ঘুমন্ত কন্যাকে পুকুরে ফেলে হত্যাঃ আইয়্যামে জাহেলিয়াত কি ফিরে এলো?

‍মানুষ যেন দিনদিন বর্বর হয়ে যাচ্ছে। আদ সামুদ জাতির লোকদের মতো পুরুষে পুরুষে কিংবা নারীতে নারীতে সমকামিতা, শিশু বলাৎকার এবং প্রকাশ্য যৌণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজ বাবা- মাকে হত্যা, নিজ শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার মানসিকতা, ঘুমন্ত কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা এগুলো আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগে সংগঠিত হতো।ইদানিংকালে এসব অপরাধের প্রবণতা দেখে মনে হয় আবার যেন আমরা সেই যুগেই ফিরে যাচ্ছি।

ঘুমন্ত কন্যাকে পুকুরে ফেলে হত্যাঃ আইয়্যামে জাহেলিয়াত কি ফিরে এলো?
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

ঘুমন্ত শিশুটিকে পুকুরে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করায় ঘাতক বাবা জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জাকির হোসেন রণি, উত্তরাঞ্চলীয় অফিসঃ

আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগে সংগঠিত ঘটনাগুলো ইদানিংকালে হুবহু দেখা যাচ্ছে। এসব অপরাধের প্রবণতা দেখে মনে হয় আবার যেন আমরা সেই যুগেই ফিরে যাচ্ছি। শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার মানসিকতা, শিশু ধর্ষন,বলাৎকার, সমকামিতা, যৌণতা কিংবা অশ্লীলতা এগুলো আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগে নিয়মিত ঘটনা ছিল।

সম্প্রতি, বগুড়ার শেরপুরে ১৪ মাস বয়সী ঘুমন্ত কন্যাকে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে হত্যা করেছে পাষণ্ড বাবা। শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার শিশুটির নাম মোছা. হুমায়রা খাতুন।

জানা গেছে, সোমবার গভীর রাতে কোনো এক সময় ঘুমন্ত শিশুটিকে পুকুরের পানিতে ছুঁড়ে ফেলেন বাবা জাকির হোসেন (৪৫)। মঙ্গলবার ভোররাতে তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ওই পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করেন এলাকাবাসী। পরে জাকির হোসেনকে আটক করা হয়। তিনি উঁচুলবাড়িয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে তাকে গ্রেফতার করে থানা হেফাজতে নেয়।

এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানা গেছে, বিগত সাত বছর আগে জাকির পাশ্ববর্তী নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের নামা সিংড়াপাড়া গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে রাবেয়া খাতুনকে বিয়ে করে। বিয়ের এক বছরের মাথায় প্রথম মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম রাখা হয় মোছা. জান্নাতি খাতুন। বর্তমানে বয়স ছয় বছর। এরপর বাবা জাকিরের প্রত্যাশা ছিল ছেলে সন্তানের। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে হয়। এতে ক্ষুব্ধ হন তিনি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এরই জের ধরে সোমবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে কোনো এক সময় ঘুমন্ত শিশুটিকে পুকুরে ফেলে দেন পাষণ্ড বাবা।

শিশুটির মা রাবেয়া খাতুন বলেন, মধ্যরাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার মেয়ে হুমায়রা খাটের ওপর নেই। পরে পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই। সেই সাথে আমার বোন ও তার স্বামীকে খবর দেই। এরপর সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সন্তানকে না পেয়ে একাধিকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে চাপ দেয় সবাই। পরে শিশুকন্যাকে পুকুরে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেন স্বামী। এরপর তাকে আটক করে থানায় খবর দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে শেরপুর থানার ওসি আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘুমন্ত শিশুটিকে পুকুরে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করায় ঘাতক বাবা জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এধরনের ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসীসহ দেশের সুশিল সমাজ। ঘৃণ্যে এ অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা দ্রুত কার্যকরের দাবী সমগ্র দেশবাসীর।

ক্রাইম ডায়রি// ক্রাইম