ঠাকুরগাঁওয়ে রাসায়নিকের বিকল্প ভার্মি কম্পোস্ট সারঃ ফসল উৎপাদনে লাভবান হচ্ছে কৃষক

ঠাকুরগাঁও সদরের বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকার ১০-১৫ জন চাষি কেঁচো সংগ্রহ করে জৈব পদ্ধতিতে সার উৎপাদন শুরু করেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে রাসায়নিকের বিকল্প ভার্মি কম্পোস্ট সারঃ ফসল উৎপাদনে লাভবান হচ্ছে কৃষক
ছবি-অনলাইন হতে সংগৃহীত

ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারের ফলে ফলন বেড়েছে। তাছাড়া নিজেই উৎপাদন করে বলে খরচও কমে গেছে। উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতি কেজি কেঁচো ১০ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষকের বাড়তি আয় হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ

কম্পোষ্ট সার এর একসময় বেশ প্রচলন ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে মানুষ রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কিন্তু রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাব মানুষ এখন বুঝতে পারছে। তাই বুদ্ধিমান মানুষেরা আবার ফিরে যেতে চায় সেই কম্পোষ্টেই। এরই ধারাবাহিকতায়  ঠাকুরগাঁও জেলায় দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। এতে রাসায়নিক সারের ব্যবহারের প্রবণতা যেমন কমছে, তেমনি ফসল উৎপাদনের খরচও সাশ্রয় হচ্ছে। এছাড়া জৈব সারের ব্যবহার ও উৎপাদন ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ এই জেলার কৃষকদের উৎসাহিত করছে।

গণমাধ্যম ও স্থানীয় কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদরের বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকার ১০-১৫ জন চাষি কেঁচো সংগ্রহ করে জৈব পদ্ধতিতে সার উৎপাদন শুরু করেন। আর তাদের বিনা মূল্যে সার তৈরির উপকরণ দিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সহযোগিতা করে। কৃষকদের উৎপাদিত সেই সার জমিতে ব্যবহার করে আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

উপকারভোগী  কৃষকরা বলছেন, সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো কম্পোট সার প্রয়োগে খরচ হয় মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহারে সেই ফলন পেতে চাষিদের তিন থেকে চার গুন বেশি টাকা গুনতে হয়। তাছাড়া এ সার তৈরিতে তেমন খরচ না হওয়ায় আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। তারা জানান, ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারের ফলে ফলন বেড়েছে। তাছাড়া নিজেই উৎপাদন করেন বলে খরচও কমে গেছে। উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতি কেজি কেঁচো ১০ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষকের বাড়তি আয় হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থানীয় কৃষি অফিস কৃষকদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি প্রচারের ব্যবস্থা করতে পারলে কৃষকরা উৎপাদিত কেঁচো সার ব্যবহার করবে। ফলে নিজের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করে আয় করতে পারবে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে অনেক বেকার যুবকও কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে উপার্জনে নেমে পড়েছেন। এজন্য সহজ শর্তে ঋণ সহায়তার দাবি তাদের। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রাম এনএটিপি-২’র আওতায় কৃষি বিভাগ কেঁচো সার উৎপাদনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করছেন। পরিবেশবান্ধব এই সার মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে কৃষক কম খরচে সার পাচ্ছেন। ফলে ফসল উৎপাদনে ব্যয় কমায় কৃষক লাভবান হচ্ছেন এবং জনগন সারবিষ মুক্ত খাদ্য পাচ্ছেন।

ক্রাইম ডায়রি//কৃষি / অনলাইম মাধ্যম