তদন্তে উঠে এসেছে ভয়ংকর তথ্যঃ “ক্রাইম পেট্রোল” দেখে খুনের পদ্ধতি শিখে পরিবারের সবাইকে খুন

Horrible information has come up in the investigation: "Crime Patrol" kills the whole family by learning the method of murder.

তদন্তে উঠে এসেছে ভয়ংকর তথ্যঃ “ক্রাইম পেট্রোল” দেখে খুনের পদ্ধতি শিখে পরিবারের সবাইকে খুন

সাতক্ষীরা হতে বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ভারতীয় সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল। ছোট বড় কি বুড়ো সবাইকেই দেখা যায় সিরিয়ালে বুদ হয়ে থাকেন। কিন্তু সকলের উপর যে এসবের খারাপ প্রভাবও পড়তে পারে তা বুঝেও না বোঝার ভান করেন একশ্রেনীর অভিভাবক। সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর মার্ডার মামলায় সিআইডির তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। যা রীতিমত ভয়ংকর সংকেত পুরো জাতীর জন্য। সি আইডির তদন্ত প্রতিবেদন সুত্রে জানা গেছে,কোমল পানীয়’র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভাই-ভাবি ও ভাতিজা-ভাতিজিকে খাওয়ায় রাহানুর। 

সাতক্ষীরায় চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারের ঘটনায় চার্জশিট দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় চাপাতি দিয়ে গলা কেটে তাদের হত্যা করে। সে নিয়মিত ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’ দেখত। ক্রাইম পেট্রল দেখেই সে খুনের এ কৌশল শিখে ফেলে। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ওই হত্যাকাণ্ডের এক মাস পাঁচ দিন পর গত ২২ নভেম্বর চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়। 

গত ১৫ অক্টোবর ভোরে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামে একই পরিবারের চারজনকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। তারা হলেন- শাহিনুর রহমান, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী এবং মেয়ে তাসনিম সুলতানা। তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় তাদের চার মাস বয়সী শিশু কন্যা মারিয়া সুলতানা। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই শাহিনুরের শাশুড়ি ময়না খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে কলারোয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলামকে।

সাতক্ষীরায় চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারের ঘটনায় চার্জশিট দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় চাপাতি দিয়ে গলা কেটে তাদের হত্যা করে। সে নিয়মিত ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’ দেখত। ক্রাইম পেট্রল দেখেই সে খুনের এ কৌশল শিখে ফেলে। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ওই হত্যাকাণ্ডের এক মাস পাঁচ দিন পর গত ২২ নভেম্বর চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়। 

নভেম্বর ২৪,২০২০ইং মঙ্গলবার দুপুর বেলা সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিআইডি খুলনা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এবং সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, দুইটি মাদক মামলার আসামি রাহানুর। সে দীর্ঘদিন ফেনসিডিলের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সেবন করত। ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এবং জেলও খাটে। এরপর স্ত্রী ফাহিমার সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাহানুর বেকার অবস্থায় ভাই ও ভাবির সংসারে থাকতে শুরু করে। ভাবি সাবিনা খাতুন মাঝে মধ্যে টাকা প্রসঙ্গ তুলে তার সঙ্গে যে ব্যবহার করত- তা সে মেনে নিতে পারেনি। এক সময় ভাই-ভাবিসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে রাহানুর।

ওমর ফারুক বলেন, হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্থানীয় মো. আবু জাফরের দোকান থেকে দুটি স্পিড (কোমল পানীয়) কিনে রাহানুর তার মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ঘুমের ওষুধ মেশানো এ পানীয় সে তার ভাই-ভাবি, ভাতিজি ও ভাতিজাকে খেতে দেয়। তারা ঘুমিয়ে পড়লে গত ১৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৩ টার দিকে চাপাতি দিয়ে প্রথমে তার ভাই এবং পরে ভাবিসহ বাকিদের হত্যা করে।

সিআইডি জানায়, রাহানুর মূলত তার ভাই ও ভাবিকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু হত্যাকাণ্ড চালানোর সময় তার ভাতিজা ও ভাতিজি জেগে ওঠে। এ কারণে সে তাদেরও হত্যা করে। ঘটনার পর রাহানুল হত্যার আলামত মুছে ফেলার চেষ্টা করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিসহ রক্ত মাখা কাপড় উদ্ধার করা হয়।

ক্রাইম ডায়রি//অপরাধজগত