হল ত্যাগ না করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছাত্ররা-ব্যবসায়ীদের দূর্ব্যবহারের অভিযোগ গণমানুষের

আমরা ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে সুন্দর সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছি। তিনি যদি না পারেন তাহলে তার পদত্যাগ দাবি করছি।

হল ত্যাগ না করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছাত্ররা-ব্যবসায়ীদের দূর্ব্যবহারের অভিযোগ গণমানুষের
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফুয়াদ হাসান বলেন, প্রয়োজনে আমরা লাশ হয়ে বের হবো। তবু হল-ক্যাম্পাস ছাড়ব না

মহানগর সংবাদদাতাঃ

রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ঢাকা কলেজের সব আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের ভাষ্য, যে কোনো মূল্যে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন তারা।প্রয়োজনে লাশ হবেন, তবু হল এবং ক্যাম্পাস ছাড়বেন না।

মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টায় ঢাকা কলেজের শহীদ আ ন ম নজিব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে সম্মিলিতভাবে ছাত্রনেতারা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়ে এসব কথা বলেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণসহ ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন।তার আগে আবাসিক হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা।

ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফুয়াদ হাসান বলেন, প্রয়োজনে আমরা লাশ হয়ে বের হবো। তবু হল-ক্যাম্পাস ছাড়ব না।

https://fb.watch/cuJn_JAlL_/

 

তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে সুন্দর সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছি। তিনি যদি না পারেন তাহলে তার পদত্যাগ দাবি করছি।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের বিকালের মধ্যে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেয় ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এটিএম মইনুল হোসেনকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে।এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হল বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।

পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, হল বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমাধান নয়। প্রয়োজনে মার্কেট বন্ধ হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল নয়।

এক দোকানে খাবারের বিল পরিশোধ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে সোমবার মধ্যরাতে দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রায় আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে রাত আড়াইটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আবারো চলে এ সংঘর্ষ।দুপুরের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া শুরু করলে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

এ পরিস্থিতিতে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ বিকালের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। আগামী ৫ মে পর্যন্ত হল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের দূর্ব্যবহারের বর্ননা দিয়ে ও নিউজের কমেন্ট বক্সে নিউমার্কেট ব্যবসায়ীদের কাস্টমারের সাথে দূর্ব্যবহার ও ইভটিজিং এর ভয়াবহ বর্ননা আসছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ও আহবান সুশীল সমাজের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে facebook/Sakir Hossain এর একটি পেইজের বর্ননা পাঠকের জন্য হুবহু তুলে দেয়া হলো-

"

ঢাকায় প্রায় ১৪ বছর অবস্থানকালে নিজের তো বটে, বিশেষ করে ছেলের এক্সপার্ট কোয়ালিটির কাপড় কিনতে প্রায়ই যেতাম নিউমার্কেট এলাকায়। একজন বিক্রেতার আচার ব্যবহার ঠিক যেমনটা হওয়া উচিত, ক্রেতা হিসেবে তেমন স্বস্তিবোধ আমার হয়নি কখনই।

"কাপড় কিনবেন না, দাম করেন ক্যান ?"
"কইত্থিক্যা যে আহে এইসব !"
"কিনবার আইছেন, নাকি দেখবার আইছেন ?"
"এই দামের কাপড় ভ্যান থিক্যা কিনবেন, মার্কেটে না।"

পছন্দ কিংবা দরদামে না মিললে ক্রেতা চলে যাবার সময় পেছন থেকে মাথায় রক্ত ওঠার মত আরও অনেক "ব্যাড টোন" হরহামেশাই এরা প্রয়োগ করে। আর নিরীহ ক্রেতা লজ্জায়, গন্ডগোলের আশংকায় কিংবা মানসম্মানের ভয়ে মুখবুজে সহ্য করে।

আবার কোনো ক্রেতার সাথে সামান্য বাকবিতন্ডা হলেই, ব্যবসায়ীরা যেনো সংঘবদ্ধ আক্রমণ করতে একরকম সদাপ্রস্তুত থাকে। আর এসব নোংরা ব্যবহার ও অপদস্তের স্বীকার শুধু ছাত্র-ছাত্রী নয়, বরং অভিভাবক শ্রেণীর ক্রেতারাই বেশী হয়ে থাকেন।

এক কথায় নিউমার্কেট, গাউসিয়ার হকার্স ব্যবসায়ীদের আচরণ অত্যন্ত উগ্র এবং মাস্তানী স্বভাবের। তাই তাদের এই চর্চা কঠোর হাতে দমন করা উচিত বলে মনে করি।

তবে এটাও ঠিক, বিভিন্ন কারনে অনেক ছাত্রদেরও সাধু বলার কোনো সুযোগ নেই।"

ক্রাইম ডায়রি // আইন শৃঙ্খলা