বগুড়ায় ডিজে পার্টির শিল্পীকে ধর্ষণ; কলাবাগান ট্রাজেডিঃ কেন ধর্ষণ, কি হতে পারে প্রতিকার??
Rape of DJ party artist in Bogra; Kalabagan tragedy: Why rape, what can be the remedy ??
বর্তমানে ধর্ষণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হচ্ছে, নগ্নতা, অশ্লীল ছায়াছবি প্রদর্শন, ব্লু-ফিল্ম, অশ্লীল ছবি সম্বলিত যৌন উত্তেজক অবৈধ পত্র পত্রিকা ও চলচ্চিত্রে ধর্ষণের দৃশ্য উপস্থাপন করার ফলে আজ যুব সমাজের মধ্যে দিন দিন ধর্ষণ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধর্ষণের আরো একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও অভিভাবকরা ছেলেদের বিয়ের ব্যবস্থা না করা। অভিভাবকরা যথাসময়ে ছেলেদের বিয়ে না করানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে বেকার সমস্যা। আর এ বেকার সমস্যা থেকেই সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ধর্ষণ। এই ভয়ানক সংকট থেকে বের হয়ে আসতে হলে সরকারকে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতেই হবে। আর আমাদের নাগরিকদের প্রতি মূহুর্তে এই অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। যেখানে ঘটনা সেখানেই দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর চাই কার্যকর আইন প্রয়োগ।
বগুড়া ব্যুরো অফিসঃ
সম্প্রতি উৎশৃঙ্খলতা,ধর্ষন যে হারে বাড়ছে তাতে আশংকা হয় হয়তোবা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগের লোকেরাও এযুগের সভ্য মানুষের কার্যকলাপে লজ্বজা পেয়ে যেত।। রাজধানীর কলাবাগান ট্রাজেডির রেশ কাটেনি এখনও। বগুড়ায় ডিজে পার্টির এক শিল্পীকে (১৪) একাধিকবার ধর্ষণ ও তার ভাগ্নিকে (১৩) ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
ধর্ষণের কারণ ও প্রতিকারঃ-
যারা নিয়মিত পত্রিকা পড়ে তাদের কাছে ধর্ষণ শব্দটা বেশি পরিচিত। বর্তমানে পত্রিকা হাতে নিলে দেখা যায় এমন কোন দিন বাদ নেই যে, ধর্ষণের খবর আসে না। পত্রিকার খবর ছাড়াও দেশের আনাচে কানাচে কত নারী যে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে তার কোন হিসেব নেই। আগে ধর্ষণ হতো গোপনে আর এখন ধর্ষণ হয় প্রকাশ্যে খোলা মাঠে। যেখানে একজন নারীকে হাত পা বেঁধে দল বেধে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হচ্ছে। যাকে গণধর্ষণ বলা হয়। ধর্ষণকারীরা শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি, ধর্ষণের পর খুন করা হয় ধর্ষিতাকে। মা-বাবার সামনে মেয়েকে, ভাইয়ের সামনে বোনকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এসব করেও ধর্ষকরা শান্তি পাচ্ছে না। তারা এখন ধর্ষণের দৃশ্যকে ভিডিও করে ব্লু-ফিল্ম বানিয়ে ব্যবসা করছে। ইন্টানেটে ও ধর্ষণের ভিডিও লোড করা হচ্ছে। যা জাহেলিয়াতের যুগকে হার মানাচ্ছে।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ। এ দেশের ৯০% মানুষ মুসলমান। অথচ এ দেশেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনে ধর্ষণের সেঞ্চুরী হয়। তারপর ও ধর্ষক বুক ফুলিয়ে রাস্তায় হাঁটে। অথচ এ দেশের সরকার পারেনি তার বিচার করতে। এ যদি হয় দেশের অবস্থা তাহলে কিভাবে আমাদের মা বোনরা রাস্তা ঘাঠে চলাফেরা করবে? এ দেশের একজন নাগরিক হয়ে লজ্জায় রাস্তায় বের হতে ইচ্ছে করে না। যে দেশের সরকার ও প্রধান বিরোধী দলসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের অবস্থান সে দেশের নারী সরকার পারেনি ধর্ষণকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে। তাহলে কিভাবে এ দেশের অসহায় নারীরা ধর্ষণের হাত থেকে রেহায় পাবে।
