শিশু অপহরন করে বিকলাঙ্গ বানিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে ব্যবহারঃ নারী চক্রকে আটক করেছে বংশাল পুলিশ

Bangshal police arrest women for abducting children and using them for begging

শিশু অপহরন করে বিকলাঙ্গ বানিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে ব্যবহারঃ নারী চক্রকে আটক করেছে বংশাল পুলিশ

শিশু অপহরন করে সেই শিশুকে বিকালঙ্গ বানিয়ে ভিক্ষার জন্য ব্যবহার রাজধানীতে নতুন কিছু নয়। অসংখ্য সিনেমা নাটকে সেই বাস্তবতাও তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু থামেনি সেই চক্র। মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে আসেনি কোন মহল। অথচ বছরের পর বছর চোখের সামনে শিশু বাচ্চা কোলে নিয়ে ভিক্ষা করে একটি চক্র। সকাল হতে সন্ধ্যা এসব বাচ্চার ঘুমিয়ে থাকে এদের ঘুম কখনও ভাঙ্গেনা।

কালিমুল্লাহ দেওয়ান রাজাঃ

শিশু অপহরন করে সেই শিশুকে বিকালঙ্গ বানিয়ে ভিক্ষার জন্য ব্যবহার রাজধানীতে নতুন কিছু নয়। অসংখ্য সিনেমা নাটকে সেই বাস্তবতাও তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু থামেনি সেই চক্র। মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে আসেনি কোন মহল। অথচ বছরের পর বছর চোখের সামনে শিশু বাচ্চা কোলে নিয়ে ভিক্ষা করে একটি চক্র। সকাল হতে সন্ধ্যা এসব বাচ্চার ঘুমিয়ে থাকে এদের ঘুম কখনও ভাঙ্গেনা।

কেন ঘুম ভাঙ্গেনা এসব বাচ্চার সেসব প্রশ্ন করেনা কোন মানবাধিকার কর্মী।।  বিকলাঙ্গ লোককে রাস্তায় বসিয়ে দেয়া কারা আবার নেয় কখন কেউ জানতেও চায়না।।  এর আগে কামরাঙ্গীর চরে এক অদ্ভুত ঘটনা দৃশ্যপটে এসেছিল। অপহৃত শিশুদের এখানে পাতিলের মধ্যে না খাইয়ে রাখা হয় দিনের পর দিন। শুধু মাত্র মৃত্যুর হাত হতে বাঁচতে যতটুকু খাওয়া। ঘুমের ঘোরে ওরা বিকলাঙ্গ হয়।চরম নির্যাতন ওদের সঙ্গী।

এরপর ভিক্ষার জন্য বসিয়ে দেয়া হয় রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে। কয়েকদিন আগেতো এমন ঘটনা শোনা গিয়েছিল।  একজন কর্মজীবি মহিলার সন্তানপর  দেখা মিলেছিল মিরপুর দশ গোলচত্তরে।  তত্তাবধায়ক কাজের মেয়ে ভাড়া দিয়েছিল তার সন্তানকে একজন ভিক্ষা চক্রের সদস্যার কাছে। সে বাচ্চাও ঘুমিয়ে ছিল।।। এমন অসংখ্য  ঘটনা।। 

লিখতে গেলে উপন্যাস হয়ে যাবে। সম্প্রতি, পুরান ঢাকার বংশাল থেকে অপহরণের এক সপ্তাহের মাথায় গত শনিবার দুই বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় অপহরণকারী এক নারীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বংশাল থানা পুলিশ টিম ক্রাইম ডায়রিকে জানায়, মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা সুমা (২৫) রাস্তা থেকে ভাঙারি ও কাগজ সংগ্রহ করে তা বিক্রির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ২৫ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে কাগজ ও ভাঙারি খোঁজার জন্য বংশালে যান।

বিকাল সাড়ে চারটার দিকে পুরাতন বংশাল রোডের মাথায় মেয়ে রাশিদা আক্তারকে (২) বসিয়ে রেখে কাগজ সংগ্রহ করছিলেন সুমা। কিছুক্ষণ পরে দেখতে পান তার মেয়ে আর সেখানে নেই। আশেপাশে খুঁজে তাকে না পেয়ে বংশাল থানায় একটি জিডি (নম্বর-১১৬১) করেন সুমা। ওই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে শিশু রাশিদাকে খুঁজে পেতে চার সদস্যের টিম গঠন করে পুলিশ। তদন্তে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুইজনকে শনাক্ত করা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কদমতলীর শহিদনগর এলাকা থেকে শিশু রাশিদাকে উদ্ধারসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। 

বংশাল থানার ওসি মো. শাহীন ফকির জানান, আসামি নীলা বেগম ও আরেকজন(অপ্রাপ্ত বয়স্ক) পরস্পরের যোগসাজশে শিশু রাশিদা আক্তারকে চকলেট খাইয়ে কথাবার্তার মাধ্যমে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শিশু রাশিদাকে ভিক্ষাবৃত্তিতে ব্যবহার করা। আর সেজন্য মারধর করে শিশুটির চেহারা বিকৃত করে দেওয়া হচ্ছিল। 

ওসি বলেন, উদ্ধার শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পুলিশের তৎপরতায় শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তার মায়ের কোলে।

এ ঘটনায় জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান ওসি শাহীন ফকির। এমন ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা জানা নেই। ভিক্ষা বন্ধ করা গেলে হয়তো এ চক্রের হাত হতে রক্ষা পেত অসংখ্য মানব সন্তান। আর মানবাধিকার কর্মীরা কোথায়??  তাদেরকেও সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে শিশু অপহরন ও বিকলাঙ্গ বানানোর বিরুদ্ধে চরম আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম