শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বদলে যাওয়া এক অন্যরকম বাংলাদেশ

Bangladesh has changed under the leadership of Sheikh Hasina

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বদলে যাওয়া এক অন্যরকম বাংলাদেশ

আতিকুল্লাহ আরেফিন রাসেলঃ

দৃশ্যমান উন্নয়ন সংগঠিত হওয়ায় মানুষকে আর ক্ষমতার পালা বদলের গল্প শোনাতে হয়না।। জনগন চায় শান্তি আর উন্নয়ন। তাই পালা বদলের স্বপ্ন না দেখে মানুষ এখন স্বপ্ন দেখে খেয়ে বাঁচার। শান্তিতে ঘুৃমাবার। এক অপরুপ বাংলাদেশের। সেই স্বপ্ন এখনে বাস্তবে রুপ নিয়েছে। পদ্মা সেতু,মেট্রোরেল, এইট লেনের হাইওয়ে, এক্সপ্রেস ওয়ে, সুরঙ্গ পথ, ফ্লাইওভার আরও কত কি??  দৃষ্টিনন্দন এই উন্নয়নের দৃশ্য দেখে এখন গর্বেও বুকের ছাতি ফুলে ওঠে প্রতিজন বাঙালির। আর এসবের মূল কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুযোগ্য কন্যা বঙ্গকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

দৃশ্যমান উন্নয়ন সংগঠিত হওয়ায় মানুষকে আর ক্ষমতার পালা বদলের গল্প শোনাতে হয়না।। জনগন চায় শান্তি আর উন্নয়ন। তাই পালা বদলের স্বপ্ন না দেখে মানুষ এখন স্বপ্ন দেখে খেয়ে বাঁচার। শান্তিতে ঘুৃমাবার। এক অপরুপ বাংলাদেশের।।

সরকারের টানা ক্ষমতায় দেশের রাজনীতিসহ সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ শেখ হাসিনার হাতে থাকলেও সে পথ কিন্তু এত মসৃণ ছিল না। কথায় আছে না,"কাঁটা হেরী ক্ষান্ত কোন কমল তুলিতে,দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে"।।

জ্বালাও-পোড়াও, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাসহ দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র, বাধা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে একটু একটু করে এগোতে হয়েছে তাকে। বর্তমান সরকারের সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রীড়া, পরিবেশ, কৃষি, খাদ্য, টেলিযোগাযোগ, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এমন কোনো খাত নেই যে খাতে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মাতৃত্ব এবং শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও।

দেশ আর্থ-সামাজিক সূচকসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রত্যাশাজনক সাফল্য অর্জন করেছে এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ এখন মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কাজ অব্যাহতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রবৃদ্ধি ৫.৫৭ থেকে ৭.২৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৮৪৩ থেকে ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার, বিনিয়োগ ২৬.২৫ শতাংশ থেকে ৩০.২৭ শতাংশ, রফতানি ১৬.২৩ থেকে ৩৪.৮৫ বিলিয়ন ডলার, রেমিট্যান্স ১০.৯৯ থেকে ১২.৭৭ বিলিয়ন ডলার, রিজার্ভ ১০.৭৫ থেকে ৩৩.৪১ বিলিয়ন ডলার এবং এডিপি ২৮৫ বিলিয়ন টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১০৭ বিলিয়ন টাকা।

নানান ষড়যন্ত্রের কারনে বিশ্বব্যাংক যখন এ দেশে অর্থায়ন হতে সরে দাঁড়াল তখন অসীম সাহস নিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করে নিজস্ব অর্থে পদ্মার ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করার সাহস দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার পর বিশাল এ প্রকল্প হাতে নেয়ার ঘটনা অনেক দেশ ও সংস্থার সন্দেহ ও বিস্ময় প্রকাশ করলেও সে স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে বাংলাদেশ। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের পর থেকে দেশ এখন বিশ্বের ৩১টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তালিকায়। ২০৪১ সালে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগও চলমান। রয়েছে মহাকাশ জয়ের লক্ষ্য। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণ করা সম্ভাব হয়েছে। দুই হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ উপগ্রহ সফলভাবে মহকাশে গেলে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হয়েছে বাংলাদেশ। 

