যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি,হুমকির মুখে পুরো দেশ

সাতকানিয়ায় একসপ্তাহে তিন মৃত্যু,মগবাজারে সিলিন্ডার বিস্ফোরন এগুলো অশনি সংকেত।দ্রুত এর লাগাম টেনে ধরে গ্যাস সিলিন্ডারের কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে।

যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি,হুমকির মুখে পুরো দেশ

এর কারন হিসেবে বিশেষজ্ঞরা যত্রতত্র প্রশিক্ষণ ছাড়া ব্যবসায়ীদের সিলিন্ডার বিক্রিকে দুষছেন। সারাদেশের আনাচে কানাচে এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও এমন দৃশ্য চোখে পড়ার মত। এগুলো জায়গায় যেমন ইচ্ছেমত দাম হাকানো হয় তেমনি সেফটি বলতে ফায়ার সার্ভিস হতে  এদের কোন অনুমোদন নেই, কোন প্রশিক্ষণও নেই। ফলে পুরাতন সিলিন্ডারের ভয়াবহতা সম্পর্কে এসব ব্যবসায়ীদের কোন জ্ঞানই নেই বলা যায়।

মোঃ হোসেন মিন্টু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসঃ

সিলিন্ডার বিস্ফোরন যেন তাজা বোমাকেও হার মানায়। এর ভয়াবহতা খুবই মারাত্বক। মুহুর্তেই তছনছ হয়ে যায় সবকিছু। কিছুদিন আগেই রাজধানীর মগবাজারে সিলিন্ডার বিস্ফোরন সেই কথাকেই মনে করিয়ে দেয়। শুধু মগবাজার ট্রাজেডি নয়  এমন  ঘটনা প্রায়শঃই শোনা যায় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। সম্প্রতি,
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে আগুন লেগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিনজন মারা গেছেন। এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন দু’জন।
সাতকানিয়ায়  একসপ্তাহে তিন মৃত্যু,মগবাজারে সিলিন্ডার বিস্ফোরন এগুলো অশনি সংকেত।দ্রুত এর লাগাম টেনে ধরে গ্যাস সিলিন্ডারের কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে।
এর কারন হিসেবে বিশেষজ্ঞরা যত্রতত্র প্রশিক্ষণ ছাড়া ব্যবসায়ীদের সিলিন্ডার বিক্রিকে দুষছেন। সারাদেশের আনাচে কানাচে এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও এমন দৃশ্য চোখে পড়ার মত। এগুলো জায়গায় যেমন ইচ্ছেমত দাম হাকানো হয় তেমনি সেফটি বলতে ফায়ার সার্ভিস হতে  এদের কোন অনুমোদন নেই, কোন প্রশিক্ষণও নেই। ফলে পুরাতন সিলিন্ডারের ভয়াবহতা সম্পর্কে এসব ব্যবসায়ীদের কোন জ্ঞানই নেই বলা যায়।
মাঝে মাঝে ঘটে যাওয়া এসব দুর্ঘটনার পরও বন্ধ হয়নি যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। কোন নিয়ন্ত্রণ নেই সিলিন্ডার বিক্রি কোম্পানী গুলোর উপর। ফলে তারা তাদের মার্কেটিং ও সেলসের স্বার্থে যাকে তাকে দিয়ে সিলিন্ডার বিক্রি করাতে পারলেই খুশি।
নিয়মনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও মজুত স্থানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও। এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, জ্বালানি অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার বিধানও রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ম মানা হচ্ছে না দেশের কোথায়ও।

ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় উপজেলার যত্রতত্র স্থানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাতকানিয়ার সিরিজ ঘটনায় দেখা যায়, উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন থেকে শুরু করে খোদ বিক্রি হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগা উপজেলা সদর ও পৌরসভা এলাকায়। মুদির দোকান, চালের দোকান, ক্রোকারিজের দোকান স্টেশনারির দোকান, কুলিং কর্নার থেকে শুরু করে সবখানে। অগ্নিনির্বাপক ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়াই চলছে এ ব্যবসা। এসব দোকানের কোথাও অগ্নিনির্বাপক তো দূরের কথা গ্যাস সিলিন্ডারগুলো পর্যন্ত রাখার জায়গা নেই।

এ দৃশ্য শুধু সাতকানিয়া নয় বগুড়ার শেরপুর থানা ও সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ এলাকা যেখানে ক্রাইম ডায়রির উত্তরাঞ্চলীয় অফিস সেই এলাকাতেও জড়িপ করে দেখা গেছে  একই অবস্থা।

দিনভর রাস্তার ওপর সারিবদ্ধভাবে রেখে রাত হলেই ঠাসাঠাসি করে দোকানে ঢুকিয়ে রাখা হয় এসব সিলিন্ডার। ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই জানেন না সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম ও সংরক্ষণের উপায়। স্থানীয়রা এসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে নিয়েই ব্যবহার শুরু করছেন গ্যাস সিলিন্ডার। কেউ কেউ কম দাম লুফে নিয়ে সংরক্ষণ করছেন একাধিক সিলিন্ডার। ব্যবহারকারীদের কেউ গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ কিংবা অবস্থা সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ছে।

বেশি লাভের জন্য তারা নামি-বেনামি কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এমতবস্থা চলতে থাকলে আরও দুর্ঘটনার জন্য প্রস্তত থাকতে হবে পুরো জাতিকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন গ্যাস সিলিন্ডার সহজলভ্য করার জন্য প্রতিটি ফায়ার সার্ভিস আওতাধীন এলাকায় ফায়ার ইন্সপেক্টর দ্বারা তদন্ত করে সকল ব্যবসায়ীদের বাধ্যতামূলক লাইসেন্স গ্রহণ ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তেমনি কোম্পানীগুলো ফ্রি প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করতে পারে এবং লাইসেন্স বিহীন ব্যবসা ডিলার দেয়া বন্ধ করতে পারে। তাহলে অতি দ্রুত সারাদেশে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রনে থাকবে। 

ক্রাইম ডায়রি//জাতীয়