কোম্পানীর নামে ইনভেষ্ট নেয়া পাঁচ প্রতারক গ্রেফতারঃ সাবেক সচিবসহ অনেকেই হারিয়েছেন শেষ সঞ্চয়

Five fraudsters arrested in the name of the company have been arrested - many including the former secretary have lost their last savings

কোম্পানীর নামে ইনভেষ্ট নেয়া পাঁচ প্রতারক গ্রেফতারঃ সাবেক সচিবসহ   অনেকেই হারিয়েছেন শেষ সঞ্চয়

ক্রাইম ডায়রি ডেস্কঃ

প্রতারক চক্রের প্রতারণা নতুন কিছু নয়। নানান উসিলায় নানান রুপ ধারণ করে প্রতারণা করে এই চক্র। পুরো রাজধানীতে এমন অনেক প্রতারকচক্রের গল্প শোনা যায়।।। সম্প্রতি, এমনই এক প্রতারক চক্র ধরা পড়েছে রাজধানীতে। তারা রাজধানীতে পুরো বাড়ি ভাড়া নেন তারা। কম বেতনে নয়, তাদের কাছে চাকরি মানে ন্যূনতম ১ লাখ টাকা বেতন। তাদের সব ব্যবসাও দেশের বাইরে। ব্যবসায়ের আলোচনাতেও যুক্ত থাকেন বিদেশি ব্যবসায়ীরা। তারা সবাই রয়েল চিটিং ডিপার্টমেন্ট বা আরডিসি’র সদস্য। এ নাম দিয়েছেন তারা নিজেরাই। বিভিন্ন পেশাজীবী বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অথবা বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় আরডিসি চক্রের সদস্যরা।

প্রতারক চক্রের প্রতারণা নতুন কিছু নয়। নানান উসিলায় নানান রুপ ধারণ করে প্রতারণা করে এই চক্র। পুরো রাজধানীতে এমন অনেক প্রতারকচক্রের গল্প শোনা যায়।।। সম্প্রতি, এমনই এক প্রতারক চক্র ধরা পড়েছে রাজধানীতে। তারা রাজধানীতে পুরো বাড়ি ভাড়া নেন তারা। কম বেতনে নয়, তাদের কাছে চাকরি মানে ন্যূনতম ১ লাখ টাকা বেতন। তাদের সব ব্যবসাও দেশের বাইরে। ব্যবসায়ের আলোচনাতেও যুক্ত থাকেন বিদেশি ব্যবসায়ীরা। তারা সবাই রয়েল চিটিং ডিপার্টমেন্ট বা আরডিসি’র সদস্য। এ নাম দিয়েছেন তারা নিজেরাই। বিভিন্ন পেশাজীবী বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অথবা বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় আরডিসি চক্রের সদস্যরা। এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপরই বের হয়ে আসে থলের বিড়াল।  ডিসেম্বর ১৮,২০২০ ইং  শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সু্ত্রে জানা গেছে, রাজধানীর গুলশান, ভাটারা ও ভাষানটেক থানা এলাকায় সোমবার বিকাল ৪টা থেকে রাত পৌঁনে ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ডিবির একটি দক্ষ টিম পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।  এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত একটি ব্রিফকেস, ফাইলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া ৮৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিনব ও কুটকৌশলে প্রতারণা করে মানুষ ঠকানোর অভিযোগ রয়েছে। এ চক্রের কোম্পানীতে একজন ঠকে কিংবা ঠকা হতে উদ্ধার পেতে এনেছেন আরও অনেক ইনভেষ্টর। যখন সবাই ঠকেছেন তখন বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামায় সবাই।

গ্রেফতারকৃতরা যথাক্রমে- শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান (৫২), মোহাম্মদ আলী (৫৯), সুমন আহমেদ (৩৩), তোফায়েল হোসেন রতন (৬০) ও এম আজাদ (৪৮)।  ডিবি পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বিগত দুই যুগ হলো  ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই প্রতারকচক্র বিভিন্ন অভিনব ও কুটকৌশলে প্রতারণা করে আসছিল। এভাবে তারা সাবেক সচিবসহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় প্রতারকদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। তাদের অন্য সহযোগীদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রতারকদের একটি অংশ এক সময় প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রতারকরা কোম্পানী খুলে সেই কোম্পানীকে সুন্দর অফিসে সাজিয়ে বিরাট আকার ধারন করিয়ে ইনভেষ্ট কিংবা পরিচালক নেয় । এরপর সেই ইনভেষ্টমেন্ট নিয়ে প্রতারণা করে।

গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, আটক সবাই এই প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা প্রতারণা করার জন্য প্রথমে ছদ্মনাম ধারণ করে। ভালো পোশাক এবং চালচলন দেখিয়ে অভিজাত এলাকায় বাসা অথবা ফ্ল্যাট ভাড়া করে। গর্জিয়াস আসবাবপত্র দিয়ে অফিস সাজায়। একটি গ্রুপ বিভিন্ন পেশাজীবীকে টার্গেট করে। টার্গেটের শীর্ষে থাকে অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা অথবা কোনো বড় ব্যবসায়ী যারা প্রতিনিয়ত টাকা-পয়সা লেনদেন করেন। অনেক সময় তারা বাসা ভাড়া নেয়ার নাম করে কারও বাড়িতে যায়। কখনও কখনও বড় ধরনের ব্যবসার কথা জানিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করার জন্য লোকজনকে আমন্ত্রণ জানায়। ভাড়া করা অফিসে টাগের্ট লোকদের নেয়া হয়। একপর্যায়ে নানা ধরনের ছলচাতুরীর মাধ্যমে ভিকটিমদের বিমোহিত করা হয়। কেউ কেউ বিদেশি বড় ব্যবসায়ী সাজে। যাদের বিহারি বা ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে রাচি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে তারা। অনেক সময় আবার বলে থাকে জাপান-বাংলাদেশ জয়েন্ট ভেঞ্চারে বড় কোনো ব্যবসা করবে। এ ধরনের প্রলোভনে পা ফেলে অনেক সময় ভিকটিম সর্বস্ব হারায়। প্রতারকরা টাকা নেয়ার পরপরই তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। অফিস ত্যাগ করে লাপাত্তা হয়। এভাবে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা।

ডিসি গুলশান বিভাগ সাংবাদিকদের জানান, ইদানিংকালে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ঘটনা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নজরে এসেছে। গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগ ইতোমধ্যে আটটিরও বেশি অফিস চিহ্নিত করে এবং অভিযান পরিচালনা করে। অল্প কিছুদিন আগেই একাধিক গ্রুপকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।  বিভিন্ন থানার একাধিক মামলা সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় এক মামলায় ৯৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আরেক মামলায় ১৪ লাখ টাকা, ভাটারা থানার এক মামলায় ৫৬ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের মামলা রয়েছে। মামলাগুলো করার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি এর ছায়া তদন্ত করে। তদন্তের এক পর্যায়ে ভয়ংকর এ চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ।সুদীর্ঘ সময় ধরে এ চক্র প্রতারণা করে আসলেও ভুক্তভোগীরা কারো নিকট উপযুক্ততার সাথে অভিযোগ করতে না পারায় তারা ধরাছোয়ার বাইরে ছিল।

গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, লোভে পড়ে নির্বুদ্ধিতা থেকে মানুষ তাদের ফাঁদে পা দেয়। পরে ধরা খেয়ে যায়। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

ক্রাইম ডায়রি///ক্রাইম