এ ছাড়া মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসহ আরো কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। দেশের প্রথম ৬ লেনের ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ জানুয়ারি ফেনী জেলার মহিপালে এই ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন। দেশের আইটি খাতের নতুন সম্ভাবনা যশোরে ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ প্রধানমন্ত্রী ১০ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেছেন। মাতারবাড়িতে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) সুমিতোমোর নেতৃত্বাধীন জাপানি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এছাড়াও, শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও নিজ দক্ষতার কারনে বর্তমান সরকারের শাসন আমলেই কোনো রকম যুদ্ধ-সংঘাত বা বৈরিতা ছাড়াই দুই প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের বিপক্ষে সমুদ্র বিজয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল এলাকায় একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপান এলাকার প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীনতার পরপর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে স্থল সীমান্ত চুক্তি হয়েছিল সম্প্রতি তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করা বাংলাদেশের বড় অর্জন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সর্বশেষ রোহিঙ্গা ইস্যুতেও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা পেয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশ ও সংস্থা এই ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ উপাধি। তলাহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি খাদ্য, বস্ত্র-চিকিৎসার দায়িত্বও পালন করছে। এই য়ে মানবিকতা, এই যে সাহস এগুলো আর বইপড়া বুলি নয় বরং দৃশ্যমান বাস্তব।আর এ কারনেই পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস, বিশ্বের পাঁচজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে চিহ্নিত করেছেন, যাদের দুর্নীতি স্পর্শ করেনি, বিদেশে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, উল্লেখ করার মতো কোনো সম্পদও নেই। বিশ্বের সবচেয়ে সৎ এই পাঁচজন সরকারপ্রধানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও কাজের অবদানের জন্য তাকে নানা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে।

২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাকে ‘শান্তির বৃক্ষ’ ও ২০১৫ সালে ওমেন ইন পার্লামেন্টস গ্লোবাল রফারাম নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাকে রিজিওনাল লিডারশিপ পুরস্কার এবং গ্লোবাল সাউথ-সাউথ ডেভলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ ভিশনারি পুরস্কারে ভূষিত করে। বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন, খাদ্য উৎপাদনে সয়ম্ভরতা অর্জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে অবদানের জন্য আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ সালে তাকে সম্মাননা সনদ প্রদান করে। জাতিসংঘ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনাকে তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ-২০১৫’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে।

টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের প্রভাবশালী ১০ নারী নেত্রীর একজন মনোনীত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। একজন জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা সবসময় নিজেকে প্রমাণ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক খালিজ টাইমস রোহিঙ্গাদের সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তাকে ‘নিউ স্টার অব দ্য ইস্ট’ বা ‘পূর্বের নতুন তারকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
সেই সঙ্গে গত কয়েক বছরে ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করছে। ভূমি ব্যবস্থা ডিজিটাইজেশনের ফলে মানুষের দুর্ভোগ কমছে। ই-টেন্ডারিং, ই-জিপির ফলে দুর্নীতি কমছে। ১০ টাকায় কৃষক ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ, মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করার ঘটনাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদাহরণ হিসেবে কাজে লাগছে।

একটি কথা অনস্বীকার্য যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ গবেষক। তার থিসিস হলো বাংলাদেশ নিয়ে।সুতরাং, এ দেশ সন্পর্কে সম সাময়িকেরা যতই ভাবুক না কেন তাদের চেয়ে তার ভাবনা সবসময় এক ধাপ এগিয়েই থাকে। তাই বিরোধী পক্ষ জনতার বিদ্রোহের কথা বললেও জন বিদ্বেষ দেখা যায়না। অভাব যে নেই তা টিভি ফ্রিজ কিংবা সৌখিন দ্রব্য বিক্রি দেখেও অনুমান করা যায়। এ দেশের মানুষ কি চায় আর কিভাবে চায় শেখ হাসিনা সেটা বোঝেন দেখেই এখনও তিনি ক্ষমতার মসনদে বসে আছেন।।

(সংকলিত)

সংকলক--

আতিকুল্লাহ আরেফিন রাসেল 

সম্পাদক ও প্রকাশক 

ক্রাইম ডায়রি ও গোয়েন্দা ডায়রি 

কেন্দ্রীয় সভাপতি 

জাতীয় সাংবাদিক পরিষদ 

ক্রাইম ডায়রি // জাতীয়