আজ তিন বছরের শিশু কন্যা হতে শুরু করে সত্তর বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অথচ কেন হচ্ছে অহরহ ধর্ষণ? তার মূল কারণ কি তা আমরা খুজে দেখছি? ধর্ষণের নেশায় কিছু মানুষারূপী নরপশুরা এসব নিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে যা ভাষায় প্রকাশ করা দুষ্কর। গুটি কয়েক দুষ্ট মানুষের কারণে আজ সমস্ত মানুষ অপরাধী। যতই দিন যাচ্ছে ততই ধর্ষণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বর্তমানে ধর্ষণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হচ্ছে, নগ্নতা, অশ্লীল ছায়াছবি প্রদর্শন, ব্লু-ফিল্ম, অশ্লীল ছবি সম্বলিত যৌন উত্তেজক অবৈধ পত্র পত্রিকা ও চলচ্চিত্রে ধর্ষণের দৃশ্য উপস্থাপন করার ফলে আজ যুব সমাজের মধ্যে দিন দিন ধর্ষণ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধর্ষণের আরো একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও অভিভাবকরা ছেলেদের বিয়ের ব্যবস্থা না করা। অভিভাবকরা যথাসময়ে ছেলেদের বিয়ে না করানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে বেকার সমস্যা। আর এ বেকার সমস্যা থেকেই সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ধর্ষণ। এই ভয়ানক সংকট থেকে বের হয়ে আসতে হলে সরকারকে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতেই হবে। আর আমাদের নাগরিকদের প্রতি মূহুর্তে এই
অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। যেখানে ঘটনা সেখানেই দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর চাই কার্যকর আইন প্রয়োগ।
বগুড়া ধর্ষণের শিকার ওই শিল্পীর বাবা সদর থানায় মামলা করেছেন। ঘটনা সুত্রে জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি রাতে শহরের দত্তবাড়ি বেনীকুন্ড লেনের ভাড়া ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেফতার তিনজন হলেন- বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কমলপুর চরের ইউসুফ আলীর স্ত্রী ডিজে শিল্পী নিছা খাতুন নিহা (১৯), গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের নিশিন্দারা আকন্দপাড়ার আনিসার রহমানের ছেলে নয়ন মিয়া শাহ (৩০) ও গাইবান্ধা সদরের থানাপাড়ার মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাজু আহম্মেদ (২৭)। রাজু বগুড়া শহরের চেলোপাড়া ও নিহা শহরের দত্তবাড়ি বেনিকুন্ডু রোডে মিনকো প্যালেসের চতুর্থতলায় ভাড়া থাকেন। আসামি ও ভিকটিমরা ডিজে পার্টির শিল্পী।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে ও নাতনি আসামি নিছা খাতুন নিহার সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ডিজে পার্টির অনুষ্ঠান করে। সেই সুবাদে আসামি রাজু ও নয়ন অপর আসামি নিহার বাবার শহরের মালগ্রামের বাসায় গিয়ে নাচগান করে থাকে। সেখানে তার মেয়ে ও নাতনির সঙ্গে আসামিদের পরিচয় হয়। রাজু পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে গত ৭ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে দুই ভিকটিমকে নাচগানের কথা বলে আসামি নিহার শহরের দত্তবাড়ি বেনিকুন্ডু লেনে মিনকো প্যালেসের ভাড়া ফ্ল্যাটের চতুর্থতলায় নিয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে রাজু আহম্মেদ ফোনে আসামি নয়ন মিয়া শাহকে ডেকে আনে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজু তার (বাদী) মেয়েকে এক রুমে এবং নয়ন নাতনিকে অপর রুমে নিয়ে যায়। রাজু ভয় দেখিয়ে রাতভর একাধিকবার ধর্ষণ করে। এছাড়া নয়ন তার নাতনির শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ কাজে আসামি নিহা সহায়তা করে।
পরে ভিকটিমরা কৌশলে ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে বাড়ি এসে ঘটনা প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে শনিবার সকালে সদর থানায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই সোহেল রানা জানান, গ্রেফতার তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ভিকটিমদের ডাক্তারি পরীক্ষা ও তাদের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।
