দেওয়া হয়নি, সে বিষয়েও হলফনামা দিয়ে জানাতে বলা হয়। তবে বিএফআইইউর তালিকায় কোনো নাম বাদ দেওয়া হয়নি।

   এছাড়া মেঘনা ঘাট পাওয়ার লিমিটেডের ফয়সাল চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওয়াই ফরিদা মোগল, শহীদুল্লাহ, সামির আহমেদ, সেভেন সিজ এসেট লিমিটেড, সোয়েন ইনফেস্টমেন্ট লিমিটেড, ব্রামার্স অ্যান্ড পাটনার্স লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ এক্সপ্লোরেশন লিমিটেড, ইউনোকল শাহবাজপুর পাওয়ার লিমিটেড, ইউনোকল শাহবাজপুর পাইপ লাইন লিমিটেড, এসএফএন এনার্জি (সিঙ্গাপুর) পিটিই লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক সেভেন লিমিটেড, ইউনোকল শাহবাজপুর লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক ফাইভ লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক টেন লিমিটেড, বারলিংক টন রিসোর্সেস বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লকস থার্টিন অ্যান্ড ফোরটিন লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক টুয়েলভ লিমিটেড, ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশ (বারমুন্ডা) লিমিটেড এবং টেরা বাংলাদেশ ফান্ড লিমিটেডের নামও আছে। পানামা পেপারসে যাদের নাম রয়েছে এরা হলেন-আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হংকং সাংহাই মানজালা টেক্সটাইল স্পিনিং মিলের কাজী জাফর উল্লাহ, স্ত্রী নিলুফার কাজী, ছেলে কাজী রায়হান জাফর।

   এছাড়া ক্যাপ্টেন সোহাইল হোসাইন (হাসান), স্পার্ক লিমিটেড ও অমনিকেমের চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম, বাংলা ট্র্যাক লিমিটেডের মো. আমিনুল হক, একই গ্রুপের নাজিম আসাদুল হক, তারিক ইকরামুল হক, আবদুল মোনেম লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক এএসএম মহিউদ্দিন মোনেম, একই গ্রুপের আসমা মোনেম, বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ড. এএমএম খান, মমিন টির পরিচালক আজমত মঈন, পাট ব্যবসায়ী এবং সিক্সসিজন বেভারেজ লিমিটেডের দিলীপ কুমার মোদী, অনন্ত গ্রুপের শরীফ জহির, মার্কেন্টাইল করপোরেশনের আজিজ খান, একই গ্রুপের পরিচালক আজিজ খানের স্ত্রী আঞ্জুমান আজিজ খান, মেয়ে আয়েশা আজিজ খান, ভাই জাফর উমায়েদ খান ও বোনের ছেলে ফয়সাল করিম খান, সি পার্লের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সিরাজুল হক, ইউনাইটেড গ্রুপের হাসান মাহমুদ রাজা, একই গ্রুপের খোন্দকার মঈনুল আহসান শামীম, আহমেদ ইসমাইল হোসেন, আখতার মাহমুদ, মাসকট গ্রুপের চেয়ারম্যান এফএম জোবায়দুল হক, সেতু করপোরেশনের মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সেতু করপোরেশনের উম্মে রাব্বানা, স্কয়ার গ্রুপের প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরী, বিবিটিএল, ক্যাপ্টেন এমএ জাইল/জলিল, এফএম জোবায়দুল হক, সালমা হক, খাজা শাহাদাৎ উল্লাহ, মীর্জা এম ইয়াহইয়া, সৈয়দা সামিনা মীর্জা, মো. আমিনুল হক, তারেক (তারিক) একরামুলক হক, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদ (শাহেদ) মাসুদ, মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ সিরাজুল হক ও জুলফিকার হায়দার।

ক্রাইম ডায়রি// আদালত