শেখ হাসিনার চমক দেখালেন: বিরোধীদের মুখে চুনকালি

কেউ কেউ সন্দিহান ছিল, শেখ হাসিনা এতো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও কূটনৈতিক মারপ্যাঁচ মোকাবেলা করতে পারবেন কিনা। 

শেখ হাসিনার চমক দেখালেন: বিরোধীদের মুখে চুনকালি
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত
জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের ঠিক আগের দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিনজন রাষ্ট্রনায়কের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তারা হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জগন্নাথ। 
 ড. সেলিম মাহমুদঃ

নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস বাকি থাকতে শেখ হাসিনা একের পর এক যে চমক দেখাচ্ছেন তাতে বাংলাদেশ বিরোধী অশুভ শক্তির মুখে চুনকালি লেগেছে। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারকে যে কোনো মূল্যে উৎখাতের লক্ষ্যে যে বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল সেই ষড়যন্ত্র যে ভন্ডুল হয়েছে সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের এবারের নির্বাচন নিয়ে নানা বিদেশি ষড়যন্ত্র এবং অশুভ কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছিল। কেউ কেউ সন্দিহান ছিল, শেখ হাসিনা এতো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও কূটনৈতিক মারপ্যাঁচ মোকাবেলা করতে পারবেন কিনা। 

নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস পূর্বে ভারতে অনুষ্ঠিত জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে সুউচ্চ মর্যাদা দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাতে বুঝা গিয়েছে শুধু ভারতই যে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সেটি নয়, বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে তথা বিশ্ব ব্যবস্থায় শেখ হাসিনার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সরকার প্রধান যিনি এই জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছেন। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল সম্মান। শুধু তাই নয়, জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের ঠিক আগের দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিনজন রাষ্ট্রনায়কের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তারা হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জগন্নাথ। 

এতে বুঝা যায়, ভারতের কাছে শেখ হাসিনার গুরুত্ব ও সম্মান কতটুকু। বাইডেনের সাথে নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের আগে শেখ হাসিনার সাথে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। কূটনৈতিক পর্যায় থেকে জানা যায়, ভারত বাংলাদেশের পাশেই রয়েছে। গোটা পৃথিবী যেভাবেই দেখুক না কেন, ভারত বাংলাদেশকে দেখে তার মতোই। কারণ বাংলাদেশের সাথে ভারতের রয়েছে নিবিড় এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব। বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় স্বার্থ একই সূত্রে গাথা। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে একমাত্র শেখ হাসিনাই প্রকৃত জাতীয়তাবাদী নেতা, যিনি বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জাতীয় স্বার্থ সমানভাবে রক্ষা করতে পারেন। সেটি ভারত মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। আর আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তি যে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিদেশিদের কাছে বিকিয়ে দিতে পারে সেটি সকলেরই জানা। বাংলাদেশের তিনদিকে ভারতের অবস্থান থাকায়, বাংলাদেশের স্বার্থ বিদেশিদের কাছে বিকিয়ে দেওয়া ভারতের জন্যও ক্ষতিকর। এটি ভারত ভালোভাবেই জানে। 

 

দু’দিন পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফর করবেন। এই সফরে দুই রাষ্ট্রনায়কের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। নির্বাচনের ঠিক তিন মাস আগে ফ্রান্সের মতো প্রভাবশালী রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর অবশ্যই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রসমূহের যে আস্থা রয়েছে, এটি তার পরিচায়ক। এছাড়া দুই দিন আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বাংলাদেশ সফর করেছেন। রাশিয়ার কোন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটিই বাংলাদেশে প্রথম সফর।বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এর পুরো কৃতিত্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার। 

দেশি-বিদেশি বহু ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচনের আগে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং অসংখ্য ভৌত কাঠামো স্থাপন করে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছেন। এদেশের মানুষ এখন শুধু অপেক্ষা করছে ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনার প্রতি তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন জানানোর জন্য।

লেখক : আইনজ্ঞ এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।