কেন ধর্ষণ থামছে নাঃ
* ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে 'spare the road and sopil the child' অর্থাৎ ‘শাস্তি না দিলে শাসন হয় না’। ধর্ষণ করে পার পেয়ে গেলে এ ধরনের অপরাধ আরো বাড়বে। তাই শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
* ধর্ষণ মামলায় পর্যাপ্ত স্বাক্ষীর অভাবেও আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, ধর্ষিতা ও স্বাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতার কথা চিন্তা করেও স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন না। এ কারণেও ধর্ষকরা প্রশ্রয় পাচ্ছে।
* আবার অনেকে ক্ষেত্রে তদন্তে ত্রুতি-বিচ্যুতির ফলেও প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। সুরতহাল ও ঘটনাস্থলের আলামত নষ্ট হলেও অপরাধীরা ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।
* ধর্ষণের পর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরিবার সামাজিকতা ও সম্ভ্রমহানির ভয়ে ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য হয়। এক্ষেত্রে অপরাধীরা পার পেয়ে যায় অনায়াসে।
* তবে বর্তমানে ধর্ষণের শিকার হয়ে অনেক নারীই সাহস করে মামলা করছেন। তবে আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের প্রচলিত ‘লিগ্যাল প্রসিকিউশন’ এখন পর্যন্ত নারীবান্ধব হয়নি।
মাদক ও পর্নোগ্রাফি ধর্ষণপ্রবণতা বাড়াচ্ছে
আশংকাজনক হারে শিশু, তরুণী এবং নারী ধর্ষণ বাড়ার নেপথ্যে অন্যতম কারণ হলো ব্যাপক সামাজিক অবক্ষয়, নীতি-নৈতিকতার মানদণ্ডগুলির সর্বব্যাপী বিলুপ্তি ও মূল্যবোধের অধঃপতন। কেউ কেউ এসব ঘটনার পেছনে ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফি সহজলভ্য হয়ে যাওয়া এবং মাদকাসক্তিকেও দায়ী করেছেন।
কম-বেশি সব এলাকাতেই হাত বাড়ালে ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদক পাওয়া যায়। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে সমাজ ও পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসছে, বেড়েছে খুন, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ। ধনী-দরিদ্র উভয় পরিবারের কিশোর-কিশোরী, বিশেষ করে তরুণসমাজ বিপথগামী হচ্ছে।
চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এমএন হুদা জানান, মাদক সেবন করলে শরীরে সাময়িক উত্তেজনা বাড়ায় এবং আচরণে পরিবর্তন ঘটায়। তখন মানুষ নরপশু হয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। এ সময় তারা কাকে কেন নির্যাতন করছেন, তা চিন্তাধারাতেই আসে না। বরং সাময়িক প্রশান্তিকেই সে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। অথচ মাদক সেবন করলে দীর্ঘস্থায়ীভাবে শারীরিক ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, ধর্ষণের ঘটনা বাড়ার আরেকটি কারণ হলো পর্ণোগ্রাফি। শিশুদের কাছে এখন অত্যাধুনিক মোবাইল ফোন। তারা সহজেই পর্ণোসাইটে যেতে পারছে। শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য পর্ণোসাইটগুলো বন্ধ করা উচিত। পথবাসী, শ্রমজীবী, দরিদ্র শিশুরা যেমন এর শিকার হয়, তেমনি মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সমাজেও এরকম ঘটনা কম ঘটে না।
পরিসংখ্যানে ধর্ষণ
বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কম-বেশি ধর্ষণ বা নারীদের লাঞ্ছিত করার মতো ঘটনা ঘটে। তবে তা এ উপমহাদেশের তুলনায় খুবই কম। পরিসংখ্যানেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে গত ৮ মাসে শুধু ধর্ষণই নথিভুক্ত হয়েছে ৮৯২টি।
