একজন হাসান মাহমুদঃ একজন নিবেদিত প্রাণ রাজনীতিবিদের গল্পগাঁথা
A Hasan Mahmud: A story of a dedicated politician
রক্তে যার রাজনীতি বাসা বেঁধেছে তিনি কী আর রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে পারেন? নিজেই সংগঠিত করেন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগকে। নির্বাচিত হন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। তখনো পাদপ্রদীপের নিচে ড. হাছান মাহমুদ।ব্রিজে ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়া ভিত্তিক স্টুডেন্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে ড. হাছান মাহমুদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। যার হৃদয়ে দেশের প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসা তিনি তো আর বিদেশের মাটিতে আরাম আয়েশের জীবন কাটাতে পারেন না! আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে বিদেশে শিক্ষকতার চাকরি ফেলে দেশে ফিরে আসেন।
আতিকুল্লাহ আরেফিন রাসেলঃঃ
হাঁটি হাঁটি পা পা করে বেড়ে ওঠা ছোট্ট শিশুটি একদিন বিশ্বজয় করবে বাবা মায়ের এমন বিশ্বাস নিয়ে বেড়ে ওঠা সেই শিশু সত্যিই বিশ্বজয় করেছে।।হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে লক্ষকোটি বাঙ্গালির। জানেন সেই শিশুটি কে??? তিনি হলেন শতকোটি যুবকের হৃদয়ের স্পন্দন বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী ডক্টর. হাসান মাহমুদ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সুখবিলাস গ্রামে ১৯৬৩ সালের ৫ জুন ভোরবেলা বাবা মায়ের কোল আলোকিত করে খ্যাতিমান আইনজীবী প্রয়াত নুরুচ্ছফা তালুকদারের ঘরে জন্মগ্রহণ করা শিশুটিই আজকের হাসান মাহমুদ।। বাবা-মা নাম রাখেন হাছান মাহমুদ। সুখবিলাস গ্রামের সে হাছান মাহমুদ এখন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী।।।।
অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী স্কুল চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হন হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজে। তখন মহসীন কলেজর নাম ছিল ইন্টারমিডিয়েট কলেজ। ইন্টারমিডিয়েট কলেজ এবং ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ একীভূত হয়ে মহসীন কলেজ নামকরণ করা হয়। ছোট হাছান মাহমুদকে দায়িত্ব দেওয়া হয় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের। একই সময়ে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। দক্ষতার হাতে খড়ি হয়। কিন্তু আদতে দেখা দক্ষতা নিয়েই জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি।
কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাশ করে হাছান মাহমুদ ভর্তি হন বাংলাদেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে । মেধা আর বিচক্ষণতা দিয়ে একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতি চালিয়ে যান হাছান মাহমুদ। আওয়ামীলীগের তখন ক্রান্তিকাল। সময়টা ১৯৮০ সাল। ছাত্রলীগ করা তখন দুরুহ ব্যাপার। সেই সময় হতে ছাত্রলীগের হাল ধরে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। এ থেকে কেউ দূরে রাখতে পারেনি হাছান মাহমুদকে। নির্বাচিত হন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে। ১৯৯০ সালে চাকসু নির্বাচনের জন্য গঠিত সর্বদলীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহŸায়ক মনোনীত করা হয় হাছান মাহমুদকে।ছাত্ররাজনীতির পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য একসময় ইউরোপ চলে যান তিনি। ভর্তি হন বিশ্বের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ ব্রাসেলস এর ইউনিভার্সিটি অব ব্রীজ এ। পড়াশোনা শেষে বেলজিয়ামের লিমবার্গ ইউনিভার্সিটি সেন্টাম-এর শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ড. হাছান মাহমুদ। রক্তে যার রাজনীতি বাসা বেঁধেছে তিনি কী আর রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে পারেন? নিজেই সংগঠিত করেন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগকে। নির্বাচিত হন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। তখনো পাদপ্রদীপের নিচে ড. হাছান মাহমুদ।ব্রিজে ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়া ভিত্তিক স্টুডেন্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে ড. হাছান মাহমুদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। যার হৃদয়ে দেশের প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসা তিনি তো আর বিদেশের মাটিতে আরাম আয়েশের জীবন কাটাতে পারেন না! আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে বিদেশে শিক্ষকতার চাকরি ফেলে দেশে ফিরে আসেন। ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সাথে যুক্ত হন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি আস্থা রাখেন হাছান মাহমুদের উপর। করা হয় শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী। ২০০৮ সাল পর্যন্ত সে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিছুদিনের মাথায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ড. হাছান মাহমুদকে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। এরইমধ্যে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পরিমÐলে একজন খ্যাতিমান পরিবেশবিদ হিসেবে সুপরিচিত হয়ে উঠেন ড. হাছান মাহমুদ। আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন কপ-১৫ (মেক্সিকো), কপ-১৬ (ডেনমার্ক), কপ-১৭ (ডারবান), কপ-১৮ (দোহা), কপ-১৯ (পোল্যান্ড), কপ-২০ (লিমা), কপ-২১ (প্যারিস), কপ-২২ (মরক্কো) এ বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল প্রতিনিধিত্ব করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হন। পরিবেশে অনন্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক গ্রিন স্টার পদকেও ভূষিত হন এ আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিজ্ঞানী। ২০০৮ সালের ৯ম নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে হারিয়ে প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হন হাছান মাহমুদ। এরপর প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরে পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ড. হাছান মাহমুদ। পরবর্তীতে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় হাছান মাহমুদকে।
গত ৫ বছর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ড. হাছান মাহমুদ। এই সময়ে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ুজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় সফলতার সঙ্গে কাজ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হন তিনি। ড. হাছান মাহমুদ পরপর দুই কমিটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পান। বর্তমানে প্রচার সম্পাদকের পাশাপাশি দলের অন্যতম মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। রাজনীতির পাশাপাশি গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে খÐকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. হাছান মাহমুদ। এর আগে পরিবেশ বিজ্ঞান ও বাংলাদেশ স্টাডিস বিষয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটিতে খÐকালীন শিক্ষকতা করেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) সংসদীয় আসনে বিশাল ব্যবধানে বিজয় অর্জন করেন ড. হাছান মাহমুদ। তাঁর নিকট প্রার্থীকে ২ লাখ ১০ হাজার ৯৩৬ ভোটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সৎ, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির এ রাজনীতিবিদ। দলের জন্য বহু ত্যাগ করেছেন জীবনে। ইচ্ছে করলে আরাম আয়েশে জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু গনতন্ত্রের জন্য এবং আওয়ামীলীগের জন্য তার ত্যাগ ভুলবার নয়। তাইতো, আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের যখন মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি। হাছান মাহমুদ তখন পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তথ্য মন্ত্রী হিসেবে তার সফলতার গল্প আরও বিস্তর।।। আরেকদিন শোনাবো সেই গল্প। ড. হাছান মাহমুদের বাবা চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং দুই মেয়াদে চট্টগ্রাম আদালতের পিপি ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে ড. হাছান মাহমুদ দুই কন্যা, এক ছেলের জনক।
রাজনৈতিক জীবনে একজন সফল ব্যক্তিত্বের অধিকারী তিনি। আওয়ামিলীগ এর যে কয়জন ক্লিন ইমেজের নেতা আছেন তার মধ্যে ড.হাসান মাহমুদ অন্যতম। বরাবরই তিনি যুব সমাজের হৃদয়ের স্পন্দন। দলের সবচেয়ে ঠান্ডা মেজাজের ও সবচেয়ে বুদ্ধিমান বলে মনে করে দেশী বিদেশী রাজনীতিকরা। ব্যক্তিজীবনে দানবীর ও মহৎ হৃদয়ের অধিকারীী এই নেতার কাছে ভাল কোন বিষয়ে আবদার করে নিরাশ হয়েছে এমন রেকর্ড খুঁজে পাওয়া যায় না।।। তাই তো আওয়ামিলীগের ২১তম সম্মেলনে বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা তার উপর আস্থা রেখেছেন।।দায়িত্ব দিয়েছেন যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের।।।
লেখক
আতিকুল্লাহ আরেফিন রাসেল
সম্পাদক ও প্রকাশক
ক্রাইম ডায়রি ( সাপ্তাহিক, অনলাইন দৈনিক, অনলাইন টেলিভিশন) এবং
সভাপতি
জাতীয় সাংবাদিক পরিষদ।
+৮৮ ০১৯১৫ ৫০৬৩৩২