হোমিওপ্যাথি ডাক্তারদের হয়রানি বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি
দেশে সরকারী হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। জেলা সদর জেনারেল হাসপাতালে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত ১৫০ জন হোমিও চিকিৎসক রয়েছে । অথচ তারা ডাক্তার লিখলেই বিপত্তি। হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে।
দুটি সরকারি ও ৬৬টি বেসরকারি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজে ক্লাস বর্জন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন জেলা সদর জেনারেল হাসপাতালে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত ১৫০ জন হোমিও চিকিৎসক রোগী সেবাদান থেকে বিরত থাকেন।
জাকির হোসেন রনিঃ
নামের আগে ‘ডাক্তার’ লেখার কারণে র্যাব-১-এর সদস্যরা তাকে আটক করে থানায় মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন। এই হয়রানি প্রতিবাদে আজকের কর্মসূচি।
উল্লেখ্য যে, গত ২৩ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় কর্মরত হোমিও চিকিৎসক আজিজুর রহমান সুজনকে শারীরিকভাবে লঞ্চিত করেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নামের আগে ‘ডাক্তার’ লেখার কারণে র্যাব-১-এর সদস্যরা তাকে আটক করে থানায় মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন। এই হয়রানি প্রতিবাদে আজকের কর্মসূচি।
জানা গেছে, হোমিও চিকিৎসা বিষয়ে এমবিবিএস এএম (অল্টারনেটিভ মেডিসিন) নামে ভারত থেকে সনদ নিয়ে আসা কতিপয় চিকিৎসক ২০১৯ সালে নিজেদের স্বীকৃতির জন্য হাইকোর্টে রীট মামলা করেন। কোর্ট বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন-২০১০ অনুযায়ী এমবিবিএস এবং বিডিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না মর্মে নির্দেশ দেয়। এটি চ্যালেঞ্জ করে হোমিও চিকিৎসকদের ডাক্তার পদবি লেখার বিষয় সুপ্রিমকোর্টে ৬টি আপিল মামলা চলমান রয়েছে।
তাছাড়া দেশে হোমিও চিকিৎসায় গ্রাজুয়েশন, পোস্ট গ্রাজুয়েশন ও ডিপ্লোমা পাশ চিকিৎসকরা ‘দি হোমিওপ্যাথিক প্র্যাক্টিশর্নাস অর্ডিন্যান্স-১৯৮৩ অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। সরকারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী তাদেরকে চিকিৎসক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
গত বছর মন্ত্রিপরিষদ সভায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২১ এর খসড়া আইন হয়েছে। যা এখনো পাশ হয়নি। অন্যদিকে ভেটেরিনারি আইন অনুযায়ী প্রাণী চিকিৎসকরা নামের আগে ডাক্তার লিখে থাকেন। কিন্তু ভুল বিশ্লেষণে আদালতের আদেশে হোমিও চিকিৎসকদের ডাক্তার পদবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। চিকিৎসক নির্যাতন ও এসব ঘটনার প্রতিবাদে এ কর্মসুচি দেওয়া হয়েছে।
সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অফিসার্স অ্যাসোশিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) ডা. শেখ আসহান হাবিব সাংবাদিকদের জানান, হোমিও ডাক্তাররা বিএমডিসি আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়না তাদের জন্য আলাদা আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে। ফলে বিএমডিসি আইন হোমিও ডাক্তারদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তিনি আরও বলেন, হোমিও ডাক্তারদের হয়রানী না করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও বিভিন্ন সময় হয়রানী করা হচ্ছে। এলক্ষ্যে সারাদেশে আমারা প্রাইভেট প্র্যাক্টিস থেকে বিরত রয়েছি।
২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক হোমিও ও দেশজ থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর অনুমতি সাপেক্ষে এই দপ্তর থেকে সনদধারী চিকিৎসকদের হয়রানী করতে নিষেধ করা হয়েছে।তবুও হয়রানি করা হচ্ছে। হোমিও ডাক্তাররা বলেন, আমাদেরকে হয়রানী বন্ধ না করা হলে প্রাচীন এই চিকিৎসা ব্যবস্থাটি ধ্বংসের মুখে পড়বে।হাজার হাজার রোগী হবে ক্ষতিগ্রস্থ।
ক্রাইম ডায়রি// স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা