সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদঃ সিটি কর্পোরেশনে প্রতি ওয়ার্ডে কমিটি

সিটি করপোরেশনের মেয়রের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি সমন্বিতভাবে কাজ করবেন। ‘সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ’ মোকাবিলা করে ওয়ার্ডে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা এ কমিটির মূল উদ্দেশ্য।

সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদঃ সিটি কর্পোরেশনে প্রতি ওয়ার্ডে কমিটি
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর ফলে সামাজিক অবক্ষয় রোধে যথেষ্ট ভুমিকা রাখতে পারবে এই কমিটি।

আরিফুল  ইসলাম কাইয়্যুমঃ

মহানগরীর সব এলাকায় সম্প্রীতি ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। জুলাই  ২৮ ,২০২২ইং এর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক ওয়ার্ডে ‘সামাজিক-সম্প্রীতি কমিটি গঠন’ করার মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে। কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিভিন্ন্ন শ্রেণির প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত এ কমিটি ইস্যুভিত্তিক সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করবে। এদের কার্যক্রম তদারকি করতে সিটি করপোরেশনের মেয়রের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি সমন্বিতভাবে কাজ করবেন। ‘সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ’ মোকাবিলা করে ওয়ার্ডে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা এ কমিটির মূল উদ্দেশ্য।

কমিটি গঠন, সভা-সমাবেশের যাবতীয় ব্যয় সিটি করপোরেশনগুলো নিজস্ব (রাজস্ব) তহবিল থেকে হবে। প্রতি তিন মাসে অন্তত সম্প্রীতি সমাবেশ করে। এসংক্রান্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার বিভাগকে দিতে হবে। আর এ কমিটি কাজের সুবিধায় এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

 

মেয়র হবেন সিটির সভাপতি। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদাধিকার বলে সহসভাপতি হবেন। সদস্য হিসাবে থাকবেন-কাউন্সিলর প্রতিনিধি (৫ জন, ২ জন নারীসহ), বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ২ জন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক বা গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ২ জন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ১ জন, নারী সমাজ সেবক ১ জন, মসজিদের ইমাম ১ জন, মন্দিরের পুরোহিত ১ জন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ১ জন, পূজা উদ্যাপন কমিটির প্রতিনিধি ১ জন, স্বেচ্ছাসেবী ৫ জন (স্কাউট, গার্ল গাইড, বিএনসিসি ও এনজিও প্রতিনিধি)। আর কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা।

ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি থাকবেন কাউন্সিলর, সহসভাপতি হবেন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর। কমিটির সদস্য হিসাবে থাকবেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ১ জন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সদস্য ১ জন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক বা গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ২ জন, নারী সমাজ সেবক ১ জন, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ১ জন, সহকারী সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা ১ জন, মসজিদের ইমাম ১ জন, মন্দিরের পুরোহিত ১ জন, পূজা উদ্যাপন কমিটি বা পরিষদের সদস্য ১ জন, স্বেচ্ছাসেবী ৩ জন। এই কমিটির সদস্য সচিব হিসাবে থাকবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়ার্ড সচিব। স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনায় সিটি ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিকে ৬ ধরনের কাজ করতে বলা হয়েছে। সেগুলো হল-প্রথম. সংশ্লিষ্ট এলাকায় সম্প্রীতি-সমাবেশ, উদ্বুদ্ধকরণ সভা, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক ও সামাজিক বন্ধন সুসংহত রাখবে। দ্বিতীয়ত. জঙ্গিবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করতে প্রয়োজনীয় প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করবে। তৃতীয়ত. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার রোধকল্পে প্রয়োজনীয় প্রচার ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

চতুর্থ. মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ ব উপাসনালয়ের নিরাপত্তা বিধান কার্যকরে সহায়তা প্রদান করবে। পঞ্চম. সব ধর্মীয় উৎসব যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে উদ্যাপনের পরিবেশকে অক্ষুণ্ন রাখতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। ষষ্ঠ. বিভিন্ন ধর্মের শান্তি ও সৌহার্দের বাণী ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর ফলে সামাজিক অবক্ষয় রোধে যথেষ্ট ভুমিকা রাখতে পারবে এই কমিটি। ফলে  ইভটিজিং রোধ সহ কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব কমে আসবে।

ক্রাইম ডায়রি/ মহানগর