আমিন বাজার ট্রাজেডিঃ ৬ ছাত্র হত্যায় ১৩ জনের মৃত্যুদন্ড
ডাকাতের তকমা লাগিয়ে নিরীহ ০৬ ছাত্রকে দেশীয় অস্ত্র ও গণপিটুনি দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল সেই রাতে।
সাভার আমিনবাজারের ট্রাজেডির কথা মনে পড়লে এখনও গাঁ শিহরিয়ে ওঠে।। তরতাজা একদল তরুন ছাত্রদের কোন কারন ছাড়াই পিটিয়ে হত্যা করেছিল হুজুগি জনতা। লাগিয়েছিল ডাকাতি তকমা।
মোঃ মাসুদ, সাভার উপজেলা সংবাদদাতাঃ
সাভারের আমিনবাজারের ট্রাজেডির কথা মনে পড়লে এখনও গাঁ শিহরিয়ে ওঠে।। তরতাজা একদল তরুন ছাত্রদের কোন কারন ছাড়াই পিটিয়ে হত্যা করেছিল হুজুগি জনতা। লাগিয়েছিল ডাকাতি তকমা।
বেদনাদায়ক এই ঘটনায় মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ১০ বছরেরও বেশি সময় পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা হলো।
পহেলা ডিসেম্বর,২০২১ইং বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহান এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলার আসামি ৬০। তাদের মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন, তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাকি ৫৭ আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন মিলিয়ে ৩২ জনকে সাজা দিয়েছেন আদালত। বাকি ২৫ জনকে মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
গত ২২ নভেম্বর, ২০২১ইং ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। মামলায় ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৫৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দেওয়া হলো।
আদালত সূত্রে জানা গেছে , ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে সাভারে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ছয় কলেজছাত্রকে। নিহতরা হলেন-তৌহিদুর রহমান পলাশ, ইব্রাহিম খলিল, কামরুজ্জামান, টিপু সুলতান, সিতাব জাবির মুনিব ও শামস রহিম শামীম। নিহতদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে যান।
ঘটনার পর কথিত ডাকাতির অভিযোগে বেঁচে যাওয়া আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক। ওই সময় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে।
পুলিশ, সিআইডির হাত ঘুরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তভার র্যাবের হাতে দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘আসামিরা নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করে।
পরবর্তী সময়ে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেয় এবং থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে। বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়।’ ২০১৩ সালের ৮ জুলাই ৬০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভিকটিম আল-আমিনকে একই ঘটনায় করা ডাকাতি মামলা থেকে সেদিন অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় ১৪ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
ক্রাইম ডায়রি // আদালত