আর প্রতিবেশী দেশ ভারতে গত বছর প্রতিদিন গড়ে ৮৭টি করে ধর্ষণের মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পুরো দেশে নারীর ওপর নথিভুক্ত অপরাধের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬১টি। আর নথিভুক্ত করা হয়নি, এ সংখ্যা নিশ্চয়ই নগণ্য নয়।
ধর্ষণ প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থা
যথাযথ আইনি ব্যবস্থা ও শাস্তি কার্যকরের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই ধর্ষণের মাত্রা শূণ্যে নেমে এসেছে কিংবা নেই বললেই চলে। এর মধ্যে মিশর, সৌদি আরব ছাড়াও আরো কিছু দেশে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান রয়েছে। এতে অন্যরা শিক্ষা নিয়ে এমন জঘণ্য অপরাধে জড়াতে সাহস পায় না।
এছাড়া চীনে ধর্ষণ প্রমাণ হলেই আর কোনো সাজা নয়, বিশেষ অঙ্গ কর্তন ও সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আফগানিস্তানে ধর্ষণের বিচার দ্রুত কার্যকর করা হয়। ধর্ষণ করে ধরা পড়ার চার দিনের মধ্যে ধর্ষকের মাথায় সোজা গুলি করে মারা হয়। উত্তর কোরিয়াও গুলি করে হত্যা করার বিধান রয়েছে। আর মঙ্গোলিয়ায় ধর্ষিতার পরিবারের হাত দিয়ে ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিধান রয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, এর ৯ ধারায় ধর্ষণ এবং ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু ঘটানো ইত্যাদির সাজা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অত্র ধারায় একজন অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডর বিধান রাখা হয়েছে।
ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয়-
* ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন ও দ্রুততম সময়ে বিচার কাজ পরিচালনা করে দ্রুত দণ্ড কার্যকর করা প্রয়োজন।
* বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে ধর্ষককে দৃষ্টান্তমূলক সাজার আওতায় আনতে হবে।
* মানবিক মূল্যবোধকে জাগাতে হবে।
* যৌন শিক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সেখানে নারী-পুরুষের শরীর, যৌনতা, পরিবার ও গর্ভধারণ বিষয়ক নানা তথ্য ছবিসহ দেয়ার পাশাপাশি পরষ্পরের মধ্যে সম্পর্ক, সম্মতি, আইনি অধিকারের বিষয়াদিও ভালোভাবে তুলে ধরা যেতে পারে।
* অবাধ পর্নোগ্রাফির বিস্তার ঠেকাতে হবে। এ লক্ষ্যে নজরদারি বাড়াতে হবে। আইটি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় এর নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে।
* সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্বল্প পরিচয়ের পর কারোর সঙ্গে বাছবিচার না করেই মেলামেশা শুরু করা যাবে না।
* ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেটে কোন সাইট দেখছে, তা অভিভাবকদের তদারকি করা প্রয়োজন। অপ্রয়োজনে বা অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে না দেয়া।
* পুরুষদের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তাদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুর রহমান জানান, প্রথমত. আইনের কঠোর প্রয়োগ ও এর বাস্তবায়নের মাধ্যমেই ধর্ষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত. সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করা, অবক্ষয় রোধ, সুশিক্ষা ও বিবেককে জাগ্রত করতে হবে। তৃতীয়ত. কোনো ধর্ষণের ঘটনা পুলিশ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টিগোচর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। চতুর্থত. ধর্ষণকারীর বিচার দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া ধর্ষণ প্রবণতা ও এর প্রতিকার সম্পর্কে এমএসএফ-হল্যান্ড এর চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী বর্তমানে নাইজেরিয়া মিশনে কর্মরত আকবর হোসেন বলেন, প্রথমেই যেটা বলবো সেটা হলো ধর্ষণ আচরণগত বা মানসিক রোগ নয় বরং এটা ফৌজদারি অপরাধ। তবে হ্যাঁ কিছু ধর্ষণকারীর মধ্যে মানসিক রোগ থাকতে পারে যেটার জন্য ক্রিটিকাল মুহূর্তে সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং তখন ধর্ষণের মত ঘৃণিত বা গর্হিত কাজ করে।
