দেশে ফিরেছেন ডাঃ মুরাদঃ জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি ইমিগ্রেশনের

তিনি টিকার ডাবলডোজ এবং সার্টিফিকেট ছাড়াই ইমিগ্রেশনের মুখোমুখি না হয়ে কিভাবে দেশত্যাগ করলেন তা নিয়ে বিমানবন্দরে নামার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে ডা. মুরাদকে।

দেশে ফিরেছেন ডাঃ মুরাদঃ জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি ইমিগ্রেশনের
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

ক্রাইম ডায়রি ডেস্কঃ

বিতর্কের ঝড় তুলে হয়েছেন ভাইরাল, অবশেষে পদ হারিয়ে; গদ হারিয়ে হতে চেয়েছেন দেশান্তরী। কিন্তু বিধি বাম, তাই ঘরের ছেলেকে ঘরেই ফিরতে হয়েছে। সদ্য পদত্যাগী তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান কানাডায় ঢুকতে পারেননি এরপর দুবাইয়েও ঢুকতে না পেরে  তাকে দেশেই ফিরতে হয়েছে।

ডিসেম্বর ১২,২০২১ইং রোববার বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান,ডাঃ মুরাদ এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে ৫৮৬ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন। বিমানবন্দরে নামার পর সাংবাদিকদের এড়াতে মুরাদ হাসান আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ব্যবহার না করে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে বের হন। তিনি সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

তিনি টিকার ডাবলডোজ এবং সার্টিফিকেট ছাড়াই ইমিগ্রেশনের মুখোমুখি না হয়ে কিভাবে দেশত্যাগ করলেন তা নিয়ে বিমানবন্দরে নামার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে ডা. মুরাদকে। করোনার ডাবল ডোজ টিকার জন্যও কানাডায় ঢুকতে পারেননি তিনি।  অন্যদিকে মুরাদ ট্রানজিটের যাত্রী হওয়ায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখিও হতে হয়েছে তাকে।

উল্লেখ্য যে, মুরাদ হাসান একটি ফ্লাইটে স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ১টা ৩১ মিনিটে টরেন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এ সময় কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে তাকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। পরে তাকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেওয়া হয়। বিপুলসংখ্যক কানাডিয়ান নাগরিক কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন বলেও তাকে জানানো হয়।

এ ছাড়া করোনাকালীন চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র না দেখাতে পারায় তাকে কানাডার টরেন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কানাডার বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ফেরত পাঠিয়েছে বলেও দেশটির স্থানীয় বাংলা অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়। অনলাইন পোর্টালের খবরে বলা হয়, কানাডায় বসবাসরত মুরাদের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।

ফলে কানাডায় মুরাদ হাসানকে ঢুকতে না দেওয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণও হচ্ছে তার কাছে করোনার ডাবল ডোজের টিকার সনদ না থাকা। এখন প্রশ্ন উঠেছে, কানাডা ইমিগ্রেশনে আটকেপড়া মুরাদ কীভাবে করোনা সনদ ও কোভিড প্রটোকল না মেনে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগ করলেন।

এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হয় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের। এক প্রশ্নের জবাবে  শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক তৌহিদুল আহসান বিষয়টি দেখার দায়িত্ব তাদের নয়।তিনি বলেন, বিমানবন্দর দিয়ে যে যাত্রীই বাইরের দেশে যান সেসব বহির্গমন যাত্রীদের স্বাস্থ্য সনদ চেক করা, ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট চেক করার দায়িত্ব সিভিল এভিয়েশনের। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নয়। আমরা ইমিগ্রেশন করি, যাত্রীদের সেবা দেই। ইমিগ্রেশন শাখা ইমিগ্রেশন করবে, স্বাস্থ্যের কাজ স্বাস্থ্য করবে। মুরাদ সংক্রান্ত তথ্য জানতে হলে আপনাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করলে তারা ভালো উত্তর দিতে পারবেন।

মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইমিগ্রেশনের জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও।তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো কথা বলেননি।

ক্রাইম ডায়রি/রাজনীতি