পিকে হালদার সিন্ডিকেটঃ পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান গ্রেফতার, আটক আরও ২

PK Haldar Syndicate: People's Leasing Chairman arrested, 2 more arrested

পিকে হালদার সিন্ডিকেটঃ পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান  গ্রেফতার, আটক আরও ২

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে-পরে আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন

অনলাইন ডেস্কঃ

মনে আছে পিকে হালদারের আর্থিক কেলেংকারী। পিকে হালদার ঘটনায় একের পর এক বের হতে শুরু হয়েছে থলের বেড়াল। তাকে সহযোগিতার কারনে  পিপলস  লিজিংয়ের সাবেক (২০১৫-১৬) চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।   জানুয়ারী ২৪, ২০২১ইং রোববার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।  দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টচার্য্য সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। 

তিনি সাংবাদিকদের  জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (পিএলএফসিএল) চেয়াররম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক।

অভিযোগ অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের গ্রেপ্তার করেন। দুদক জানায়, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অনুসন্ধানে এই দুইজনের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের মামলায় পি কে হালদারের ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধাকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এরপর ওই দিনই তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে এই বাবা-মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক সহযোগী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় এর আগে গত ৪ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী শংখ ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে-পরে আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

কোম্পানিগুলো হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।

এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীরা নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, লিজিং কোম্পানির অর্থ লোপাটকারী প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) কানাডার টরেন্টোতে বিলাসী জীবনযাবন করছেন। সেখানে তিনি পাচার করা অর্থ দিয়ে বাড়ি, গাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। ওই দেশ থেকে তিনি মাঝেমধ্যে দুবাই ও ভারতে আসেন

ঘটনাসুত্রে ও মামলার রিপোর্টে দেখা যায়, সিন্ডিকেটের সহায়তায় কয়েকটি লিজিং কোম্পানি থেকে অন্তত ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা সরিয়ে পিকে হালদার দেশ ত্যাগ করেছেন। শুধু ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা সরানো হয়েছে।সব মিলিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে এফএএস ফাইন্যান্স থেকে প্রায় ২২০০ কোটি টাকা, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে ২৫০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং থেকে প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেখিয়ে আত্মসাৎ ও পাচার করা হয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতে মর্টগেজ নেই বললেই চলে। ফলে ঋণ পরিশোধ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আর এর প্রধান কারিগর পিকে হালদার। 

এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি খুলে দূর্নীতিবাজদের কালো টাকাও সাদা করার দায়িত্ব নেন তিনি। নামে বেনামে বিভিন্ন কোম্পানি খোলা রয়েছে তার নামে।

ক্রাইম ডায়রি /// ক্রাইম// সুত্রঃ অনলাইন মিডিয়া