হঠাৎ ধর্ষণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পেছনে কারণগুলো সাধারণভাবে বলা না গেলেও এর পেছনে বর্তমান দীর্ঘমেয়াদি করোনা পরিস্থিতির একটা যোগসূত্র থাকতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ পরিস্থিতির কারণে মানুষের মধ্যে বিশেষ করে যুবক পুরুষদের মধ্যে এক ধরনের ব্যাপক হতাশা দেখা দিয়েছে। যেটার জন্য কিছু কিছু পুরুষদের মধ্যে সহমর্মিতা কমে যাওয়া, রাগের বহিঃপ্রকাশ, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা, নারীদের প্রতি আগ্রাসী মনোভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি ধর্ষণের বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা এবং বিচারহীনতা ধর্ষণ বৃদ্ধির প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে।
তার মতে, ধর্ষণ কমানোর জন্য তড়িৎ ব্যবস্থা হিসেবে দ্রুত বিচার করে উদাহরণ সৃষ্টি করা যেতে পারে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদিভাবে ধর্ষণ বন্ধ করার জন্য পারিবারিক শিক্ষা থেকে ধর্মীয় অনুশাসন, নৈতিকতার শিক্ষা খুবই জরুরি। পাশাপাশি সেক্স বা যৌনতাকে স্বাভাবিক একটা বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করাটা জরুরি।
ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুর রহমান জানান, প্রথমত. আইনের কঠোর প্রয়োগ ও এর বাস্তবায়নের মাধ্যমেই ধর্ষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত. সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করা, অবক্ষয় রোধ, সুশিক্ষা ও বিবেককে জাগ্রত করতে হবে। তৃতীয়ত. কোনো ধর্ষণের ঘটনা পুলিশ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টিগোচর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। চতুর্থত. ধর্ষণকারীর বিচার দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বিখ্যাত একজন সাইকোএনালিস্ট ফ্রয়েড বলেছেন, অবদমিত ইচ্ছেগুলো বড় হয়ে অসামাজিক বা অনৈতিক কাজের মধ্য দিয়ে নেতিবাচকভাবে প্রকাশিত হয়। আমাদের দেশে যৌনতাকে খুবই নেতিবাচক এবং খারাপ বিষয় হিসেবে শিশুদের কাছে উপস্থাপন করা হয়, যার জন্য এটা নিয়ে কেউ কথা বলে না, অবদমন করে রাখা হয়। যার জন্য নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি একটা অনৈতিক আকর্ষণ থেকে অনেক যুবক ধর্ষণের মতো ভয়াবহ কাজের মাধ্যমে যৌনতাকে অন্বেষণ করার চেষ্টায় থাকে।
দেশের আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকা সত্ত্বেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। কারণ মানুষের নৈতিক অবক্ষয়কে কেবল আইন দিয়ে সংশোধন করা যায় না। এজন্য নিজের ভেতরের বোধশক্তিটাও জাগ্রত করতে হয়। আর সরকারের একার পক্ষেও ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে সামাজিকভাবে এ অপরাধকে প্রতিরোধ করতে হবে। ধর্ষণকারীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর করলেও অনেকাংশে কমে যাবে ধর্ষণ। আর এতেই সব নারী পাবে নির্যাতনমুক্ত ও ধর্ষণমুক্ত নিরাপদ সুন্দর পরিচ্ছন্ন সোনার বাংলাদেশ।
নোটঃ সকল প্রকার অনিয়ম ও অপরাধের খবর জানাতে এবং জানতে ক্রাইম ডায়রির সাথেই থাকুন। ভিজিট করুন আমাদের সকল নিউজ সাইটে। পত্রিকার জন্য হকারকে বলুন।।
ক্রাইম ডায়রি//বিশ্লেষণ//সুত্রঃ জনস্বার্থে জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকা হতে কিঞ্চিৎ কপিকৃত//